জেলে থাকা স্বামীর মাদক সাম্রাজ্য চলত এমার ইশারায়

ডেস্ক রিপোর্ট
দক্ষিণ বাংলা বুধবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
জেলে থাকা স্বামীর মাদক সাম্রাজ্য চলত এমার ইশারায়

মেক্সিকোর মাদক সম্রাট জোয়াকিন এল চাপো গুজম্যানের স্ত্রী এমা গত মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেফতার হয়েছেন। একদিন পরে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আদালতে হাজিরও করা হয়েছে তাকে। এমার বিরুদ্ধে ভয়ঙ্কর সব মাদক পাচারে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো বলছে, তার প্রভাব ও কর্মকাণ্ডের সীমা আরও বিস্তৃত।

পুরো নাম এমা করোনেল এইসপুরো। মাত্র ৩১ বছর বয়সেই মেক্সিকোর সবচেয়ে বড় মাদক পাচারকারী গোষ্ঠী ‘সিনালোয়া কার্টেল’-এর সর্বেসর্বা হয়ে উঠেছেন। অবশ্য এর পেছনে হাত রয়েছে তার স্বামী মাদক সম্রাট এল চাপো গুজম্যানের।

৬৩ বছর বয়সী গুজম্যান বর্তমানে মাদক ও অর্থ পাচারের দায়ে নিউইয়র্কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগ করছেন। জব্দ করা হয়েছে তার ১২শ’ কোটি ডলারের বিপুল সম্পত্তি। মাদক সম্রাট হওয়ার পথে মাত্র ১৩ বছর বয়স থেকেই ধর্ষণ এবং প্রতিযোগীদের ঠাণ্ডা মাথায় হত্যা শুরু করেন তিনি।

২০০৭ সালে একটি সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় এমার দিকে নজর পড়ে তার তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি বয়সী গুজম্যানের। পরে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় তাদের। সংসারে দু’টি যমজ সন্তান রয়েছে এ দম্পতির।

সুন্দরী এমা শুধু গুজম্যানের সংসারেই নয়, ব্যবসাতেও গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে ওঠেন। তিনি ২০১৫ সালে মেক্সিকোর কারাগার থেকে স্বামীকে পালাতে সহায়তা করেছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

জানা যায়, মেক্সিকোর সর্বাধিক সুরক্ষিত কারাগার আলতিপ্লানো থেকে পালিয়েছিলেন গুজম্যান। তার ছেলে কারাগারের পাশে একটি জায়গা কিনেছিল এবং কারাগার থেকে চুরি করা একটি জিপিএস ঘড়ির মাধ্যমে টানেল খননকারীরা গুজম্যানের প্রকৃত অবস্থান নিশ্চিত করে। বিশেষভাবে তৈরি একটি মোটরসাইকেলে করে টানেল দিয়ে কারাগার থেকে পালিয়ে যান গুজম্যান।

আর এই ঘটনায় বড় ভূমিকা ছিল স্ত্রী এমার। তিনিই কার্টেলের সদস্যদের কাছে গুজম্যানের বার্তা পৌঁছাতেন এবং পরিস্থিতিবিশেষ প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিতেন।

অবশ্য এমার কাছে তার স্বামী মোটেও খারাপ মানুষ নন। বরং গুজম্যানকে তিনি খুবই ‘বিনয়ী মানুষ’ হিসেবে উল্লেখ করেন, যাকে গণমাধ্যমগুলোই ‘অতিরিক্ত বিখ্যাত’ করে তুলেছে।

২০১৮ সালে নিউইয়র্কে স্বামীর বিচারের শুনানিতে প্রতিটা দিনই আদালতে হাজির হয়েছেন এমা করোনেল। চোখে সানগ্লাস আর মুখে চুয়িংগাম থাকা এ রমণী সহজেই দৃষ্টি কাড়তেন সবার। টেলিভিশনের বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও স্বাচ্ছন্দ্য অংশগ্রহণ ছিল তার।

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় জন্ম নেওয়া এমা বড় হয়েছেন মেক্সিকোর ক্যানেলাস গ্রামে। সেখানেই গুজম্যানের সঙ্গে প্রথম দেখা হয় তার।

ওয়াশিংটন ডিসির জেলা আদালতে এফবিআইয়ের স্পেশাল এজেন্ট এরিক ম্যাকগুয়েরের একটি হলফনামায় বলা হয়েছে, কিশোরী এমা অবশ্যই জানতেন তিনি কাকে বিয়ে করতে চলেছেন। তার বাবা ইনেস করোনেল ব্যারেরাস সিনালোয়া কার্টেলের মধ্যম সারির সদস্য ছিলেন, তার ভাইও এদের সঙ্গে কাজ করতেন।

গত মঙ্গলবার ওয়াশিংটনের ডুলেস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করা হয় এমা করোনেলকে। বলা হচ্ছে, তিনি জেনেশুনেই হেরোইন, কোকেন, মারিজুয়ানা ও মেথামফেটামাইন পাচার করেছেন।

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান


আরো নিউজ
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: JPHOSTBD