সর্বশেষ খবর
বাংলাদেশ, বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩

উত্তপ্ত রাজনীতির মাঠ

ডেস্ক রিপোর্ট
দক্ষিণ বাংলা শনিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
উত্তপ্ত রাজনীতির মাঠ

করোনা মহামারি যখন ধীরে ধীরে বিদায় নিচ্ছে তখন হুট করেই সক্রিয় হয়েছে দেশের রাজনৈতিক দলগুলো। প্রকৃতিতে তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে যেন পাল্লা দিয়ে রাজনীতিতে উত্তাপ ছড়াচ্ছেন তারা। দেশীয় ও বিদেশি উস্কানি, প্রতিবেশী দেশে অস্থিরতা, বিএনপির নয়া কর্মসূচি ও ভেতরে ভেতরে রাজনৈতিক ঐক্য গড়ার প্রস্তুতি এবং সরকারি দলের মাঠ দখলে রাখার তৎপরতা এই উত্তাপের উপকরণ। এতে বাড়তি জ্বালানি জুগিয়েছে সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের খেতাব বাতিলের প্রস্তাবকে কেন্দ্র করে বিএনপির প্রতিবাদ সমাবেশ এবং তাতে পুলিশের লাঠিচার্জ।

গেল ১২ মাস করোনা মহামারিতে স্থবির ছিল জনজীবন। রাজনীতি, অর্থনীতিসহ সবখানে এর প্রভাব ছিল লক্ষণীয়। তখন সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানোই ছিল বড় কর্মসূচি। বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বের রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন সেসময় মানবিকতার নজির স্থাপন করেছে। এর মধ্যে চাপা পড়ে যায় সরকারের মুজিবর্ষের নানান কর্মসূচি ও বিএনপির চলমান আন্দোলন। জীবন বাঁচানোই মুখ্য হয়ে ওঠে সেসময়।

আওয়ামী লীগ গণমানুষের সংগঠন। আমরা দুর্বার গতি নিয়েই মাঠে ছিলাম, আছি এবং থাকবো। এই করোনায় আমরা নেত্রীর নির্দেশে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি। এখন আমরা স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলো করছি। এছাড়াও দলীয়ভাবে কর্মসূচি আছে, আগের মতোই মাঠে থাকবো। কোনো অপশক্তিকে শান্ত পরিবেশ অশান্ত করার সুযোগ দেয়া হবে না

তবে এর মাঝে হঠাৎ করেই মাঠে নেমেছে বিএনপি। বেগম খালেদা জিয়ার কারাবন্দির তৃতীয় বার্ষিকী উপলক্ষে ৮ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে বিক্ষোভ সমাবেশ করে দলটি। এছাড়া ৬ সিটি করপোরেশনে পরাজিত মেয়রপ্রার্থীদের নেতৃত্বে ৬ মহানগরে নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে সমাবেশের ডাক দিয়েছে তারা। চট্টগ্রামে ১৩ ফেব্রুয়ারি, বরিশালে ১৮ ফেব্রুয়ারি, খুলনায় ২৭ ফেব্রুয়ারি, রাজশাহীতে ১ মার্চ, ঢাকা মহানগর উত্তরে ৩ মার্চ ও দক্ষিণে ৪ মার্চ সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে দলটি।

বিএনপির এ কর্মসূচিকে ‘দেশের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিনষ্টের ষড়যন্ত্র’ আখ্যা দিয়ে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করার ঘোষণা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিকে আওয়ামী লীগ স্বাগত জানাবে। তবে বিএনপিকে বিনা চ্যালেঞ্জে ছেড়ে দেয়া হবে না। জনমানুষের সমর্থন আদায়ে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি এখন আবার সহিংস হয়ে ওঠার অপচেষ্টা করছে, কিন্তু জনগণ সচেতন রয়েছে। কর্মসূচিতে সহিংসতার উপাদান যুক্ত হলে তা কঠোর হাতে দমন করা হবে।’

বিএনপি-বিরোধীদল মাঠে সক্রিয় থাকুক। বিএনপি নিষ্ক্রিয় হয়ে গেছে। গ্রামে-গঞ্জে, জেলা-উপজেলায় তাদের অস্তিত্ব নেই। তাদের কোনো জনসমর্থন নেই। তারা কর্মীবিহীন বিবৃতিনির্ভর দল হয়ে গেছে

নেতাকর্মীদের মাঠে থাকার আহ্বান জানিয়ে কাদের বলেন, ‘১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে সারাদেশে আওয়ামী লীগের উদ্যোগে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ও মুজিববর্ষ উপলক্ষে সভা-সমাবেশ, প্রতিনিধি সভা ও গণসংযোগ কর্মসূচি পালনে মাঠে থাকতে হবে।’

এছাড়াও বিএনপি ও তার শরিকদের ভেতরে ভেতরে রাজনৈতিক ঐক্য গড়ার তৎপরতা লক্ষ্যণীয়। বিএনপি জোটের শরীক কল্যাণ পার্টি ১৬ জানুয়ারি ধানমন্ডির একটি রেষ্টুরেন্টে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে। যেখানে বিএনপিসহ ১৮ দলের শরীক নেতাদের পাশাপাশি বিএনপি ঘরানার বুদ্ধিজীবী ও সমমনা রাজনৈতিক নেতারা অংশ নেন। একে ঘিরে রাজনীতির মাঠে নানান আলোচনা শোনা যায়। এছাড়া মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থান এবং আল জাজিরায় প্রকাশিত সংবাদে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের গন্ধ রাজনীতির অঙ্গণে ফের জোরেসোরে আলোচিত হচ্ছে। এসব নিয়ে বক্তৃতা, বিবৃতি ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানাভাবে উস্কানি দেয়ার অভিযোগ করছেন অনেকে।

অবশ্য এসব উস্কানি বা উত্তপ্ত পরিবেশ ‘থোড়াই কেয়ার’ করছে আওয়ামী লীগ। দলটির নেতারা বলছেন, গণমানুষের দল আওয়ামী লীগ ও তার সরকারের যে দুর্বার গতি, তা কেউ রুখতে পারবে না। করোনা মহামারিতেও মানুষের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা, খাদ্য সহায়তা প্রদান, জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৫.৪২ ভাগ ধরে রাখা, ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল ভোগ ও মেগা প্রজেক্ট বাস্তবায়নের গতি ধরে রেখে নিজেদের সক্ষমতার প্রমাণ দিয়েছে। গণসম্পৃক্ততা ও গ্রহণযোগ্যতা বাড়িয়েছে।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুল মতিন খসরু বলেন, ‘আমরা চাই বিএনপি-বিরোধীদল মাঠে সক্রিয় থাকুক। বিএনপি নিষ্ক্রিয় হয়ে গেছে। গ্রামে-গঞ্জে, জেলা-উপজেলায় তাদের অস্তিত্ব নেই। তাদের কোনো জনসমর্থন নেই। তারা কর্মীবিহীন বিবৃতি নির্ভর দল হয়ে গেছে। যার কারণে তাদের ঘোষিত কর্মসূচি মাঠে মারা যাবে বলে আমার মনে হয়। ’


আরো নিউজ