ইটভাটায় শিশুকে ধর্ষণ, ৫ দিন আটকে রেখে আলামত নষ্টের অভিযোগ

ডেস্ক রিপোর্ট
দক্ষিণ বাংলা মঙ্গলবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২১
চকলেটের প্রলোভন দেখিয়ে শিশু ধর্ষণের চেষ্টা, অভিযুক্ত গ্রেফতার

ইটভাটায় সাড়ে তিন বছরের শিশু কন্যাকে শ্রমিক ইলিয়াস সিকদার ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ধর্ষণের শিকার শিশু কন্যার মা এমন অভিযোগ করেন।

ধর্ষণের আলামত নষ্ট ও ঘটনা ধামাচাপা দিতে ইটভাটার ম্যানেজার মো. মোফাজ্জেল হাওলাদার ও সরদার মো. নুর আলম শিশুর বাবা ও মাকে আটকে রেখেছে। পাঁচ দিন পরে সোমবার শিশুটিকে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

ঘটনা ঘটেছে গত বুধবার দুপুরে আমতলী উপজেলার কুকুয়া ইউনিয়নের এক ইটভাটায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

জানা গেছে, ধর্ষণের শিকার শিশু কন্যার মা-বাবা ওই ইটভাটায় শ্রমিকের কাজ করেন। সেখানে আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম সোনাখালী গ্রামের ইসমাইল সিকদারের ছেলে ইলিয়াস সিকদার ইট তৈরির কারিকর হিসেবে কাজ করে। শ্রমিকরা ভাটায় খুপরি ঘরে বসবাস করেন।

গত বুধবার দুপুরে কারিকর ইলিয়াস শিশু কন্যাকে মিষ্টি খাওয়ানোর কথা বলে তার ঘরে ডেকে নেয়। ওই ঘরে নিয়ে শিশু কন্যাকে ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ করেন শিশু কন্যার মা। শিশুর ডাক চিৎকারে শিশুর মাসহ স্থানীয়রা ছুটে যান।

পরে ওই শিশুটিকে ইটভাটার সরদার মো. নুর আলম গাজীপুর বন্দরের স্থানীয় চিকিৎসক মো. জসিম উদ্দিনের কাছে নিয়ে যান।

পল্লী চিকিৎসক মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ইটভাটার সরদার মো. নুর আলম শিশু কন্যা গাছ থেকে পড়ে গোপনাঙ্গে ব্যথা পেয়েছে মর্মে চিকিৎসা নিতে আসেন। কিন্তু ওই শিশুর গোপনাঙ্গে ফুলা জখম দেখে চিকিৎসা দিয়েছেন বলে জানান তিনি। ঘটনার পর থেকে বখাটে ইলিয়াস পলাতক রয়েছে। এ ঘটনার খবরে ইটভাটা শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। তারা এ ঘটনার শাস্তি দাবি করেছেন।

এদিকে এ ঘটনাকে ধামাচাপা দেয়ার জন্য ইটভাটার ম্যানেজার মো. মোজাম্মেল হাওলাদার ও সরদার মো. নুর আলম উঠেপড়ে লেগেছেন। আলামত নষ্ট ও ঘটনা ধামাচাপা দিতে তারা শিশু কন্যার বাবা ও মাকে ঘটনার পরপর ইটভাটায় আটকে রেখেছেন বলে অভিযোগ করেন শিশুর কন্যার বাবা।

পাঁচ দিন পরে ওই শিশুকে নিয়ে তার মা ও বাবা ইটভাটা থেকে পালিয়ে যায়। সোমবার দুপুরে শিশুটিকে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

ওই হাসপাতালের নারী চিকিৎসক মোসা. তারান্নুম মাহজাবিন শিশুটির শারীরিক পরীক্ষা করেছেন। অধিকতর পরীক্ষার জন্য শিশুটিকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) পাঠানো হয়েছে বলে তিনি জানান।

স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. মোস্তাফা হাওলাদার বলেন, শিশুটিকে ধর্ষণের ঘটনায় সরদার নুর আলম সালিশ ব্যবস্থা করে মীমাংসা করে দেয়ার কথা শুনেছি।

শিশু কন্যার বাবা বলেন, ধর্ষণের আলামত নষ্ট ও ঘটনা ধামাচাপা দিতে ইটভাটার ম্যানেজার মোফাজ্জেল হাওলাদার ও সরদার মো. নুর আলম আমাদের আটকে রেখেছেন। পাঁচদিন পর ওই ইটভাটা থেকে পালিয়ে এসেছি।

ইটভাটার সরদার মো. নুর আলম শিশুটির বাবা মাকে আটকে রাখার কথা অস্বীকার করে বলেন, শিশুটিকে আমি চিকিৎসা করিয়েছি।

ইটভাটার ম্যানেজার মো. মোফাজ্জেল হাওলাদার বখাটে ইলিয়াসের পক্ষে সাফাই গেয়ে বলেন, এমন কোনো ঘটনা বাস্তবে ঘটেনি। তবে লোকমুখে শুনেছি।

ইটভাটার মালিক মো. মধু প্যাদা বলেন, এমন একটি ঘটনার কথা শুনেছি। সাড়ে তিন বছরের একজন শিশু কন্যার সঙ্গে এমন ঘটনায় তদন্ত সাপেক্ষে শাস্তি দাবি করেন তিনি।

আমতলী থানার ওসি মো. শাহ আলম হাওলাদার বলেন, বিষয়টি শুনে হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।


আরো নিউজ
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: JPHOSTBD