কোস্টগার্ডের জাহাজে ঢিল নিক্ষেপ, গ্রামে ঢুকে লাঠিপেটার অভিযোগ

নিউজ ডেস্ক
দক্ষিণ বাংলা সোমবার, ১১ অক্টোবর, ২০২১
কোস্টগার্ডের জাহাজে ঢিল নিক্ষেপ, গ্রামে ঢুকে লাঠিপেটার অভিযোগ

মা ইলিশ রক্ষা অভিযান চলাকালে জাহাজে ঢিল ছোড়াকে কেন্দ্র করে গ্রামে ঢুকে গণহারে লাঠিপেটার অভিযোগ উঠেছে কোস্টগার্ডের বিরুদ্ধে। পিটুনিতে অন্তঃসত্ত্বা এক গৃহবধূ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। সোমবার (১১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় বরিশালের হিজলা উপজেলার বাউশিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। যদিও কোস্টগার্ড ও পুলিশ এমন কোনো ঘটনার দায় স্বীকার করেনি।

স্থানীয়রা জানান, বাউশিয়া গ্রাম সংলগ্ন নদীতে নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও সিন্ডিকেট করে ছোট ছোট নৌকায় ইলিশ ধরে আসছিল জেলেরা। খবর পেয়ে সোমবার বিকেলে কোস্টগার্ডের জাহাজ মেঘনা নদীর বাউশিয়া পয়েন্টে পৌঁছালে গ্রামের কয়েকজন উচ্ছৃঙ্খল লোক জাহাজ লক্ষ্য করে ঢিল ছোড়ে। এ ঘটনায় সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে কোস্টগার্ড সদস্যরা গ্রামের ভেতর ঢুকে নারী-পুরুষদের নির্বিচারে লাঠিপেটা করেন। এ সময়ে শাহাবুদ্দিন ঘরামি নামে এক জেলেকে আটক করে নিয়ে যায় কোস্টগার্ড। আহত হন ওই গ্রামের বাচ্চু ঘরামি, মাহবুব বগাসহ কয়েকজন। লাঠিপেটায় ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ ফারজানা বেগম (২০) গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

আহত গৃহবধূ ফারজানা বেগম জানান, সন্ধ্যায় স্বামীর বাড়ি মুলাদী থেকে তিনি হিজলার বাউশিয়া গ্রামে বাবার বাড়িতে এসেছেন। ঘরে ঢোকার কয়েক মিনিটের মধ্যে কোস্টগার্ড সদস্যরা ঘরে ঢুকে তার হাত ধরে টানতে টানতে রাস্তায় নিয়ে যান। কোস্টগার্ড সদস্যরা তার পিঠে আঘাত করেন। কোস্টগার্ড সদস্যদের পিটুনিতে অজ্ঞান হয়ে পড়েন তিনি। পরে স্বজনরা তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন।

যদিও হিজলা উপজেলায় দয়িত্বরত কোস্টগার্ড জাহাজের কন্টিজেন্ট কমান্ডার মো. হামিদ দাবি করেছেন, যে সব গ্রামবাসী ঢিল ছুড়েছিল তাদের ধাওয়া করে নদীর তীর থেকে তাড়িয়ে দেয়া হয়। কোস্টগার্ডের সদস্যরা কারও বাড়িতে ঢোকেনি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ সদস্যরাও গিয়েছিলেন।

তিনি আরও বলেন, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মেঘনা নদীর বাউশিয়া পয়েন্টে জেলেরা ইলিশ ধরছিল। খবর পেয়ে কোস্টগার্ডের জাহাজ সেখানে উপস্থিত হলে জেলেরা জাহাজের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। বড়জালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) ঝন্টু হাওলাদার বলেন, গ্রামের লোকজন আমাকে জানিয়েছেন কোস্টগার্ড সদস্যরা বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে নারী-পুরুষদের মারধর করেছেন।

হিজলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইউনুস বলেন, এ ধরনের কোনো ঘটনা আমার জানা নেই। হিজলা থানা পুলিশও সেখানে যায়নি। মা ইলিশ রক্ষায় নৌপুলিশসহ পুলিশের একাধিক টিম মাঠে রয়েছে। তাদের মধ্যে কেউ ঘটনাস্থলে যেতে পারেন। প্রসঙ্গত, মা ইলিশের প্রজনন নিরাপদ করতে ৪ অক্টোবর থেকে ইলিশ নিধনে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে। যা শেষ হবে আগামী ২৫ অক্টোবর।


আরো নিউজ
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: JPHOSTBD