গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে এক প্রতারক পরিবারের ৫ সদস্যের নামে মামলা হয়েছে। মামলাটি করেছেন ওই পরিবারের সাবেক সদস্য ভারত প্রবাসী পরিমল সাহা। মামলার আসামি হওয়া ওই ব্যক্তিরা হচ্ছে প্রাণবল্লব সাহা, পরেশ চন্দ্র সাহা, পলাশ সাহা, সূদিপ সাহা ও প্রদিপ সাহা। আসামিদের মধ্যে ২ জন বাদী পরিমল সাহার আপন ভাই ও ৩ জন আপন ভাতিজা।
এদিকে মামলা করে উল্টো বিপাকে পড়ে গ্রাম ছাড়তে বাধ্য হয়েছে বাদী পরিমল সাহা ও তার ছেলে সানি সাহা ও মেয়ে মৌসুমী সাহা। মামলার বাদী সাংবাদিকদের জানিয়েছেন আসামিদের হামলার ভয়ে তারা গ্রামে ঢুকতে পারছে না। আসামিরা বিত্তবান ও প্রভাবশালী হওয়ায় স্থানীয় প্রশাসন ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ আমাদেরকে সহযোগিতা করছে না।
জানাযায় পরিমল সাহা ও তার ছোট ভাই নরেশ চন্দ্র সাহা কর্মসংস্থানের জন্য দীর্ঘদিন ভারতে অবস্থান করে আসছে। এই সুযোগে বাংলাদেশে থাকা অপর ২ ভাই প্রাণবল্লব সাহা ও পরেশ সাহা এবং তাদের ছেলেরা পলাশ সাহা, সূদিপ সাহা ও প্রদিপ সাহা তাদের ভিটা বাড়ি ও কৃষি জমি ভোগ করে আসছে। গত ২০১৭-১৮ সালে বাংলাদেশ সরকার পরিমল সাহা, নরেশ চন্দ্র সাহা, প্রাণবল্লব সাহা ও পরেশ চন্দ্র সাহার ১ নং লখাইরচর মৌজার ৮০৮ নং খতিয়ানের ২৭৩৪ নং বি আর এস দাগের ৪০ শতাংশ কৃষি জমি নুতন রেল লাইন তৈরির জন্য গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে অধগ্রহণ করে নোটিশ জারি করে। এসময় বাংলাদেশে থাকা ২ ভাই প্রাণবল্লব সাহা ও পরেশ চন্দ্র সাহা ভারতে অবস্থান করা অপর ২ ভাই সরকার পরিমল সাহা, নরেশ চন্দ্র সাহাকে কোন কিছু না জানিয়ে নোটিশ গোপন করে। এরপর প্রতারনার আশ্রয় নিয়ে পরিমল সাহা ও নরেশ চন্দ্র সাহার নামে দাতা দেখিয়ে নকল একটি দলিল তৈরি করে নিজেরা গ্রহিতা সাজেন। পরবর্তিতে ওই নকল দলিল ব্যবহার করে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের অধগ্রহণ শাখার অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ঘুষের বিনিময়ে অধগ্রহণ হওয়া জমির সমুদয় টাকা উঠিয়ে আত্মসাত করে। গত ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে ভারত প্রবাসী পরিমল সাহা তার ছেলে সানি সাহা ও মেয়ে মৌসুমী সাহা বেড়ানো উপলক্ষে বাংলাদেশ আসে এবং রক্তের সাথে রক্তেপ্রতারণা করার এই ঘটনাটি জানাজানি হয়। এবিষয়ে তৎকালীন সময়ে মুকসুদপুর পৌরসভার লখাইরচর এলাকায় ব্যপক আলোচনা সমালোচনা শুরু হয়। পরে একাধিকবার এলাকার মুরব্বিদের নিয়ে সালিশ বৈঠক হয়। সালিশে পরিমল সাহা ও নরেশ চন্দ্র সাহার স্ত্রী কে তাদের ভাগের টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। পরবর্তীতে প্রতারণা কারী প্রাণবল্লব সাহা, পরেশ চন্দ্র সাহা ও তাদের ছেলেরা টাকা ফিরিয়ে না দিয়ে ভয়ভীতি ও প্রাণনাশের হুমকি দিলে পরিমল চন্দ্র সাহা বাদী হয়ে গত ২৮ নভেম্বর ২০২২ তারিখে মুকসুদপুর আমলকী আদালত গোপালগঞ্জে একই পরিবারের ৫ জনের নামে জাল দলিল ও প্রতারণা দায়ে ৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/৫০৬/ ৪২০ ও ১০৯ ধারায় মামলা করেন। জার নম্বর- গোপালগঞ্জ সি আর- ৭৮১/২২। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে গোপালগঞ্জ সি আই ডি কে তদন্তের নির্দেশ দেয়।
এবিষয়ে আসামি প্রাণবল্লব সাহা,পরেশ সাহা, পলাশ সাহা, সূদিপ সাহা ও প্রদিপ সাহা কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সি আই ডি অফিসার এস আই সবুজ বলেন, এটি জমি জমা বিষয়ক মামলা বেশ কিপিক্যাল তদন্ত চলছে, তদন্তের স্বার্থে এখন বিস্তারিত বলা সম্ভব নয়।