দ্বিতীয় পর্যায় মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘর পেলো আগৈলঝাড়ার ১৫টি পরিবার

এস এম শামীম, আগৈলঝাড়া
দক্ষিণ বাংলা রবিবার, ২০ জুন, ২০২১

মুজিববর্ষ উপলক্ষে দ্বিতীয় পর্যায় বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার ১৫টি ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবার পেলো মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া ঘর। গতকাল রোববার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপকারভোগী পরিবারের নিকট এসব ঘর হস্তান্তর কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন করেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে আগৈলঝাড়া উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে উপজেলা পরিষদ হলরুমে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ আবুল হাশেম এর সভাপতিত্বে উপজেলার ভূমিহীন ১৫টি পরিবারের মাঝে গৃহের চাবি ও জমির কাগজপত্র বিতরণ সভায় বক্তব্য রাখেন, উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রইচ সেরনিয়াবাত, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফারিহা তানজিন। এসময় উপস্থিত ছিলেন, ডেপুটি কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা আবু তাহের মিয়া, মুক্তিযোদ্ধা বখতিয়ার শিকদার, মেডিকেল অফিসার ডাঃ সৈকত জয়ধর, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ মোশাররফ হোসাইন, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা দৌলাতুন নেছা নাজমা, রাজিহার ইউপি চেয়ারম্যান ইলিয়াস তালুকদার, বাকাল ইউপি চেয়ারম্যান বিপুল দাস, রত্নপুর ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা সরদার, গৈলা ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম টিটু, আগৈলঝাড়া প্রেসক্লাব সভাপতি সরদার হারুন রানাসহ বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তারা।
‘আশ্রয়নের অধিকার, শেখ হাসিনার উপহার’ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে নির্মিত হয় এসব ঘর। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা গেছে, মুজিববর্ষ উপলে দ্বিতীয় পর্যায় উপজেলার তিনটি ইউনিয়নে গৃহ ও ভূমিহীন ১৫ পরিবারের মাঝে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে এই ঘর। দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দকৃত ২০২০-২১ অর্থ বছরের আওতায় একটি ঘরের জন্য মোট ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। এসব ঘরে দুইটি ক, বারান্দা, রান্নাঘরসহ সকল ধরনের সুযোগ-সুবিধা থাকছে। ঘরগুলো নির্মাণে সার্বিক তদারকি করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানগণ। গৃহ ও ভূমিহীনদের জন্য সরকারি খাস জায়গায় দ্বিতীয় পর্যায় উপজেলার ৩টি ইউনিয়নে ১৫জন ভূমিহীনদের বাচাই করে তাদের জন্য ঘর নির্মাণ করে দিচ্ছে সরকার। এর মধ্যে দ্বিতীয় পর্যায় গৈলা ইউনিয়নে ২টি, রাজিহার ইউনিয়নে ১টি, রত্নপুর ইউনিয়নে ১২টিসহ মোট ১৫টি ঘর নির্মিত হয়েছে।
উপজেলার রত্নপুর ইউনিয়নের রত্নপুর গ্রামের ভূমিহীন নাছির হাওলাদার বলেন, ‘দীর্ঘদিন পরের বাড়িতে থেকেছি। প্রধানমন্ত্রী জায়গাসহ ঘর দিয়েছেন। এতে আমি খুবই খুশি। ছেলে মেয়েদের নিয়ে পাকা ঘরে থাকতে পারব।’ একই গ্রামের বেল্লাল চৌকিদার বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ঘর উপহার দিচ্ছেন এতে আমরা খুবই আনন্দিত। অন্যের বাড়িতে ছেলে মেয়ে নিয়ে কষ্ট করে থেকেছি। এখন শান্তিতে থাকতে পারব। প্রধানমন্ত্রীর জন্য আমি দুই হাত তুলে সৃষ্টিকর্তার কাছে দোয়া করি।’ সুফলভোগী অনেকেই জানান, জীবনের এই দীর্ঘ সময়েও তারা এক টুকরো জমি বা একটি বাড়ি করা তো দূরের কথা দৈনন্দিন শ্রম বিক্রি করে সেই অর্থে কোন রকমে সংসার চালিয়ে খেয়ে বেঁচে আছেন। যেখানে কোন রকমে বেঁচে থাকার স্বপ্ন নিয়ে থাকতেন, সেখানে সরকার আমাদের নামে জমি দলিল দিয়ে সেখানে পাকা বাড়ি নির্মাণ করে দিয়েছেন; যা এখনো স্বপ্নের মতোই মনে হয়। এজন্য তারা জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনাকে মন ভরে দু’হাত তুলে দোয়া করে প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘায়ু কামনা করেন। নতুন পাকা বাড়ি পেয়ে তারা অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে গিয়ে আরও বলেন, আমাদের মন্ত্রী আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ এমপি সবসময় অসহায়, গরীবদের খোঁজ খবর নিয়ে অসহায়দের পাশে দাড়ান। তার জন্যই আজ আমরা জমিসহ এই নতুন পাকা বাড়ি পেলাম। তার বাবা সাবেক মন্ত্রী শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাতও ছিলেন অসহায় গরীবের বন্ধু। বাবার মতো আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ এলাকার উন্নয়ন কাজ ও সাধারণ মানুষের ভালবাসার কারণে অসহায় মানুষের মনে বেঁচে থাকবেন অনন্তকাল।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ আবুল হাশেম বলেন, মুজিববর্ষ উপলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী এ উপজেলায় ১৫টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের জন্য ঘর নির্মাণ কাজ শেষে তাদের কাছে আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘর গুলো হস্তান্তর করা হয়েছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সালেহ মোঃ লিটন সেরনিয়াবাত বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যুগান্তকারী পদক্ষেপের অংশ হিসেবেই ভূমিহীন ও গৃহহীনরা সারা দেশে ঘর পাচ্ছেন। স্থানীয় এমপি আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ’র নির্দেশে তালিকা প্রণয়ন থেকে শুরু করে প্রশাসনকে সার্বিক সহযোগীতা করা হয়েছে। দুঃস্থদের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মহানুভবতার জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন তিনি।
উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রইচ সেরনিয়াবাত বলেন, কোন লোক গৃহহীন থাকবে না, মহান মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গিকার ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘোষণা বাস্তবায়ন করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুজিব শতবর্ষে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য পাকা বাড়ি নির্মান করে দিচ্ছেন। যার ধারাবাহিকতায় আগৈলঝাড়ায় দ্বিতীয় পর্যায় ১৫টি বাড়ি নির্মাণ হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জনের পর সর্বপ্রথম জাতির পিতাই দেশের ভূমিহীন-গৃহহীন-ছিন্নমূল অসহায় পরিবার পুনর্বাসনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিজস্ব উদ্যোগে ১৯৯৭ সালে শুরু হওয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে সারা দেশে ভূমিহীন, গৃহহীন ও ছিন্নমূল পরিবার পুনর্বাসনের লক্ষে কার্যক্রম চলমান রয়েছে।


আরো নিউজ
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: JPHOSTBD