‘জীবনে প্রথম ম্যাশিনে (ইভিএম) ভোট দিইলাম। সরকারি লোকেরা প্রথমে আঙুলের ছাপ নিইলো। তারপরে গোপন ঘরে গিয়ে বুতাম টিপলাম। সবুজ আলো জ্বলে উঠলো, অমনি ভোট হয়ে গেল। ভোট দিতি কোনো ঝামেলা নেই। একদম সহজ।’
কথাগুলো বলছিলেন যশোরের চৌগাছা পৌরসভা নির্বাচনে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট দেওয়া শান্তি রাণী (৭০)। তিনি জীবনে অনেকবার ভোট দিয়েছেন ব্যালট পেপারে। এবারই প্রথম ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট দিলেন। পছন্দের প্রার্থীকে বোতাম টিপে ভোট দিতে পেরে খুবই খুশি।
একই কেন্দ্রের আরেক ভোটার শফিকুল ইসলাম (৫৫)। তিনি বলেন, দেশ অনেক আগাইছে। আগে কাগজে মার্কায় সিল মারতাম। আর মার্কা এখন মেশিনে ঢুকে পড়েছে। এত সহজ আর হয় না।
যশোরের চৌগাছা পৌরসভা নির্বাচনে রোববার ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে ইভিএম পদ্ধতিতে। ভোটগ্রহণ চলেছে ৯টি ওয়ার্ডের ১০ কেন্দ্রের ৫৮টি বুথে। এ পৌরসভায় ভোটার সংখ্যা ১৭ হাজার ২৪৮।
নৌকা মার্কায় চৌগাছা পৌরসভার নূর উদ্দীন আল মামুন হিমেল ছয় হাজার ৫৪৬ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। জনগণের ভালবাসায় দ্বিতীয় মেয়াদে মেয়র নির্বাচিত হলেন নূর উদ্দীন আল মামুন হিমেল।
প্রকাশিত বেসরকারি ফলাফলে জানা যায়, চৌগাছা পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে ১১ হাজার ৬৩৫ ভোট পড়েছে। এর মধ্যে ২৫টি ভোট বাতিল হয়েছে। আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা মার্কার প্রার্থী নূর উদ্দীন আল মামুন হিমেল ৬ হাজার ৫৪৬ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী কামাল আহমেদ দুই হাজার ৯৭৬ ভোট পেয়েছেন।
এছাড়া বিএনপির ধানের শীষের প্রার্থী আবদুল হালিম চঞ্চল এক হাজার ৩৬৯ ভোট ও ইসলামী আন্দোলনের হাতপাখা মার্কার প্রার্থী মুফতি শিহাব উদ্দীন ৭৪৪ ভোট পেয়েছেন।
ভোটকেন্দ্রগুলো ঘুরে দেখা গেছে, সকাল থেকেই ভোটারদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। নারী ও পুরুষের দীর্ঘ লাইন। নতুন পদ্ধতিতে ভোট হওয়ায় ভোটারদের মধ্যে কৌতূহল ছিল। কেন্দ্রের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সতর্ক অবস্থানে ছিলেন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা। প্রত্যেক প্রার্থীর উপস্থিতিতে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
যশোরের সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার ও রিটার্নিং অফিসার হুমায়ুন কবির জানান, বাঘারপাড়া ও চৌগাছা পৌরসভায় প্রত্যেক প্রার্থীর উপস্থিতিতে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।