পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার লোহালিয়া নদীর বগা-গরবদীর ফেরী পারাপারে অতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে ঘাট ইজারাদার কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। ইজারা চুক্তি লঙ্গণ করে সকল ধরণের যানবাহন পারাপারে দ্বিগুণ এবং কোন কোন সময়ে তিনগুনেরও বেশী টোল আদায় করা হচ্ছে বলে জানান ভুক্তোভোগীরা।
ওই ফেরীতে নিয়মিত চলাচলকারী যানবাহন চালকদের অভিযোগ, বগা ফেরীঘাটে টোল আদায়ের ক্ষেত্রে কোন সরকারি নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা করছেন না ইজারাদার কর্তৃপক্ষ। ফলে ইজারা কর্তৃপক্ষের ইচ্ছেমত ধার্য্যকৃত ভাড়া দিতে বাধ্য হচ্ছেন যানবাহন চালকরা। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে ইজাদারের লোকজনের হাতে কেউ কেউ লাঞ্চিতও হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে অহরহ। একরকম পরিবহন শ্রমিকরা ইজারাদার কর্তৃপক্ষের লোকজনের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছেন বলে জানান তাঁরা।
সরেজমিন দেখা গেছে, ভারী পণ্যবাহী যানবাহন-ট্রাক /কাভার্ডভ্যান পারাপারে ১০০শ’টাকার স্থলে ২শ’৫০টাকা এবং অনধিক ১৫ যাত্রীবাহী মটরযানে ২০টাকার স্থলে ৪০টাকা, মোটর সাইকেল পারাপারে ৫টাকার ভাড়া নেয়া হচ্ছে ২০টাকা, অটো-রিস্কা, থ্রিহুইলার-১০টাকার ভাড়া ২০/৩০টাকা করে আদায় করা হচ্ছে। যাত্রীবাহী বাস-মিনিবাস ৪৫টাকার স্থলে ১২৫ টাকা নেয়া হয়েছে। এ ছাড়া দুই এক্সেল বিশিষ্ট রিজিড ট্রাক/বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহৃত ট্রাক্টর/ট্রেইলর ৫০টাকার স্থলে ১০০টাকা রেটে আদায় করা হচ্ছে । কেন অতিরিক্ত ভাড়া দিচেছন, এমন প্রশ্নের জবাবে বরিশালগামী মালবাহী ট্রাক চালক মোশাররফ খান বলেন, ঘাটের লোকজন খারাপ, টাকা না দিলে ঝামেলা করে। শারীরীক ভাবে লাঞ্ছিত হতে হয়। তাই লাঞ্চিতর ভয়ে বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত টাকা দিতে হচ্ছে। ট্রলিচালক ইব্রাহীম বলেন, ৫০টাকার ভাড়া ১০০টাকা নেয়। তাদের ধার্য্যকৃত ভাড়া না দিলে গাড়ী আটকে ঝামেলা করে। এরুটে চলাচলকারী যানবাহন চালকরা ঘাট ইজারাদারের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। ইজারা কর্তৃপক্ষের লোকদের হাতে নাজেহাল হওয়া এড়াতেই তাদের অতিরিক্ত ভাড়া দিতে হচ্ছে।
ইজাদার কর্তৃপক্ষের স্থানীয় প্রতিনিধি মো: শাহীন মাষ্টার অবশ্য অতিরিক্ত টোল আদায়ের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, এবারে উচ্চদরে (২কোটির ওপরে) ফেরীঘাটের ইজারা পায় পটুয়াখালীর বিশিষ্ট ব্যবসায়ি শিবু লাল দাস। তার কাছ থেকে এপার ওপার মিলে সাব-কন্ট্রাক্ট নিয়ে তারা ফেরীঘাট পরিচালনা করছেন। বিগত বছরের রেটের সামঞ্জস্য রেখেই ভাড়া নিচ্ছেন তাঁরা।
বগা ফেরীঘাটের ইজারাদার শিবু লাল দাস বলেন, সরকারি নির্ধারিত রেটের অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের কোন সুযোগ নেই। সরকারি রেট চার্ট দেয়া আছে, এর বাইরে আদায় করার খবর আমার জানা নেই।
অতিরিক্ত ভাড়া আদায় প্রশ্নে সড়ক ও জনপদের পটুয়াখালী নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ কামরুল হাসান বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। এমনটি হয়ে থাকলে অবশ্যই তদন্ত পূর্বক প্রয়াজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।