টুঙ্গিপাড়ায় নয় ছয় করে ওয়ারিশান সনদ দিলেন চেয়ারম্যান

শাহীন মুন্সী, গোপালগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি
দক্ষিণ বাংলা সোমবার, ১১ অক্টোবর, ২০২১
টুঙ্গিপাড়ায় নয় ছয় করে ওয়ারিশান সনদ দিলেন চেয়ারম্যান

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় নয় ছয় করে ৪ ভাই বোনকে বাদ দিয়ে এক ভাইকে ওয়ারিশান সনদপত্র দেয়ার অভিযোগ উঠেছে গোপালপুর ইউপি চেয়ারম্যান সুশেন সেন ও ইউপি সদস্য গৌতম মন্ডলের বিরুদ্ধে। এঘটনা এলাকায় জানাজানি হওয়ার পর আলোচনা সমালোচনা শুরু হয়েছে। অপরদিকে নয় ছয় করে ওয়ারিশান সনদ পাওয়া নিরোদ বালা প্রায় ৫০ লক্ষ টাকার জমি বিক্রি করে ভারত চলে গেছে বলে জানিয়েছেন স্বজনেরা। নিরোদ বালা টুঙ্গিপাড়া উপজেলার গোপালপুর গ্রামের মৃত খগেন্দ্রনাথ বালার ছেলে।

নিরোদ বালার আপন কাকাতো ভাই বঙ্কিম বালা বলেন, আমার কাকা মৃত খগেন্দ্রনাথ বালার পরিমল, নিরোদ, উৎপল বালা সহ ৩ ছেলে ও রিনা ও সুবাসিনী বালা নামের ২ মেয়ে রয়েছে। সুবাসিনীর ভারতে বিয়ে হলেও রিনা টুঙ্গিপাড়ার গোপালপুর গ্রামে বসবাস করে। আর বাকি দুই ছেলে পরিমল ও উৎপল তারা ২০১০ সালে ভারত চলে যায়। কিন্তু নিরোদ বালা গ্রামেই থাকতো। কিন্তু করোনা মহামারীর শুরুর দিকে বংশের কাউকে না জানিয়ে কাকাতো ভাই নিরোদ বালা গোপনে বাংলাদেশ থেকে ভারত পালিয়ে গেছে। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি চেয়ারম্যান মেম্বরের সহযোগীতায় জালিয়াতি করে বাকী ভাই- বোনদের ঠকিয়ে দেশের জমিজমা বিক্রি করে সে চলে গিয়েছে। কিন্তু বাকি দুুুই ভাইকে ছাড়া নিরোদ কিভাবে সম্পত্তি বিক্রি করলো এই কথাই পরিবারে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়। পরে জানতে পারি মেম্বার ও চেয়ারম্যান নিরোদ বালা খগেন্দ্রনাথ বালার এক ছেলে হিসাবে একটি ওয়ারিশান সনদ দিয়েছে। সেই ওয়ারিশান পেয়ে নিরোদ গ্রামের জমিজমা বিক্রি করে ভারত চলে গেছে।

খগেন্দ্রনাথ বালার বাকি দুই ছেলে জীবিত আছে কিনা সে বিষয়ে জানতে পরিমল বালার ছেলে প্রদ্যুৎ বালার ভারতীয় মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তার বাবা পরিমল ও উৎপল জীবিত আছে। প্রায় ১ বছর আগে তার কাকা নিরোদ বালা দেশের জমিজমা বিক্রি করা প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা নিয়ে ভারতে চলে এসেছে বলে শুনেছেন। কিন্তু নিরোদ বালা ভারতে আসার পর তাদের সাথে দেখা করেনি।

তিনি আরো বলেন, মেম্বার ও চেয়ারম্যান তো বাইরের লোক হয়না। স্থানীয় লোকেরাই হয়। ওখানে আমাদের বংশের অনেক লোক রয়েছে তাদের কাছে যাচাই না করে মেম্বার চেয়ারম্যান কিভাবে ওয়ারিশ সনদ দেয়?

নাম না প্রকাশের শর্তে গোপালপুর ইউনিয়নের এক ইউপি সদস্য বলেন, মেম্বার গৌতম ও সুশেন চেয়ারম্যান মোটা অংকের টাকা খেয়ে নিরোদ বালাকে একমাত্র ছেলে হিসাবে ওয়ারিশান সনদ দিয়েছে। কারন নিরোদের ভাইয়েরা ভারতে স্থায়ীভাবে বসবাস করছে মেম্বার ও চেয়ারম্যান ভালো করে জানে। আর খগেন্দ্রনাথের মেয়ে রিনা বালার বিয়ে হয়েছে চেয়ারম্যান সুশেন সেনের বংশের ছেলের সাথে। তাহলে চেয়ারম্যান কিভাবে ওয়ারিশান সনদ দেয় বুঝে নেন।

এবিষয়ে ইউপি সদস্য গৌতম মন্ডলের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে ওয়ারিশান সনদের বিষয়ে জানতে চাইলে ক্ষেপে গিয়ে বলেন, খগেন্দ্রনাথ বালার একমাত্র ছেলে নিরোদ বালা। তাই তাকে ওয়ারিশান সনদ দেয়া হয়েছে। যদি তার কোন ভাই থাকে তাহলে তাকে হাজির করেন।

গোপালপুর ইউপি চেয়ারম্যান সুশেন সেন। বলেন খগেন্দ্রনাথ বালার অন্য ছেলেরা থাকলেও বর্তমানে নিরোদ বালা ছাড়া। কেউই দেশে থাকেনা।


আরো নিউজ
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: JPHOSTBD