ট্রাকে ছুটছে ঘরমুখী মানুষ, উঠলেই ভাড়া ৫০০

ডেস্ক রিপোর্ট
দক্ষিণ বাংলা সোমবার, ১০ মে, ২০২১
ট্রাকে ছুটছে ঘরমুখী মানুষ, উঠলেই ভাড়া ৫০০

করোনা পরিস্থিতি ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় ঈদকে সামনে রেখে সরকারের বিধিনিষেধে দূরপাল্লার বাস বন্ধ রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ঈদ করতে বাড়িতে যাওয়া মানুষদের বাহন হয়েছে ট্রাক। ট্রাকে উঠলেই জনপ্রতি ভাড়া গুনতে হচ্ছে ৫০০ টাকা।

রোববার (৯ মে) দিনগত রাতে রাজধানীর আমিনবাজার এলাকায় এমন চিত্র দেখা গেছে। এর আগে করোনাভাইরাস সংক্রমণে প্রাণহানি এড়াতে ঈদ সামনে রেখে মানুষকে ঢাকা ছাড়তে নিরুৎসাহিত করা হলেও শনিবার থেকে ফেরি ঘাটে দেখা গেছে ঘরমুখো মানুষের ঢল।

রোববার ভোর থেকে সরকার বাধ্য হয়ে মানুষের ঢল ঠেকাতে ফেরিঘাটে বিজিবি পর্যন্ত মোতায়েন করেছে। কিন্তু সরকারের বিজিবি মোতায়েনেও ঈদে ঘরে ফেরা মানুষকে ঠেকানো যাচ্ছে না। মানুষ ঠেকাতে সরকারের সব পরিকল্পনাই নস্যাৎ করে দিচ্ছে ঘরমুখী মানুষ।

রোববার রাতে সরেজমিনে দেখা গেছে, বগুড়া থেকে কাঁচামাল নিয়ে শামীম নামের এক ট্রাকচালক ঢাকায় এসেছেন। যাওয়ার পথে খালি গাড়ি না নিয়ে আমিনবাজার ব্রিজের কাছে ট্রাকটি দাঁড় করিয়ে বগুড়ার যাত্রীদের ডাকছেন। মুহূর্তেই ৪০ জন যাত্রী ট্রাকে ওঠেন। ট্রাকে করে গন্তব্যে পৌঁছে দিতে যাত্রীদের কাছ থেকে জনপ্রতি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ৫০০ টাকা।

ট্রাকচালক শামীম বলেন, ফাঁকা গাড়ি নিয়ে লাভ কী? ৪০ জন যাত্রী নিয়েছি। এখানে আমার ২০ হাজার টাকা ইনকাম হবে। এই টাকাটা আমার পকেটেই থাকবে। মালিককে এই টাকার ভাগ দিতে হবে না। বাস যেহেতু চলছে না, সেহেতু যাত্রী নিলে লোকগুলোও গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবে, আবার আমারও ভালো কিছু টাকা আয় হলো।

তিনি বলেন, রাত হওয়াতে রাস্তায় পুলিশের কোনো ঝামেলা নেই। তবে সামনে এক জায়গায় ঝামেলা হতে পারে। ওখানে কিছু টাকা দিলে গাড়ি আটকাবে না।

লিয়াকত নামের একজন যাত্রী শামীমের ট্রাকে করেই বগুড়া যাচ্ছেন। তিনি বলেন, এরকম লকডাউন দিয়ে লাভ কী? পরিবহন চললে দুই সিটে একজন বসে যেতে পারতাম। তাহলে অন্তত স্বাস্থ্যবিধিটা ঠিক থাকত। আর এখন তো স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা নেই। যে যেভাবে পারছে, সেভাবে যাচ্ছে। সরকার তো আটকাতে পারছে না। সরকার সাধারণ জনগণের সাথে ফাজলামি শুরু করছে।

তিনি বলেন, এর আগে কখনও ট্রাকে যাইনি। কিন্তু আজ বাধ্য হয়ে যাচ্ছি। কারণ, মাইক্রোবাসে ভাড়া বেশি আর ট্রাকে তার অর্ধেক। যেভাবেই হোক বাড়িতে যেতে পারলেই হবে।
ঘরমুখী যাত্রীদের অপেক্ষা

সরেজমিনে আরও দেখা গেছে, গার্মেন্টসের স্টাফ বাসের ব্যানার লাগিয়ে পাটুরিয়া পর্যন্ত যাত্রী নেওয়া হচ্ছে। এই বাসেও যাত্রীদের কাছ থেকে জনপ্রতি ৩০০ টাকা করে ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। একটি ব্রিজের ব্যবধানেই বর্তমানে গাবতলীর চেয়ে আমিনবাজার যাত্রীদের আনাগোনায় বেশি জমজমাট। কিন্তু অন্যান্য যেকোনো সময়ে এ চিত্রটি ভিন্ন হয়। সবসময়ই ঈদের আগে গাবতলী বাস টার্মিনাল দিনরাত যাত্রীদের চাপে জমজমাট থাকে। কিন্তু এবার গাবতলী বাস টার্মিনাল জনশূন্য হলেও রাত যত গভীর হচ্ছে আমিনবাজারে তত যাত্রীর ভিড় দেখা গেছে।

এদিকে ফেরিতে মানুষের ঢল থামাতে বিজিবি মোতায়েন করা হলেও মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়ায় বাড়িফেরা মানুষদের ঢল থামাতে ব্যর্থ হয়েছে প্রশাসন। বিজিবির বাধা সত্ত্বেও জোর করে ফেরিতে উঠেছে যাত্রীরা। শিমুলিয়া ঘাট থেকে রোববার সকাল ১০টার দিকে প্রায় দুই হাজার যাত্রী নিয়ে ছেড়ে যায় ফেরি শাহপরাণ। এর আগে ১১টি অ্যাম্বুলেন্স ও কিছু যাত্রী নিয়ে ছেড়ে যায় ফেরি ফরিদপুর। তবে রোববার সকালের দিকে মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার পাটুরিয়া ফেরিঘাট এলাকায় ঘরমুখো যাত্রীদের তেমন একটা চাপ দেখা না গেলেও দুপুরের পর থেকে চাপ বেড়েছে।


আরো নিউজ
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: JPHOSTBD