স্বার্থান্বেষী মহলসহ গুটিকয়েক প্রভাবশালী ব্যক্তির প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন বরিশাল সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান সুজন। বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রাম, এলাকার অসহায় মানুষের পাশে দাড়ানো, মাদক ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সোচ্চারসহ নানা কর্মকান্ডে এলাকার মানুষের কাছে প্রশংসিত হচ্ছিলেন তখনই তিনি বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের শিকার হন। ষড়যন্ত্রমুলক এবং পূর্বপরিকল্পিত ভাবে ছাত্রলীগ নেতা সুজনের উপর হামলা করে উল্টো তাকেসহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে প্রতিপক্ষ।
তার উপর হামলা এবং মামলা দায়েরের পর ফুসে উঠেছে স্থানীয় জনগণ। পূর্ব পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পা দিয়ে নিজেই হামলার শিকার হন তিনি। বরিশাল সদরের চরকাউয়া এলাকার মৃত আব্দুর রহমান হাওলাদারের ছেলে বরিশাল সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক আশিকুর রহমান সুজন ও হামলায় গুরুতর আহত ছাত্রলীগ কর্মী শুভ’র পক্ষ থেকে জানানো হয়, ১৫মে বরিশাল সদরের চরকাউয়া এলাকার খবির ডাক্তারের ছেলে রুহুল কুদ্দুস রাহাত ও তার বড় ভাই ছগির হোসেন প্যাদা তারা বেশ কয়েকদিন ধরে তুহিন নামের ভোলার একজন ব্যক্তির সাথে লেনদেন নিয়ে সুজন ও তার কর্মী শুভ’র সাথে বাকবিতন্ডা চলছিল। তুহিন শুভ’র আপন ভাই এবং সেও রাহাতের কাছে প্রায় দুই লক্ষ টাকা পায়। সেই ঘটনার পরবর্তী রূপ দিতে রাহাত সুজনকে মিথ্যা মামলায় জড়ানো, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব রটিয়ে রাজনৈতিক ক্ষতি করার হুমকি দিয়ে মোটা অংকের চাঁদা আদায়ে মরিয়া হয়ে ওঠে। ফেইসবুকে লিখে সেখানেও হুমকি দেয়। ১৫মে ছাত্রলীগের নেতা সুজনের সাথে বিষয়টি চূড়ান্ত মীমাংসা করতে মোল্লা বাড়ি স্ট্যান্ডে শালিসি ডাকে রাহাত গ্রুপ।
ঘটনাস্থলে পৌছালে চা-নাশতার অযুহাতে অনেকক্ষণ সময় নষ্ট করে মাগরিবের পরই প্রায় সন্ধ্যা সাতটার দিকে পূর্ব পরিকল্পনার বাস্তবে রূপ দেয় রাহাত ও তার বাহিনী। রাহাতের নেতৃত্বে তার বড় ভাই ছগির প্যাদা, মনির মোল্লা, রনি হাওলাদার, আদনান হাবীবসহ ৪০/৫০ জন সুজনসহ তার অনুসারীদের উপর লাঠি, ক্রিকেট ব্যাট, দা’সহ হামলা করলে আহত হয় সুজন, শুভ হাওলাদার, রিফাত খান, রবিন খান, সানি সিকদারসহ ৭জন। এসময় সুজন জীবন বাঁচাতে দৌড়ে একটি দোকানের ভিতর ঢুকে শাটার বন্ধ করে পুলিশকে ফোন দেয়। এসময় বাইরে থাকা রাহাত ও তার গ্রুপের আর সুজনের অনুসারীদের কোন্দলে ভুলক্রমে রাহাতকেই মাথায় আঘাত করে রাহাতের নিজের অনুসারীরা। এদিকে হাতুড়ি পেটা করা হয় সুজনের কর্মী শুভকে।
গুরুতর আহত অবস্থায় সুজন, শুভকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়। আর রাহাতকে তার স্বজনরা চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যায়। ঘটনাস্থলে থাকা প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক লোকজনের ভাষ্যমতে, সুজন ও তার অনুসারীরা একটি মিমাংসা করতে এখানে এসেছে। কিন্তু শালিসি হয়নি। রাহাত ও তার লোকজন হামলা করে সুজনদের মারধর করে, কারন জানিনা। তবে শুনেছি টাকা লেনদেন সংক্রান্ত বিষয়। আহত রাহাতের ভাই রাব্বি জানান, সন্ধ্যার পর বরিশাল সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান সুজন তার সহযোগীদের নিয়ে মোল্লাবাড়ি স্ট্যান্ডে অবস্থান নেয় ও রাহাতকে মারধর করে। এসময় রাহাত গুরুতর আহত হয়। তাকে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা পাঠানো হয়েছে। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ধলু মোল্লা আহতদের বরাত দিয়ে জানান, সুজনের পরিচিত এক লোকের কাছে টাকা লেনদেনের বিষয়ে এই মারামারি ঘটনা ঘটেছে।
বরিশাল সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান সুজন বলেন, রাহাতের সঙ্গে ভোলার তুহিনের লেনদেন আছে। রাহাতের কাছে ১ লাখ ৭২ হাজার টাকা পায় তুহিন। তুহিন ও তার ছোটভাই ছাত্রলীগের শুভ এ বিষয়ে আমাকে অবহিত করেন। এরপর থেকেই বিভিন্ন সময় রাহাত ক্ষিপ্ত হয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নানান পোস্ট দিতে থাকেন। রাহাত বন্ধু হওয়ায় এবং একই এলাকার বাসিন্দা হওয়ায় তাকে ফেসবুকে মিথ্যাচার না করতে একাধিকবার অনুরোধ করি। এরপরও সে আমার রাজনৈতিক মাঠ থেকে সরিয়ে দিতে আমার ওপর হামলা চালায়। আর হামলা চালাতে গিয়ে সে নিজেই কোনো না কোন ভাবে আহত হয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছে। তার সঙ্গে আমার কোনো লেনদেনও নেই। এ বিষয়ে আমিও আইনের আশ্রয় নিব।
এব্যাপারে বন্দর থানার ভারপাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন তালুকদার বলেন, দুই পক্ষের হামলার ঘটনায় রাহাতের পিতা খবির ডাক্তার বাদী হয়ে ১৫ মে রাতে বরিশাল সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক আশিকুর রহমান সুজনসহ ৬ জনের নাম উল্লেখ করে ২৫ জনকে অজ্ঞাতানামা আসামী করে মামলা দায়ের করেন। এঘটনায় ছাত্রলীগ নেতা সুজনের অনুসারী ২জনকে পুলিশ গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরন করেছেন।