সীমাহীন ভালবাসার কবি এ কে সরকার শাওন

এ কে সরকার শাওন
দক্ষিণ বাংলা শনিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
সীমাহীন ভালবাসার কবি এ কে সরকার শাওন

“তার চোখের নীরব ভাষা
পড়তে পারি বেশ;
এক পলকের চাহনির রেশ
হয়না কভু শেষ!”
কিংবা
“আকাশের বুকে আলোর মেলায়;
মন ছুঁয়ে যায় সোনালী স্মৃতিতে,
মনের ক্যানভাসে এঁক যাই তোকে;
নাইবা এলি আমার বেলকনিতে!”
উপরের রোমান্টিক পংক্তিমালাগুলি কবি এ কে সরকার শাওনের। ২০১৯ সালের বই মেলায় প্রকাশিত তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ “কথা-কাব্য” থেকে চয়ন করা হয়েছে। কবিতায় রোমান্টিক ভাবধারার আধিক্য বেশী পরিলক্ষিত হয় বলে প্রেম পিয়াসীরা তাঁকে রোমান্টিক কবি বলে থাকেন! তিনি একই কাব্যগ্রন্থের “বিরাগ-বচন” কবিতায় লিখেছেন,
“যে হৃদয়ে লাঙ্গল দিয়ে
রক্ত গঙ্গা বহাস,
জানিস না তুই
সেই হৃদয়ে
তোরই বসবাস!”
সীমাহীন ভালবাসার কবি এ কে সরকার শাওন
জনপ্রিয় কবিতা “আমার সজনী সেন” এ তিনি বিশ্বের মহান প্রেমিক প্রেমিকাদের তুলে ধরে নিজ প্রেয়সীকে লিখেছেন,
“সুন্দরের রানী ক্লিওপেট্রা তুমি
ট্রয় নগরীর হেলেন।
রবী ঠাকুরের লাবন্য তুমি,
তুমি আমার সজনী সেন!”
২০২০ সালের বই মেলায় প্রকাশিত দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ “নীরব-কথপোকথন” কাব্যের “মন পবনের নাও” কবিতায় তাঁর প্রেয়সীকে ভালবেসে লিখেছেন,
“আফ্রোদিতির চোখের পাতায়
কীর্তিনাশার বান চলে।
তাঁর দুখের ভাগী হব,
বিলীন হবো তাঁর জলে!”!

তাঁর কবিতা অতি কাল্পনিক। কবিতা নিয়ে তিনি বলেছেনে, “আমার কবিতার চরিত্রাবলী একান্তই কাল্পনিক এবং নিজস্ব। জীবিত, মৃত ও অর্ধ-মৃত কারো সাথে কোন মিল নেই।” তাঁর গল্পের অন্যতম চরিত্র ” জগলু” এবং কবিতার অন্যতম নয়িকা “সজনী সেন”। সে কি অশরীরী নাকি রক্ত-মাংসের কোন মানবী? এ নিয়ে রহস্যের কোন সুরাহা হয় নি। তার ভাষায় “হৃদয়েশ্বরী” কবিতায় তিনি লিখেছেন,
“কেউ বলে নাটোরে
কেউ বলে চিরির বন্দরে
আসলে সেই মহা-মানবী
আছে শুধু আমার অন্তরে”
সীমাহীন ভালবাসার কবি এ কে সরকার শাওন
সাহিত্য চর্চায় নিবেদিত এই প্রতিভাবানের জন্ম ১৯৬৭ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের গোপালপুর গ্রামে। পিতা মো: আবদুল গনি সরকার একজন সরকারী কর্মকর্তা ছিলেন এবং মাতা মিসেস সালেহা গনি সরকার ছিলেন একজন আদর্শ গৃহিনী। সাত ভাই বোনের মাঝে তাঁর অবস্থান মাঝখানে হলেও তিন ভাইয়ের মাঝে সে কনিষ্ঠ!
শিক্ষা জীবনের শুরু ঝালকাঠির উদ্ধোধন হাই স্কুলে। ১৯৮৩ সালে নবীনগর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এস.এস.সি, ১৯৮৫ সালে নবীনগর সরকারী কলেজ থেকে এইচ.এস.সি পাশ করেন। ১৯৯১ সালে বিমান বাহিনীর এ্যারোনটিক্যাল ইন্জিনিয়ারিং ইনসটিটিউট থেকে প্রথম শ্রেণিতে এসোসিয়েট ইন্জিনিয়ারিং পাশ করেন। ১৯৯৬ সাল থেকে ১০ বছর ঐ ইনসটিটিউটের প্রশিক্ষক ছিলেন। ১৯৮৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজী সাহিত্য স্নাতক, ২০০৭ সালে এজাম্পশন বিশ্ববিদ্যালয়, থাইল্যান্ড থেকে ডিপ্লোমা ইন ইনফরমেশন টেকনোলজিতে স্নাতক লাভ করেন। এ ছাড়া তিনি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও আইনশাস্ত্রে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন। তাঁর রয়েছে বিশ্ব ব্যান্কের অধীনে আই এফ সি কর্তৃক প্রদেয় “ফুড সেফটি ম্যানেজমেন্টে” এর উপর একাধিক অভিজ্ঞান সনদ।

