প্রকাশ্যে মা-মেয়েকে পেটালেন চেয়ারম্যান, হাসপাতালে নিতেও বাধা

ডেস্ক রিপোর্ট
দক্ষিণ বাংলা সোমবার, ১ মার্চ, ২০২১
প্রকাশ্যে মা-মেয়েকে পেটালেন চেয়ারম্যান, হাসপাতালে নিতেও বাধা

বরগুনার বামনা উপজেলার উত্তর রামনা গ্রামের মৃত্যু ইউসুফ খানের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম (৫৮) ও তার মেয়ে পারুল বেগমকে (৩৫) প্রকাশ্যে পিটিয়ে আহত করেছেন সাবেক চেয়ারম্যান।

জমি নিয়ে বিরোধের জেরে রোববার দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলার ৩নং রামনা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম জমাদ্দার ও তার সহযোগী রাজু জমাদ্দার তাদের পেটান।

গুরুতর আহত ওই নারীদ্বয় চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে আসার চেষ্টা করলেও হামলাকারীদের বাঁধায় হাসপাতালে যেতে পারেননি। অবশেষে ৯৯৯ নম্বরে কল করলে হামলার ৭ ঘণ্টা পর রাত ৯টায় বামনা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে হামলাকারীদের কবল থেকে তাদেরকে উদ্ধার করে বামনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান।

জানা যায়, উপজেলার ৩নং রামনা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম জমাদ্দার ও তার সহযোগী রাজু জমাদ্দার রোববার দুপুর দেড়টায় একটি গোয়ালঘর উত্তোলনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে মনোয়ারা বেগম ও তার মেয়ে পারুল বেগমের ওপর এ হামলা চালায়। পরে ওই দিন সন্ধ্যায় ৯৯৯ নাইনে কল পেয়ে বামনা থানা পুলিশ তাদেরকে উদ্ধার করে বামনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। তারা বর্তমানে বামনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি বলে জানিয়েছেন বামনা থানার ওসি মো. হাবিবুর রহমান।

গুরুতর আহত পারুল বেগম বলেন, আমাদের পৈত্রিক সম্পত্তিতে একটি গোয়ালঘর নির্মাণের সময় সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ও তার সহযোগী রাজু এসে বাঁধা দেয়। তাদের দাবি ওই সম্পত্তি তাদের। অথচ আমরা বিগত ৫০ বছর ধরে ওই সম্পত্তি ভোগদখল করে আসছি।

তিনি বলেন, রোববার দুপুরে সাবেক চেয়ারম্যান ও তার সহযোগী রাজু এসে এলোপাথাড়ি আমাদের পিটাতে থাকে। তাদের হামলায় আমার ও মায়ের মুখমণ্ডল ও বুকে প্রচণ্ড আঘাত পাই। আমরা হাসপাতালে আসতে চাইলেও দুই দুইবার তারা দুজনে আমাদের গাড়ি থেকে টেনে হিঁচড়ে নামিয়ে দেয়। পরে ৯৯৯ এ কল করে পুলিশের সহায়তা চাই। এর পর পুলিশ এসে আমাদের উদ্ধার করে রাতে হাসপাতালে ভর্তি করান। এ সময় হাসপাতালে এসেও ওই সাবেক চেয়ারম্যান আমাদের হুমকি-ধমকি প্রদান করেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নজরুল ইসলাম জমাদ্দার ও তার সহযোগী রাজু জমাদ্দার এরপূর্বে একাধিক হামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসাবে নির্বাচনে অংশ নিতে জোড় লবিং চালাচ্ছেন।

এ ব্যাপারে নজরুল ইসলাম জমাদ্দার বলেন, আমার সম্পত্তি দখল করে ওই নারীরা গোয়ালঘর তুলছে। আমি অনেক বার নিষেধ করলেও তারা তা ভ্রুক্ষেপ করেননি। তবে আমি তাদের ওপর কোনো প্রকার হামলা করিনি। হয়তো দু-একটি ধাক্কা দিয়েছি।

বামনা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ৯৯৯ এ কল পাওয়ার পরে আমাদের পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই মা ও মেয়েকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তারা বর্তমানে সেখানেই চিকিৎসা নিচ্ছেন। তবে এখন পর্যন্ত আহতদের পক্ষে কেউ থানায় এসে কোনো অভিযোগ দায়ের করেননি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।


আরো নিউজ
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: JPHOSTBD