আগৈলঝাড়ায় দ্বিতীয় পর্যায় প্রধানমন্ত্রীর উপহার নতুন ঘর পাচ্ছে ১৫টি পরিবার

এস এম শামীম, আগৈলঝাড়া
দক্ষিণ বাংলা শুক্রবার, ১৮ জুন, ২০২১

মুজিববর্ষ উপলক্ষে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলায় দ্বিতীয় পর্যায় ১৫টি ভূমিহীন পরিবার পাবে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহার ঘর। ‘আশ্রয়নের অধিকার, শেখ হাসিনার উপহার’ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে নির্মিত হচ্ছে এসব ঘর। এরেই মধ্যে উপজেলার ১৫টি ঘরের মধ্যে ৭টি ঘরের কাজ সম্পন্ন হয়েছে এবং বাকি ৮টি ঘরের কাজ চলমান রয়েছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার তিনটি ইউনিয়নে দ্বিতীয় পর্যায় গৃহ ও ভূমিহীন ১৫টি পরিবারের মাঝে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে এই ঘর। দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দকৃত ২০২০-২১ অর্থ বছরের আওতায় একটি ঘরের জন্য মোট ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। এসব ঘরে দুইটি ক, বারান্দা, রান্নাঘরসহ সকল ধরনের সুযোগ-সুবিধা থাকছে। ঘরগুলো নির্মাণে সার্বিক তদারকি করছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ আবুল হাশেম ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ মোশররফ হোসাইনসহ সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানগণ।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোশাররফ হোসাইন জানান, গৃহ ও ভূমিহীনদের জন্য সরকারি খাস জায়গায় উপজেলার ৩টি ইউনিয়নে ১৫ জন ভূমিহীনদের বাচাই করে তাদের জন্য ঘর নির্মাণ করে দিচ্ছে সরকার। এর মধ্যে গৈলা ইউনিয়নে ২টি, রাজিহার ইউনিয়নে ১টি, রত্নপুর ইউনিয়নে ১২টিসহ মোট ১৫টি ঘর নির্মিত হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আগামী রোববার দ্বিতীয় ধাপে ভূমিহীন-গৃহহীন এসব পরিবারকে বিনামূল্যে দুই শতক জমিসহ সেমিপাকা ঘর প্রদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন।
এর আগে প্রথম ধাপে এ উপজেলায় ৩৬টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মাঝে ঘরের চাবি ও দলিল হস্তান্তর করা হয়।
উপজেলার রত্নপুর ইউনিয়নের রত্নপুর গ্রামের ভূমিহীন নাছির হাওলাদার বলেন, ‘দীর্ঘদিন পরের বাড়িতে থেকেছি। প্রধানমন্ত্রী জায়গাসহ ঘর দিচ্ছেন। এতে আমি খুবই খুশি। ছেলে মেয়েদের নিয়ে পাকা ঘরে থাকতে পারব।’ একই গ্রামের বেল্লাল চৌকিদার বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ঘর উপহার দিচ্ছেন এতে আমরা খুবই আনন্দিত। অন্যের বাড়িতে ছেলে মেয়ে নিয়ে কষ্ট করে থেকেছি। এখন শান্তিতে থাকতে পারব। প্রধানমন্ত্রীর জন্য আমি দুই হাত তুলে সৃষ্টিকর্তার কাছে দোয়া করি।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ আবুল হাশেম বলেন, মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী এ উপজেলায় দ্বিতীয় পর্যায় ১৫টি ভূমিহীন পরিবার পাবে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহার ঘর। এরেই মধ্যে উপজেলার ১৫টি ঘরের মধ্যে ৭টি ঘরের কাজ সম্পন্ন হয়েছে এবং বাকি ৮টি ঘরের কাজ চলমান রয়েছে। ইতোমধ্যে ৭টি ঘরের নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হয়েছে। এছাড়া কিছু ঘরে রংয়ের কাজ বাকি আছে। আশা করি, দ্রুত ঘরগুলোর কাজ শেষ করতে পারব। চলতি মাসের ২০ জুন রোববার বরাদ্দকৃত ঘরগুলো মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপকারভোগী পরিবারের নিকট হস্তান্তর কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন করবেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রইচ সেরনিয়াবাত বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জনের পর সর্বপ্রথম জাতির পিতাই দেশের ভূমিহীন-গৃহহীন-ছিন্নমূল অসহায় পরিবার পুনর্বাসনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিজস্ব উদ্যোগে ১৯৯৭ সালে শুরু হওয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে সারা দেশে ভূমিহীন, গৃহহীন ও ছিন্নমূল পরিবার পুনর্বাসনের লক্ষে কার্যক্রম চলমান রয়েছে। মুজিববর্ষে ‘বাংলাদেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না’ প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে দেশের সব ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমি ও ঘর প্রদান কার্যক্রম চলছে।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় ১৯৯৭ সাল থেকে ২০২১ সালের মে মাস পর্যন্ত সময়ে দেশে মোট ৩ লাখ ৭৩ হাজার ৫৬২টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। একসঙ্গে এত ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারকে বিনামূল্যে ঘর করে দেওয়ার ঘটনা পৃথিবীতে নজিরবিহীন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।


আরো নিউজ
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: JPHOSTBD