নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল:: বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মহিউদ্দিন মাহির বিরুদ্ধে শিক্ষনবিশ আইনজীবী রেজাউলের বাবার করা একটি মামলা মিথ্যে প্রমাণিত হয়েছে। বরিশাল জেলা নির্বাহী আদালতে করা ১০৭ ও ১১৭ ধারার মামলাটি বাদী-বিবাদীর উপস্থিতিতে রোববার শুনানী করেন বিচারক রুমানা ফারহানা। দীর্ঘ এক ঘণ্টার শুনানীতে বাদীর আইনজীবী এসআই মহিউদ্দিনের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের প্রমাণ করতে না পারায় সর্বশেষ বিচারক মামলাটি খারিজ করে দিয়েছেন। এসআই মহিউদ্দিনের আইনজীবী কাজী মনিরুল ইসলাম রোববার বিকেলে মুঠোফোনে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এর আগে মারধরসহ প্রাণনাশের হুমকি অভিযোগ এনে মৃত আইনজীবী রেজাউলের বাবা ইউনুস মুন্সি বাদী হয়ে গত ১৭ জানুয়ারি নির্বাহী আদালতে মামলাটি করেছিলেন। অবশ্য এর পুর্বে পুলিশ কর্মকর্তার নির্যাতনে তার ছেলের মৃত্যুর অভিযোগ এনে প্রথমে আরও একটি মামলা করেছিলেন।
সেই মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) তদন্তধীন থাকা অবস্থায় গত ১৫ জানুয়ারি তাকে এসআই মহিউদ্দিন সাগরদী এলাকায় মারধর করাসহ প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন, এমন একটি নতুন অভিযোগ আনেন। এবং দুদিন বাদে ১৭ জানুয়ারি নির্বাহী আদালতে মামলা করেন (মামলা নম্বর ১০/২১)
অবশ্য এরই মধ্যে প্রকাশ পেয়েছে, পুলিশের নির্যাতনে নয়, শিক্ষানবিশ আইনজীবীর মৃত্যু হয়েছে নেশার কারণে। শেবাচিম হাসপাতালের চিকিৎসকেরা মৃত্যু কারণ খুঁজতে গিয়ে এমন তথ্য-উপাত্ত্ব জানতে পেরেছেন, যা নিয়ে ইতিপূর্বে একটি সংবাদ প্রকাশ করে বরিশালটাইমস।
এরই মাঝে গত ১৭ জানুয়ারির মামলাটি যে একটি নাটকীয় ঘটনা এবং এসআই মহিউদ্দিনকে বেকায়দায় ফেলতে করা হয়েছে তা কারওই বোঝার অপেক্ষা ছিল না। যে বিষয়টি আদালতে রোববার উভয়পক্ষের নাতিদীর্ঘ শুনানীতে উঠে এসেছে।
আদালত সূত্রে জানা যায়- শিক্ষানবিশ আইনজীবীর বাবা ও বাদী ইউনুস মুন্সি তাকে মারধর করাসহ মামলা তুলে নেওয়ার অভিযোগ এনে এসআই মহিউদ্দিনের বিরুদ্ধে ১৭ জানুয়ারি আদালতে মামলা করেন। আদালতের নির্ধারিত তারিখে রোববার (০৭ ফেব্রুয়ারি) বাদী-বিবাদীর উপস্থিতিতে শুনানী করেন বিচারক রুমানা ফারহানা।
অপর একটি সূত্র জানায়, এক ঘণ্টার অধিককালের শুনানীতে বাদীর আইনজীবী পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে ব্যর্থ হন। ফলে অভিযোগ বা মামলাটি যে পুলিশ কর্মকর্তাকে হয়রানি করতে করা হয়েছে তা স্পষ্ট হয়ে ওঠে এবং বিচারক মামলাটি খারিজ করে দেন।
এসআই মহিউদ্দিনের আইনজীবী কাজী মনিরুল ইসলাম বলেন, মামলাটি যে পুলিশ কর্মকর্তাকে হয়রানির উদ্দেশে করা হয়েছে, তা যুক্তি-প্রমাণ দিয়ে আদালতকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছেন। সঙ্গত কারণে বিচারক মামলাটি খারিজ করে দিয়েছেন।
এদিকে এই বিষয়ে জানতে বরিশালটাইমসের পক্ষ থেকে এসআই মহিউদ্দিনকে একাধিক কল দেওয়া হলে তিনি রিসিভ করেননি। তবে একটি মাধ্যম নিশ্চিত করে, শিক্ষানবিশ আইনজীবীর মৃত্যু পর তাকে ক্লোজড করে পুলিশ লাইনসে রাখা হয়েছে এবং এর পর থেকে তিনি সেখানেই অন্তরীণ হয়ে আছেন।’