সরকারী নির্দেশ অমান্য করে বরিশালের আগৈলঝাড়ার মাধ্যমিক বিদ্যালয় গুলোতে অ্যাসাইনমেন্ট পরীক্ষার নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অবৈধভাবে অর্থ আদায়ের অভিযোগে ইউএনও গঠিত তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের সত্যতা পেয়েছেন তদন্ত কমিটি।
মঙ্গলবার তদন্ত কমিটির প্রধান উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা সুশান্ত বালা ও সদস্য সমবায় কর্মকর্তা কামরুজ্জামান শিক্ষার্থীদের অর্থ হাতিয়ে নেয়া স্কুলগুলোর মধ্যে অন্যতম সদরের ভেগাই হালদার পাবলিক একাডেমীতে (বিএইচপি একাডেমী) গিয়ে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেন। এসময় ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক মন্ডলী, প্রেসক্লাবের সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
তদন্ত কমিটির কাছে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান, গনিত শিক্ষক রনজিত কুমার বাড়ৈ, শরীরচর্চা শিক্ষক তপন সমদ্দার, কৃষি শিক্ষার শিক্ষক সীমা বিশ্বাস, বাজিন্য বিভাগের শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ, গনিত শিক্ষক জগদীশ সমদ্দার, ইংরেজী শিক্ষক বিলকিস খানম, বিজ্ঞান শিক্ষক রওশন আরা, খ্রিস্টধর্ম শিক্ষক আইরিন শিখা বাড়ৈ, হিন্দুধর্ম শিক্ষক রিপন মন্ডলসহ শিক্ষকেরা তাদের স্বাক্ষ প্রদান করেছেন। শ্রেণি শিক্ষকেরা তদন্ত কমিটির কাছে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিনা রশিদে টাকা আদায়ের কথা স্বীকার করে পরে তাদের টাকা ফেরত দেয়ার কথাও জানিয়েছেন।
তবে স্কুলের কোন মিটিং এ টাকা নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে বা অদৌ কোন মিটিং হয়েছে কিনা তা তারা জানেন না বলেও জানান। তারা আরও বলেন, প্রধান শিক্ষক ও গনিত শিক্ষক তাদের টাকা নিতে বলেছে বিধায় তারা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা উত্তোলন করেছিলেন। তবে শিক্ষার্থীদের টাকা নেয়া বা ফেরত দেয়ার কোন দালিলিক প্রমান শিক্ষকেরা তদন্ত কমিটির সামনে উপস্থাপন করতে পারেন নি।
উল্লেখ্য, উপজেলা সদরের ভেগাই হালদার পাবলিক একাডেমীতে অ্যাসাইনমেন্ট পরীক্ষার খাতা জমা নেওয়ার সময় প্রতি শিক্ষার্থীদের কাছ ২০০ থেকে ৩০০টাকা পর্যন্ত অবৈধভাবে আদায় করার ঘটনায় স্কুল চত্তরে গত ১ডিসেম্বর বিক্ষোভ করেছিলো সাধারণ শিক্ষার্থীরা। একইভাবে উপজেলার বেশীরভাগ স্কুলেই অবৈধভাবে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ করেছিলো শিক্ষার্থীরা ও তাদের অভিভাবকেরা। ওই ঘটনায় সংবাদ প্রকাশের পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আবুল হাশেম এঘটনায় দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন।
সে কমিটির প্রধান উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা সুশান্ত বালা ও উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা কামরুজ্জামান ৭কার্য দিবসের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন ইউএনও আবুল হাশেমের কাছে জমা দেয়ার কথা রয়েছে। তদন্ত কমিটির সদস্য উপজেলা সমবায় অফিসার কামরুজ্জামান তদন্ত কার্যক্রমের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সেখানে শিক্ষকদের কথা শুনে তা লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। উপস্থিতিদের সকলের হাজিরা গ্রহন করা হয়েছে। বিষয়টি খুব শিঘ্রই তদন্ত শেষ করে রিপোর্ট দাখিল করা হবে বলেও জানান তিনি।