গাড়ি না থাকায় রোগীর অ্যাম্বুলেন্সেই যাতায়াত করেন শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক

নিজস্ব প্রতিবেদক
দক্ষিণ বাংলা বুধবার, ২১ এপ্রিল, ২০২১

বরাদ্দকৃত গাড়ি না থাকায় রোগীর অ্যাম্বুলেন্সে যাতায়াত করতে হচ্ছে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের পরিচালককে।

এজন্য নির্ধারিত একটি অ্যাম্বুলেন্সই বসিয়ে রাখা হয় পরিচালকের জন্য। যদিও পরিচালক দাবি করেছেন, অ্যাম্বুলেন্সটি সবসময় আটকে রাখা হচ্ছে এমনটি নয়, যখন জরুরী প্রয়োজনে তাকে কোন কাজে বের হতে হয় তখনই তিনি সেটি ব্যবহার করে থাকেন।

যদিও ওই অ্যাম্বুলেন্সটি ছাড়া পরিচালক বা তার নীচে থাকা গুরুত্বপূর্ণ পদের কর্মকর্তাদের আনা-নেয়ার জন্য আলাদা কোন যানবাহনই নেই এই হাসপাতালটির।সেটি হোক না কেন একটি রিক্সা, বাইসাইকেল কিংবা মোটরসাইকেল অথবা ভাঙ্গাচোরা কোন মাইক্রোবাস।

হাসপাতালের প্রশাসনিক শাখা সূত্রে জানাগেছে, দেড়যুগ আগে থেকে হাসপাতালের পরিচালকের জন্য থাকা নীল রংয়ের একটি গাড়ি বিকল হয়ে যায়। যেটি আজ অব্দি হাসপাতালের পরিচালক কার্যালয়ের পাশে থাকা শেডে পরে রয়েছে। আর এতসময় পরে থাকায় সেটি মেরামত দুস্কর ও ব্যয় সাপেক্ষ ব্যাপার। এটি বিকল হয়ে যাওয়ার কয়েকবছর পর তৎকালীন নার্সিং ইনস্টিটিউটের (বর্তমান নার্সিং কলেজ) অধ্যক্ষের জন্য বরাদ্দকৃত একটি মাইক্রোবাস টাইপের গাড়ি হাসপাতালের পরিচালক, উপ-পরিচালকসহ কর্মকর্তারা ব্যবহার করতেন। কারণ সেটি নার্সিং ইনস্টিটিউট এর কেউ ব্যবহার করতো না। যদিও কয়েকবছর আগে সেটিকেও নিয়ে যায় নার্সিং অধিদপ্তর এরপর থেকে হাসপাতাল প্রশাসন পুরোপুরি যানবাহন শূণ্য হয়ে পরে।

অথচ অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী হাসপাতাল পরিচালকের জন্য পদমর্যাদা অনুযায়ী একটি গাড়ি, উপ-পরিচালকের জন্য একটি প্রাইভেট কার ও সহকারী পরিচালকদের জন্য একটি মাইক্রোবাস থাকার কথা হাজার শয্যার এ হাসপাতালটিতে।

এদিকে প্রশাসনিক শাখা যানবাহন শূণ্য হয়ে পরায়, উপায়ন্ত না দেখে পেয়ে হাসপাতালের চারটি অ্যাম্বুলেন্সের একটি হাসপাতালের পরিচালককে আনা-নেয়াসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক কাজের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে হাসপাতাল পরিচালক ডাঃ এইচ এম সাইফুল ইসলাম জানান, বিগত সময় থেকেই অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী গাড়ির জন্য কর্তৃপক্ষ বরাবর চিঠি চালাচালি করা হচ্ছে। তবে এ অব্দি হাসপাতাল পরিচালকসহ কারো জন্য কোন যানবাহন বরাদ্দ পায়নি এ হাসপাতালটি। তবে হাসপাতালের চারটি অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে প্রশাসনিক কর্মকান্ড পরিচালনার জন্য তিনি বাধ্য হয়ে একটি অ্যাম্বুলেন্সে যাতায়াত করছেন। আর সেই অ্যাম্বুলেন্সটি যখন রোগীদের জন্য প্রয়োজন হয়, তখন সেটি সে কাজেও ব্যবহার করা হয়।

এদিকে দক্ষিনবঙ্গের আস্থারস্থল হিসেবে ক্ষ্যাত এ হাসপাতালটিতে প্রশাসনিক কাজ পরিচালনার জন্য আলাদা কোন যানবাহন না থাকায় হতাশ চিকিৎসক সমাজ। চিকিৎসক নেতারা বলছেন, পরিচালকসহ প্রশাসনিক পদের কর্মকর্তাদের কিংবা সিনিয়র চিকিৎসকদের যে কোন সময় যে কোন প্রয়োজন হাসপাতালে আসতে হয়, আবার গুরুত্বপূর্ণ সভা বা বৈঠকেও যেতে হয়। সেখানে যানবাহন না থাকায় রিক্সায় চরে যাওয়া ছাড়া কর্মকর্তাদের আর কোন উপায় থাকে না। এতে যেমন কালক্ষেপন হয়, তেমনি আবার নিরাপত্তা ঝুঁকিও থাকে। যেমন এ হাসপাতালের যে আয় হয়, সেই টাকাও তো রিক্সায় বহন করতে হয় ঝুঁকি নিয়ে। আর একজন পরিচালকের অ্যাম্বুলেন্সে যাতায়াতের দৃশ্যও বিরল তাই দ্রুত এ হাসপাতালের জন্য প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য যানবাহন বরাদ্দ দেয়ার দাবি জানান তারা।


আরো নিউজ
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: JPHOSTBD