তিনি ১৯৯১ সালের ৫ জুলাই ষাটের দশকের সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ব্রাহ্মণবাডিয়ার বাঞ্ছারামপুরের দড়িকান্দি গ্রামের আশেক জহির সাহেবের দ্বিতীয়া কন্যা নাজমা আশেকীন জহিরের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তিনি ও তার সহধর্মীনি শিক্ষাবিদ নাজমা আশেকীন শাওন (এম. এ. এম-এড) তিন কন্যা সন্তানের (তৃষা, তৃণা ও তূর্ণা ) জনক-জননী; যারা দেশের শীর্ষস্থানীয় বিদ্যাপীঠে অধ্যয়নরত।
সীমাহীন ভালবাসার কবি এ কে সরকার শাওন

যদিওএ বছর একুশে বইমেলা শুরু হবে ১৮ মার্চ ২০২১ থেকে কিন্তু কবির তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ “আপন-ছায়া” আসছে ভাষার মাসেই। গ্রন্থটি প্রকাশ করছে “ছিন্নপত্র প্রকাশনী”। কামরুন সালেহীন তৃনার প্রচ্ছদে আঁকা কবির বাব-মা কে উৎসর্গীকৃত এ গ্রন্থটির মোড়ক উন্মোচনের সম্ভাব্য তারিখ ২৬.০২.২০২১ নিজ বাসভবনে ।

তাঁর অন্যান্য প্রকাশিতব্য রোমান্টিক গ্রন্থগুলি হচ্ছে “প্রণয়-প্রলাপ” ও “আলো-ছায়া”। সমসাময়িক বিষয়ের উপর তাঁর লিখায় সমাজের অন্যায়-অসঙ্গতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদী ভাষা ফুটে উঠেছে প্রকাশিতব্য “প্রলয়-প্রলাপ”, “চেয়ার ও চোর” কাব্যগ্রন্থে! শহীদ রমিজ উদ্দিনের ছাত্রদের বাস চাপার প্রতিবাদে প্রলয়-প্রলাপ” কবিতায় লিখেছিলেন,
“এ নহে নিছক দুর্ঘটনা!
এটাকে আমি বলবো
ঠান্ডা মাথায় খুন!
পিচাশের হাসি
আমার এ শোককে
বাড়িয়েছে শতগুন!”
তাঁর কবিতাগুলো ও লিখা দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন মিডিয়ায় আসছে! যে সমস্ত কবিতাগুলি তাঁর জীবনের ও গুনীজনের ছায়ার উপর ভিত্তি করে রচিত সেই গ্রন্থগুলো হচ্ছে “আপন-ছায়া” ও “বাঁশীওয়ালা” যার অনেক কবিতা 71 সংবাদ, দৈনিক বাংলাদেশের আলো, জাগো নিউজ২৪, সিএনআই এশিয়ান নিউজ, কালের সংবাদ, মুক্তকলাম ও বাংলার কবিতাসহ দেশের অন্যান্য মিডিয়াতে প্রকাশিত হয়েছে! শিশুতোষ কাব্যগ্রন্থের নাম “বাঁকা চাঁদের হাসি” ও ইংরেজি কবিতার কাব্যগ্রন্থের নাম “Songs of Insane” এবং গল্পগ্রন্থ “মেকআপ বক্স”।

সীমাহীন ভালবাসার কবি এ কে সরকার শাওন

বিশ্ব নারী দিবসে নারী বন্দনা করে আপন-ছায়া কাব্যের “নারী তুমি অনন্যা” কবিতা লিখে নন্দিত হয়েছিলেন।
“তুমি তুলনাহীনা সহধর্মিণী
সংসার রনাঙ্গনে তুমি সেনানী
তুমি জয়িতা, তুমি গরবিনী
তোমাতে বিশ্ব-ব্রম্মান্ড চির-ঋণী!”
“আপন-ছায়া”র অন্যান্য উল্লেখযোগ্য কবিতাগুলো হচ্ছে “আপন-ছায়া”, “ধন্যি মেয়ে”, “বাল্যস্মৃতি” “কাশ্মীরী শাল” ইত্যাদি।
পাঠক প্রিয় “কাশ্মীরী শাল” কবিতায় তিনি লিখেছেন,
“বাবুগিরী চাল আজও রয়ে গেছে
ঠিক আগেরই মত;
এ নিয়ে বাবা-মা
শুনিয়েছেন নানান কথা
বকেছেন কত-শত।
তাঁহারা হয়েছেন স্বর্গগত
আমি আজও তথৈবচ”!
সরকারী চাকুরী থেকে স্বেচ্ছায় অবসর নিয়ে বাংলাদেশের একটি শীর্ষস্থানীয় কোম্পানীর একটি ফ্যাক্টরী হেড হিসাবে কর্মরত আছেন। তিনি স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন রাজধানীর উত্তরখানের নিজ বাসভবন “শাওনাজে”।


আরো নিউজ
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: JPHOSTBD