গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ১৭ নং কাঠি ইউনিয়নের কে, কে, টি হাজী, এন, সি ইনস্টিটিউশন (কাঠি হাইস্কুল) এর দপ্তরির জুয়েল মোল্লার সাথে ওই স্কুলের ৭ম শ্রেণীর ছাত্রী ফারহানা খানমের অনৈতিক সম্পর্ক ফাঁস হয়েছে।
এঘটনায় স্কুলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে লজ্জা ও আতঙ্কসহ ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ইতিমধ্যে শিক্ষার্থীরা দপ্তরি জুয়েল মোল্লার চাকুরিচ্যুত ও ছাত্রী ফারহানা কে স্কুল থেকে বহিষ্কারের দাবিতে মিছিল করেছে। একপর্যায়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়ে দপ্তরি জুয়েল মোল্লাকে সাময়িক বরখাস্ত করে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে। পাশাপাশি ছাত্রী ফারহানাকে আপাতত স্কুলে আসতে নিষেধ করেছে প্রধান শিক্ষক। অনৈতিক সম্পর্ক ফাঁস হওয়া ওই দপ্তরি জুয়েল মোল্লা কাঠি গ্রামের মৃত আকরাম মোল্লার ছেলে ও ছাত্রী ফারহানা খানম পার্শ্ববর্তী কাজুলিয়া ইউনিয়নের ভোজরগাতী মধ্যপাড়া গ্রামের গোলাম শেখের নাতনি।
জানাযায় দপ্তরি জুয়েল মোল্লা ও ৭ম শ্রেণীর ছাত্রী ফারহানা খানম দির্ঘদিন ধরে স্কুল চলাকালীন সময়ে বিভিন্ন কক্ষে অবস্থান করে কথাবার্তা ও অনৈতিক মেলামেশা করে আসছিল। একপর্যায়ে তাদের অনৈতিক সম্পর্ক স্কুলের অন্যান্য শিক্ষার্থীদের নজরে আসে। পরে শিক্ষার্থীদের কয়েকজন প্রধান শিক্ষকসহ অন্যান্য শিক্ষকদের জানায়। এরপর ঘটনাটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা শুরু হয়। তবে স্কুল কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের শিক্ষা দপ্তরের কর্মকর্তা, উপজেলা প্রশাসন বা জেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কাউকে অবহিত করেনি। একাধিক এলাকাবাসী ও স্কুল সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে প্রধান শিক্ষক দিলীপ কুমার পাল ও স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মোঃ নাজমুল হক ঘটনাটিকে ধামাচাপা দিয়ে নিজেদের দায় এড়াতে ও দপ্তরি জুয়েল মোল্লাকে রক্ষা করার জন্য শিক্ষা দপ্তরের কর্মকর্তা ও প্রশাসনের কাউকে জানায়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী সাংবাদিকদের বলেন, আমরা দপ্তরি জুয়েল মোল্লা ও ফারহানাকে একাধিকবার বিভিন্ন রুমের মধ্যে আপত্তিকর অবস্থায় দেখেছি। বিষয়টি প্রধান শিক্ষকে জানালেও তিনি কখনোই গুরুত্ব দেয়নি। পরবর্তিতে আমরা আন্দোলন করতে বাধ্য হয়েছি। শিক্ষার্থীদের কয়েকজন অভিভাবক জানান, স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটি ও প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বহীনতার কারণেই এমন ঘটনা ঘটেছে। এ স্কুলে কোন মেয়ে শিক্ষার্থীই নিরাপদ নয়। দপ্তরি জুয়েল মোল্লা সাংবাদিকদের বলেন, আমি ওই ছাত্রীকে আগে থেকে বিরক্ত করিনি, সে আমাকে মোবাইলে মেসেজ ও ফোন করতো, আমার কাউন্টারে আসতো। অপর দিকে ছাত্রী ফারহানা খানমের নানা গোলাম শেখ বলেন, আমার নাতি ছোট মানুষ মাত্র ১৩ বছর বয়স, দপ্তরি জুয়েল তাকে লোভ দেখিয়ে ফুঁসলিয়ে সর্বনাশ করেছে, আমি এর বিচার চাই।
এবিষয়ে প্রধান শিক্ষক দিলীপ কুমার পাল ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে দপ্তরিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ ও ছাত্রীকে স্কুলে আসতে নিষেধ করার কথা জানালেও সভাপতি নাজমুল হক ঘটনাটি অস্বীকার করে বলেন, স্কুলে তেমন কিছুই ঘটেনি।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার মোঃ মহসিন উদ্দিন বলেন, স্কুলের ঘটনাটি আমার জানা নেই। স্কুল কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত আমার দপ্তরকে অবহিত করেনি। ঘটনাটির সত্যতা পেলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।