সর্বশেষ খবর
বাংলাদেশ, বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩

দ. আফ্রিকায় দূতাবাসের নামে সক্রিয় ডিজিটাল প্রতারক চক্র

ডেস্ক রিপোর্ট
দক্ষিণ বাংলা বুধবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২০
দ. আফ্রিকায় দূতাবাসের নামে সক্রিয় ডিজিটাল প্রতারক চক্র

আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে প্রবাসীরা ব্যবহার করে ইমো, হোয়াটসঅ্যাপ, ভাইবার, স্কাইপসহ হাজারও সফ্টওয়ার। সহজে মোবাইলে ইমো চালু করা এবং নম্বর যোগ করতে ঝামেলা কম হওয়ায় বেশিরভাগ মানুষ অ্যাপটি ব্যবহার করে।

মেসেজ পাঠানো, কথা বলা বা ভিডিও কলিংয়ের অ্যাপ হিসেবে প্রবাসীদের কাছে জনপ্রিয়তা পেয়েছে ইমো-হোয়াটসঅ্যাপ। আর এ জনপ্রিয় যোগাযোগ মাধ্যমগুলো ব্যবহার করে টাকা-পয়সা খুইয়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন অনেকেই।

দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রবাসীদের সঙ্গে প্রিটোরিয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তা পরিচয়ে ব্যক্তিগত ফোনকলসহ বিভিন্ন ধরনের ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে প্রতারণা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, সম্প্রতি বিদায়ী হাইকমিশনার সাব্বির আহাম্মেদ চৌধুরী দক্ষিণ আফ্রিকায় দায়িত্ব পালনকালে তার ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরটি বন্ধ করে রাখেন। কে বা কারা তার সিমটি চালু করে প্রবাসীদের সঙ্গে রাষ্ট্রদূত পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করে আসছিল।

পরে জানতে পেরে তিনি দেশ থেকে দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশি প্রবাসীদের সতর্ক থাকতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্নভাবে অবহিত করেন।

এদিকে সাব্বির আহাম্মদ চৌধুরী বর্তমানে বাংলাদেশ পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে সচিব হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে দায়িত্ব পালন করছেন।

প্রবাসী শেখ সাজু, মোশাররফ হোসেন, কায়সার হামিদসহ অনেকে জানান, যারা পাসপোর্ট রিনিউ করতে দূতাবাসে জমা দিয়েছেন বা পাসপোর্ট নবায়নের সময় হয়ে আসছে ওই সমস্ত প্রবাসীদের কাছে প্রতারক চক্র কল দিয়ে থাকেন।

তারা জানান, বাংলাদেশ দূতাবাসের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তার নামে ইমু আইডি খুলে কল করে দক্ষিণ আফ্রিকায় স্থায়ীভাবে বৈধ করে দেয়ার প্রস্তাব দেয়। প্রলোভন দেখিয়ে তাদের ইমুর পিন নম্বর নেয়ার চেষ্টাও করে।

এছাড়াও প্রবাসীদের নম্বরে কল দিয়ে অনেকে বলে, ‘স্যার আমরা বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে বলছি। সরকার দক্ষিণ আফ্রিকায় অবৈধভাবে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের বৈধতার জন্য রেজিস্ট্রেশন করছে। তাই সরকারের পক্ষ থেকে আপনার মেবাইলে একটি কোড নম্বর পাঠানো হয়েছে। দয়া করে কোড নম্বরটি আমাদেরকে স্কিনসর্টসহ পাঠিয়ে দেন। আমরাই আপনার নাম রেজিস্ট্রেশন করে দেব।’

প্রবাসীরা ধারণা করছেন, দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে নম্বর সংগ্রহ করে কেউ প্রতারণার ফাঁদ পাততে পারে। এই অবস্থায় দূতাবাসের তথ্য অদান-প্রদানে সতর্ক হওয়ার দরকার।

প্রবাসীরা বলছেন, প্রায় বছরখানেক দক্ষিণ আফ্রিকায় একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র গড়ে উঠেছে। তারা প্রবাসীদের সরলতার সুযোগ নিয়ে কৌশলে ইমু পিন নম্বর নিয়ে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।

এসব বিষয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশ হাইকমিশনার নূর-ই হেলাল সাইফুর রহমান বলেন, ‘নতুন পাসপোর্টের তালিকার সঙ্গে আমরা কখনও আবেদনকারীর ফোন নম্বর দেই না। নতুন যে তালিকা আমরা নোটিশ বোর্ডে টানাই তা আমরা বানাই না। এটি ঢাকা থেকে আসে। ফলে টেলিফোন নম্বর থাকার কোনো সুযোগ নেই। আর আমাদের কোনো ইমো নম্বরও নেই। কাউকে ফোন করার তো প্রশ্নই আসে না।’

জানা গেছে, একাধিক নারী চক্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, ইমো, হোয়াটসআপ, ম্যাসেঞ্জারে প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেয়। কখনো আবার প্রথমে বন্ধুত্বের সম্পর্ক পাতিয়ে ফেসবুক, ইমো, হোয়াটসআপ, মাসেঞ্জারে ভিডিও কলে অশ্লীল কথাবার্তা বলে তা কৌশলে ধারণ করে।

পরে এ ছবি, ভিডিও অনলাইনে ফাঁস করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ব্ল্যাক মেইল করে আদায় করা হয় মোটা অংকের টাকা। অনেক সময় আবার গরিব-অসহায় লোককে ক্যান্সারসহ বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্তের কথা বলে রোগীদের বানোয়াট ছবি দেখিয়ে সাহায্যের নামে অর্থ হাতায়। এজন্য তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাধিক আইডি ব্যবহার করে। টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পর ওই আইডিগুলো নষ্ট করে দেয়।

ইমো, হোয়াটসঅ্যাপ হ্যাকিং থেকে বাঁচতে সতর্ক হতে হবে প্রবাসীদের। অপরিচিত কাউকে মোবাইল দেয়া যাবে না। অপরিচিত কাউকে কোন ওজুহাতে নিজের মোবাইলের পাসওয়ার্ড দেয়া যাবে না।


আরো নিউজ