নতুন বছরকে বরণ করে নিতে পাহাড়ে পাহাড়ে চলছে বৈসাবির গান। এ উৎসবের প্রথম অংশ শুরু হয় সাঙ্গু নদীতে ফুল ভাসিয়ে। চাকমা রীতিতে এই ফুল ভাসানের নাম ‘ফুল বিজু’। আর ত্রিপুরারা বলে ‘হারি বৈসুক’।
বান্দরবান জেলায় ১৪টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মানুষ এখন বর্ষবরণ ও বিদায়ের এই উৎসবে মাতোয়ারা। পাহাড়িদের জীবনে এটাই বছরের প্রধান সামাজিক উৎসব।
তাদের বিশ্বাস, দেবতার উদ্দেশ্যে ফুল ভাসালে পুরোনো বছরের গ্লানি থেকে মুক্তি মেলে। তাই মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) সকালে বান্দরবানের রোয়াংছড়ি স্টেশন এলাকার নদীর ঘাটে এসে রান্যাফুল সোশ্যাল অ্যান্ড কালচারাল সোসাইটির উদ্যোগে একদল তরুণ-তরুণী নদীর জলে ফুল ভাসায়। আর এ ফুল বিজু পালনের মাধ্যমে সর্বস্তরের মানুষকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানানো হয়। নতুন বছরে মঙ্গল কামনায় সাঙ্গু নদীর জলে তারা ভাসিয়ে দেন ফুল।
আয়োজকরা জানান, ফুল বিজুর দিন বনজ ফুল লতাপাতা দিয়ে ঘর সাজিয়ে ছিমছাম করে রাখে প্রত্যেক তঞ্চঙ্গ্যা পরিবার। সকালে কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণীরা ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরিধান করে নদীতে ফুল ভাসিয়ে দেয় মা গঙ্গার উদ্দেশ্যে। তাদের বিশ্বাস- মা গঙ্গা এতে সন্তুষ্ট হন এবং সারা বছর আশীর্বাদ করে থাকেন। মূল বিজুতে পরিবারে রসমালাইয়ের ন্যায় বিনি চালের গুঁড়া দিয়ে পিঠা তৈরি করে পরিবেশন করা হয়। শেষ দিন সমগ্র জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনার লক্ষ্যে বৌদ্ধ বিহারে প্রার্থনায় মিলিত হয় তঞ্চঙ্গ্যা জনগোষ্ঠী।
নদীতে ফুল ভাসাতে আসা রিমা তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, সবাই যেন সুখে-শান্তিতে থাকেন এ জন্য আমরা নদীতে ফুল ভাসাই। আজ আমাদের খুবই খুশির দিন। গত দুই বছর করোনার কারণে আমরা ফুল ভাসানোর উৎসব পালন করতে পারিনি। এবার আমরা এই ফুল বিজু পালন করতে পেরে খুব খুশি।
আয়োজক কমিটির সদস্য সুবল চাকমা বলেন, তিন দিনব্যাপী বিজু উৎসবের আজ প্রথম দিন। আজ থেকে প্রতিদিন নানা আয়োজনে বর্ণিল বিজু উৎসব পালন করা হবে।