সর্বশেষ খবর
বাংলাদেশ, শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩

লাখ টাকার শেয়ার হাজারে : রিজেন্সির চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে পরোয়ানা

ডেস্ক রিপোর্ট
দক্ষিণ বাংলা বুধবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০২০
লাখ টাকার শেয়ার হাজারে : রিজেন্সির চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে পরোয়ানা

শেয়ার নিয়ে প্রতারণা করায় ঢাকা রিজেন্সি হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট লিমিটেডের চেয়ারম্যান মুসলেহ উদ্দিন আহমেদসহ সাতজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। ঢাকা মহানগর হাকিম আতিকুল ইসলামের আদালত এ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।

গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়া অন্য আসামিরা হলেন- ঢাকা রিজেন্সি হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কবির হোসেন, পরিচালক আরিফ মোতাহার, নাজমা আরিফ মোতাহার, জেবুন্নেসা, ফাহিম আরিফ মোতাহার ও রোকেয়া খাতুন।

বুধবার (৯ ডিসেম্বর) আদালতের বেঞ্চ সহকারী আশিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেব, ‘আসামিদের বিরুদ্ধে সমন জারি হওয়ায় মামলার বাদী মিনাজ আহমেদ গত ২ নভেম্বর তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির জন্য আবেদন করেন। ওই দিনই বিচারক বাদীর আবেদন মঞ্জুর করে আসামিদের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করেন।’

আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশে উল্লেখ করেন, মামলাটি সমন জারি হয়ে এসেছে। বাদীপক্ষ একটি আবেদন দাখিল করে বলেন যে, আসামিরা বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের দ্বৈত নাগরিক এবং আসামিরা যেকোনো সময় বিদেশে পালিয়ে যেতে পারেন। যদি আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি না করা তাহলে বাদীসহ শত শত লোক ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

আদালত আরও বলেন, আসামিরা বাদীসহ একাধিক লোকের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা নিয়েছে। এ অবস্থায় আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি না করলে মামলার বিচারকাজ বাধাগ্রস্ত হবে। নথি পর্যালোচনায় দেখা যায় যে, গত ৩০ নভেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে সমন জারি করা হয়। আদালত বাদীর আবেদন গ্রহণ করে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হলো।

এর আগে শেয়ার কিনে প্রতারণার শিকার হওয়ায় ৩০ নভেম্বর ঢাকা মহানগর হাকিম আতিকুল ইসলামের আদালতে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের দ্বৈত নাগরিক মিনাজ আহমেদ বাদী হয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামিদের প্রতিষ্ঠিত ঢাকা রিজেন্সি হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট লিমিটেড ২০০৫ সালে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় ও ব্রোসিয়ারের মাধ্যমে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বিদেশিদের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার প্রলোভন দেখিয়ে তাদের প্রতিষ্ঠানে শেয়ারহোল্ডার হিসেবে বিনিয়োগে আকৃষ্ট করেন। আসামিদের প্রস্তাব ছিল যে, শেয়ার বাবদ ২৫ হাজার পাউন্ড স্টারলিং (২৯ লাখ টাকা) বিনিয়োগ করলে, বিনিয়োগকারীকে কোম্পানির পরিচালকপদসহ আনুষঙ্গিক সুযোগ-সুবিধা দেয়া হবে।

মামলার বাদী মিনাজ আহমেদ ওই প্রস্তাবে সম্মত হয়ে ২০০৬ সালের ৩ মার্চ পরিচালক পদ পাওয়ার আশায় এ টাকা বিনিয়োগ করে শেয়ারহোল্ডার চুক্তিবদ্ধ হন।

২০০৭ সালের আগস্ট/সেপ্টেম্বর মাসে বাদী বরাবর পরিচালক হিসেবে কোম্পানির পরিচয়পত্র (আইডি কার্ড) প্রদান করা হয়। এরপর ২০০৮ সালের জানুয়ারি মাসে মামলার বাদী বিদেশ থেকে বাংলাদেশে এসে আসামিদের কাছে কোম্পানির কাগজপত্র ও বিনিয়োগকৃত শেয়ারের সনদ দেখতে চাইলে আসামি মুসলেহ উদ্দিন আহমেদ ও আরিফ মোতাহার তা দেখাতে গড়িমসি করেন। কেবল ২৯০টি শেয়ার (যার মূল্য ২৯ হাজার টাকা) প্রদর্শন করলে বাদী আশ্চর্য হন এবং আসামিদের প্রতারণা বুঝতে পারেন।

এরপর মামলার বাদী খোঁজ-খবর নিয়ে জানতে পারেন, আসামিরা সব বিনিয়োগকারীর সঙ্গে এমন প্রতারণা করেছেন এবং বাদীর মতো কাউকে অঙ্গীকার মতো কোম্পানির পরিচালক পদ দেননি। অংশীদারদের সমন্বয় পরিচালনা বোর্ড গঠনের প্রস্তাব দিয়ে একান্ত পারিবারিক বোর্ড গঠন করেন তারা। কোম্পানি পরিচালনার সুদীর্ঘ সময়ে কখনো কোনো লভ্যাংশ প্রদান করেননি আসামিরা। তারা কেবল নামমাত্র শেয়ার প্রদান করেই ক্ষান্ত হননি, লিমিটেড কোম্পানির নিয়ম অনুযায়ী এজিএম না করেই বাদীসহ অন্য শেয়ারহোল্ডারদের উপস্থিত দেখিয়ে সাক্ষ্য জাল করে এজিএম দেখিয়ে অবৈধভাবে কোম্পানি চালিয়ে যাচ্ছেন।

এ বিষয়ে বিনিয়োগকারী বিভিন্ন সময় প্রশ্ন করলে আসামিরা প্রভাব খাটিয়ে হয়রানিমূলক অভিযোগে বেশ কয়েকজন যুক্তরাজ্য প্রবাসী বিনিয়োগকারীকে মিথ্যা মামলা করে হয়রানি করেন এবং দেশ ছাড়তে বাধ্য করেন। চলতি বছরের ২১ নভেম্বর বাদী তাদের অফিসে গিয়ে টাকা ফেরত চাইলে আসামিরা টাকা ফেরত দিতে অস্বীকার করেন এবং জীবননাশের হুমকি দিয়ে তাড়িয়ে দেন।


আরো নিউজ