আগৈলঝাড়ায় ভিজিডির চাল মাপে কম দেয়ার অভিযোগ ইউপি সদস্যর বিরুদ্ধে

মাসুদ রানা
দক্ষিণ বাংলা মঙ্গলবার, ২০ জুলাই, ২০২১
আগৈলঝাড়ায় ভিজিডির চাল মাপে কম দেয়ার অভিযোগ ইউপি সদস্যর বিরুদ্ধে

বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার ৪নং গৈলা মডেল ইউনিয়ন পরিষদের টেমার ও সেরাল গ্রামের (৮,৯) ওয়ার্ডের ভিজিডি কার্ডের ১০ কেজি চালের মধ্যে ওজনে ১ থেকে ২ কেজি করে চাল কম দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে গৈলা ইউপি সদস্য ও গৈলা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক তরিকুল ইসলাম চানের বিরুদ্ধে। মাপে কম পাওয়া একাধিক ব্যক্তিরা এই অভিযোগ করেন।

খোজ নিয়ে জানা গেছে, সরকারের বিশেষ বরাদ্ধ ১০ কেজি পরিমাণ চাল অথবা ৫০০ টাকা পাবে ২ হাজার পরিবার। ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় বসে এই চাল এবং টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় চেয়ারম্যান মোঃ শফিকুল হোসেন টিটু তালুকদার। তবে ৮নং ওয়ার্ড মেম্বার তরিকুল ইসলাম চান ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের ৪৮০ টি কার্ডের চাল টেমার মালেকা খাতুন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বসে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এসময় উপস্থিত ব্যক্তিদের মাপে ১থেকে ২ কেজি করে চাল কম দেয়া হয়।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত মেম্বার তরিকুল ইসলাম চান বলেন, আমি শুধু নামের লিস্ট দিয়েছি চাল দেয়ার দায়িত্বে থাকে সচিব এবং ট্যাগ কর্মকর্তার। তবে চাল দেয়ার সময় আমি সেখানে উপস্থিত ছিলাম কিন্তু আমি কোন অভিযোগ পাইনি। তবে চানের বিরুদ্ধে এর আগেও চাল কম দেয়া ছাড়া ও অনেক ধরণের দুনীতির অভিযোগ আছে বলে জানায় ওই ওয়ার্ডের জনগণ। এর আগে প্রধানমন্ত্রীর ঘর নির্মাণ প্রকল্পে ও অনিয়ম করেছিল মেম্বার তরিকুল ইসলাম চান।

এ বিষয়ে ইউপি সচিব সাধন চন্দ্র হালদার বলেন, আমি চেয়ারম্যানের প্রতিনিধি হিসেবে চাল দেয়ার সময় নামের লিস্ট মিলিয়ে দেখার দায়িত্বে ছিলাম। চাল মাপার কাছে ছিল মেম্বার তরিকুল ইসলাম চান। আমরা তার কথাতেই টেমার মালেকা খাতুন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে চাল দিতে যাই। তবে ওখানে বসে আমার কাছে কেউ কোন অভিযোগ করেনি। আর ওজনে কম দেওয়ার ব্যাপারে আমি কিছু জানি না।

রোবিবার, ১৮ জুলাই ভিজিডি কার্ডধারী একাধিক পরিবার চাল কম দেওয়ার অভিযোগ করেন। ওই দিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত টেমার মালেকা খাতুন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এই ভিজিডির চাল বিতরণ করা হয়। গৈলা ইউনিয়নের টেমার ও সেরাল(৮,৯) ওয়ার্ডের মোট ৪৮০ টি কার্ডের চাল প্রত্যেককে ১০ কেজি করে চাল বরাদ্দ দেয় সরকার।

ভিজিডি কার্ডধারী ইউনিয়নের সেরাল গ্রামের খলিলুর রহমান সেরনিয়াবাত ও শাহ আলম হাওলাদার বলেন, ডিজিটাল পাল্লা দিয়ে চাল মেপে তাদের দুজনের চাল এক বস্থায় দেওয়া হয়েছে। বাড়ি ফিরে দুজনার চাল ভাগ করার জন্য পুনরায় ডিজিটাল পাল্লায় মেপে দেখেন সেখানে ১৭.৮০০ কেজি চাল আছে। অথচ থাকার কথা ২০ কেজি। তাঁরা এর প্রতিবাদ করতে ভয় পান, যদি নাম কেটে দেয়।

এছাড়া কার্ডধারী একাধিক লোক অভিযোগ করে বলেন, ভিজিডির চাল বিতরণের সময় দেখা গেছে, ডিজিটাল পাল্লা দিয়ে ইউপি মেম্বার তরিকুল ইসলাম চানের উপস্থিতিতে কার্ডধারীদের চাল দেওয়া হচ্ছে। এ সময় দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্যাগ কর্মকর্তা আমিনুল ইসলামকে সেখানে দেখা যায়নি।

এ বিষয়ে ট্যাগ কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, ‘আমি অফিসিয়াল কাজের জন্য প্রথম সেখানে থাকতে পারিনি। তবে আমার প্রতিনিধি হানিফ মৃধা সেখানে উপস্থিত ছিলো। তিনি বলেন ভিজিডির চাল বিতরণ করা হয় ইউনিয়নের হতদরিদ্রের মাঝে। আমি কখনও এই অনিয়মকে সাপোর্ট করিনা। ১০ কেজির থেকে চাল কম দিয়েছে, তা আমাকে কেউ জানায়নি।’

৪৮০ পরিবারকে ৫০০ গ্রাম করে চাল কম দিলে চাল কমের পরিমাণ দাড়ায় (৪৮০x৫০০ গ্রাম)= ২৪০ কেজি যার বর্তমান আনুমানিক বাজার মূল্য ১২ হাজার টাকা।


আরো নিউজ
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: JPHOSTBD