শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় এক গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্তকে বিশটি জুতার বাড়ি দিয়েই এক গ্রাম্য সালিশে বিচার শেষ করা হয়। এই ঘটনায় মামলা হওয়ার পর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) মেম্বার, ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তি, গ্রাম্য সালিশের মাতব্বর ও ধর্ষণের ভিডিও ধারণকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গ্রেফতাররা হলেন- ধর্ষণে অভিযুক্ত উপজেলার মূলনা ইউনিয়নের চরলাউখোলা বালিয়াকান্দি গ্রামের দুদু মিয়া (৪৫), ইউপি মেম্বার জসিম সরদার (৩৫), মোকসেদ মাদবর (৫০) ও ধর্ষণের ভিডিও ধারণকারী নয়ন মোড়ল (১৮)। বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টার দিকে তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ। এর আগে বিকেল ৪টার দিকে ওই গৃহবধূ জাজিরা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্র জানায়, জাজিরা উপজেলার মূলনা ইউনিয়নে গত ৫ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) রাত ১০টার দিকে স্বামীর অনুপস্থিতিতে দুদু মিয়া ওই গৃহবধূর ঘরে ঢুকে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এ সময় ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করেন স্থানীয় ফরহাদ, নয়ন মোড়ল, রায়হান সিকদার, আবুল মোড়ল।
ঘটনা ধামাচাপা দিতে গতকাল ৯ ফেব্রুয়ারি (মঙ্গলবার) স্থানীয় মোকসেদ মাদবরের বাড়িতে ভুক্তভোগী পরিবারের অনুপস্থিতিতে স্থানীয় দরবার-সালিশের আয়োজন করা হয়। দরবারে উপস্থিত মাতব্বররা ধর্ষণের সেই ভিডিও মোবাইল থেকে ডিলিট করতে ও ৫০টি জুতার বাড়ি মারার রায় ঘোষণা করেন। সেখানে ৩০টি মাফ করে দিয়ে ২০টি জুতার বাড়ি মারা হয় দুদু মিয়াকে। সালিশে ইউপি সদস্য জসিম সরদার, মোকসেদ মাদবরসহ স্থানীয় মাতব্বররা উপস্থিত ছিলেন।
এ ঘটনায় আজ বিকেল ৪টার দিকে গৃহবধূ বাদী হয়ে দুদু মিয়াসহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে জাজিরা থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামি দুদু মিয়া, জসিম সরদার, মোকসেদ মাদবর ও নয়ন মোড়লকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
নড়িয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এসএম মিজানুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, এ ঘটনায় ভুক্তভোগী বাদী হয়ে মামলা করলে জাজিরা থানার ওসি (তদন্ত) মিন্টু মণ্ডলসহ পুলিশ সদস্যদের নিয়ে আমি চারজন আসামিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হই। বাকি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।