কুয়াকাটা হাসপাতালে পর্যটকরা পাচ্ছে না কাঙ্খিত সেবা।

রিয়াজ মাহমুদ, পটুয়াখালী প্রতিনিধি
দক্ষিণ বাংলা শুক্রবার, ২৭ আগস্ট, ২০২১

পটুয়াখালীর কুয়াকাটা ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে দীর্ঘদিন চিকিৎসক সংকট ও জনবল না থাকায় জোড়াতালি দিয়ে চলছে এ হাসপাতালটি। দীর্ঘদিন ধরে রয়েছে ডাক্তার সংকট। কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে চার ইউনিয়নের প্রায় দুই লক্ষ মানুষসহ প্রতিদিন কুয়াকাটা আগত পর্যটকরা।তবে চিকিৎসক ও জনবল সংকটের কথা উপর মহলে একাধিক বার জানানো হলেও আজও সমাধান মেলেনি বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

জানা যায়,কুয়াকাটাসহ উপকূলীয় ইউনিয়ন মহিপুর, লতাচাপলী, ধুলাসর ও ডালবুগঞ্জের প্রায় দুই লক্ষাধিক মানুষসহ কুয়াকাটায় আগত পর্যটকদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে কুয়াকাটার অদুরে তুলাতলীতে গড়ে তোলা হয় ২০ শয্যা বিশিস্ট হাসপাতাল। দৃষ্টিনন্দন ভবনসহ আধুনিক চিকিৎসা উপকরন দিয়ে সজ্জিত করে ২০১২ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি এর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নিয়োগ দেয়া হয় পর্যাপ্ত চিকিৎসকসহ জনবল। কিন্তু উদ্বোধনের কিছুদিন যেতে না যেতেই দেখা দেয় চিকিৎসক ও জনবল সংকট। সেই সংকটের রেশ এখনো কাটেনি। ফলে চিকিৎসা নিতে এসে যথাযথ চিকিৎসাসেবা ছাড়াই ফিরে যাচ্ছে চার ইউনিয়নের প্রায় দুই লক্ষ মানুষসহ আগত পর্যটকরা।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, কাগজে কলমে ছয়জন ডাক্তার, ছয়জন নার্স, দু’জন ওয়ার্ড বয়, একজন করে এমএলএ ঝাড়ু–দার, মালি, মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট, ল্যাব সহকারি, ফার্মাসিস্ট, অফিস সহকারি, কুক থাকার কথা রয়েছে। কিন্তু বর্তমানে এখানে কর্মরত আছে একজন চিকিৎসক,ছয়জন নার্স। একজন অফিস সহকারী,মালি, মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট, ল্যাব সহকারী, ফার্মাসিস্টসহ চিকিৎসকের পাঁচটি পদ রয়েছে শুন্য।নেই কোনো নিরাপত্তা কর্মী
ফলে নার্সরা নিরাপত্তা সংকটে রাত্রীকালীন এমার্জেন্সি চিকিৎসা সেবা প্রদান রয়েছে বন্ধ।

স্থানীয়রা জানান,জরুরী প্রয়োজনে হাসপাতালের ইনডোর ও আউটডোর চিকিৎসা সেবা পাওয়া যাচ্ছেনা। হাসপাতালে নেই কোনো এম্বুলেন্স ফলে বাধ্য হয়েই ২২ কিলোমিটার দুরে কলাপাড়া সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। আর এতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়ছে গর্ভবর্তী মা ও শিশুরা সহ আগত পর্যটকরা।

স্থানীয় বাসিন্দা হাবিব রহমান বলেন,‘আমাদের এই হাসপাতালে ডাক্তার ও নাই নার্স ও নাই। একটি এম্বুলেন্স ও নাই‌।করোনা ভাইরাসের এই সময়ে ও আমাদের চিকিৎসা সেবা নিতে ২২ কিলোমিটার দূরে কলাপাড়া যেতে হয়।আমরা করুন দশার মধ্যে আছি।এই সমস্যা দেখার কেউ নেই।’

ট্যুর অপারেটরস এসোসিয়েসন অব কুয়াকাটার সভাপতি রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন,‘হাসপাতালের অবস্থা খুবই খারাপ।আমরা এ নিয়ে কথা বলে এ সংকট ও সংকট এটা একরকমের ধাপ্পাবাজি। আমরা ট্যুর অপারেটরস এসোসিয়েসন অব কুয়াকাটার পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিবো।’

কুয়াকাটা ২০ শয্যা হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডাঃমাহামুদুল হাসান বলেন,‘হাসপাতালের চিকিৎসক সংকটের কথা উপর মহলে একাধিক বার জানিয়েছি‌। একটি ২০ শয্যা হাসপাতাল চালানোর জন্য ৬ জন ডাক্তার দরকার। সেখানে মাত্র আমি একা।মানুষ কিভাবে কাঙ্খিত সেবা আশা করে‌ আমি বুঝতে পারছি না।গত (১আগষ্ট) আমি করোনা পজেটিভ হয়েছি ২৮ দিনের ছুটিতে আছি। আমি ছুটিতে থাকায় বর্তমানে কলাপাড়া থেকে একজন চিকিৎসক দেয়া হয়েছে।’

কলাপাড়ায উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ চিন্ময় হালদার বলেন,‘চিকিৎসক ও জনবল সংকটের কথা উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে। এছাড়া মেডিকেল অফিসার করোনা পজিটিভ হওয়ায় ওখানে একজন চিকিৎসক দেয়া হয়েছে।’


আরো নিউজ
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: JPHOSTBD