বরিশালের উজিরপুরে আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে জোর পূর্বক ভবন নির্মাণ করছে প্রভাবশালী ভ‚মিদস্যুরা বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভ‚ক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, উপজেলার শোলক ইউনিয়নের ধামুরা গ্রামের মোসাঃ শিউলি বেগম গংদের সাথে জমিজমা নিয়ে কাংশী গ্রামের মনির সরদার গংদের দীর্ঘদিন যাবৎ বিরোধ চলে আসছিল। জানা যায়, ১৫ নং ধামরা মৌজায় এস,এ খতিয়ান নং-২১৬, এস,এ দাগ নং-১১২৭,১১৭০,১১৪৬, মোট জমি ২৫ শতাংশ যার ডিপি খতিয়ান নং-১১৭৭, বি,এস দাগ নং-১৯৬৯। উক্ত জমি নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে একাধিক মামলা চলমান রয়েছে।
বিরোধীয় জমিতে প্রতিপক্ষ মনির সরদার গংরা ক্ষমতার দাপটে জোর পূর্বক ভবন নির্মাণ করে দখলের পায়তারা চালিয়ে আসছে। সে ঘটনায় শিউলি বেগম গংদের পক্ষে ফরিদ হাওলাদার বাদী হয়ে বরিশাল অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ১৪৪/১৪৫ ধারামতে ওই জমিতে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে একটি মামলা দায়ের করেন যার মামলা নং ২৮/২০২১। ওই মামলায় উজিরপুর মডেল থানায় এ.এস.আই আহছাব উদ্দিন শান্তি শৃঙ্খলা ভঙ্গ না হয় সে মর্মে উভয় পক্ষের মধ্যে আদালতের জারিকৃত অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার নোটিশ প্রদান করেন। এ ছাড়াও শিউলি বেগমের পক্ষে ওয়ারিশ হিসেবে কালাম মল্লিক আদালতে ১৪৪/১৪৫ ধারায় মামলা দায়ের করেছিলেন।
সে মামলায় এ,এস,আই শাহে আলম উভয় পক্ষের মধ্যে নোটিশ প্রদান করেন। আদালতের ২টি নিষেধাজ্ঞা মামলা থাকা সত্তে¡ও তা উপেক্ষা করে প্রভাবশালী মনির সরদার, মোসাঃ রজিনা আক্তার, হাবিবুর রহমান সরদার, জান্নাত বেগম, মোসাঃ মমতাজ বেগম, মালেক আকনসহ একদল ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী মিলে দেশীয় ধারালো অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ৩ ফেব্রæয়ারী সকাল ৮টায় বিরোধীয় জমিতে ভবন নির্মাণের কার্যক্রম শুরু করে। এর প্রতিবাদ করতে গেলে ওই প্রভাবশালীরা শিউলি বেগম গংদের নারী ও পুরুষসহ ৪ জনকে পিটিয়ে আহত করে। এমনকি আঘাত করতে গিয়ে রোজিনা আক্তার পা পিছলে পড়ে গিয়ে সামান্য আঘাতপ্রাপ্ত হয়। সে ঘটনাকে পুঁজি করে মিথ্যা নাটক সাজিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে মামলা দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করায় ৪ ফেব্রæয়ারী ফরিদ হোসেন হাওলাদার বাদী হয়ে মনির হোসেন সরদার গংদের বিরুদ্ধে ১৮৮ ধারায় আদেশনামা চেয়ে আদালতে আবেদন করেন। শিউলি বেগম জানান, আমরা উভয় পক্ষ নিকটতম আত্মীয় হওয়ায় বিরোধীয় জমি নিয়ে স্থানীয়দের সহায়তায় ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ডাঃ আঃ হালিম সরদার, সাধারণ সম্পাদক কুদ্দুস ফকির, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিক বালী, ইউপি সদস্য সিরাজ সরদারকে মানিত শালীস করে গত ২ ফেব্রæয়ারী শালিস বৈঠকের দিন ধার্য করা হয়েছিল।
কিন্তু ওই প্রভাবশালী ভ‚মিদস্যুরা তাও অমান্য করে আমাদের জমিতে জোর পূর্বক ভবন নির্মাণের পায়তারা চালায় এবং একটি প্রভাবশালীর ছত্রছায়ায় তারা আমাদের উপর হামলা চালিয়ে মোবাইল সেটসহ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেয়। তিনি আরো বলেন, উগ্র মেজাজী রোজিনা আক্তার, জান্নাত ্েবগম, মমতাজ বেগম একের পর এক তান্ডব চালিয়ে আসছে। তাদের আতঙ্কে আমরা মানবেতর জীবন যাপন করছি। অন্যের জমি দখল করা তাদের নেশা ও পেশা। ওই মামলাবাজদের ভয়ে এলাকার কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছে না। তারা যেন এলাকায় এক মূর্তিমান আতঙ্ক। এমনকি আমাদের পরিবারের লোকজনের উপর হামলা চালানোর সময় স্থানীয়রা প্রতিবাদ করতে আসলে তাদেরকেও নারী নির্যাতনসহ বিভিন্ন মামলায় জড়ানোর হুমকি দেয়। ওই নারীদের উৎপাতে অতিষ্ট হয়ে আমাদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছি। হামলার ঘটনায় ওইদিন থানায় অভিযোগ দিয়েও কোন সুরাহা পাইনি। উল্টো তারা নাটক সাজিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে আমাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। আমরা অসহায় হওয়ায় আমাদের শেষ সম্বল ভিটেমাটি দখলের পায়তারা চালাচ্ছে ওই প্রভাবশালীরা। ওই ভ‚মিদস্যু মামলাবাজ প্রভাবশালীদের কবল থেকে রক্ষা পেতে প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছে অসহায় পরিবার।