১৬ মার্চ ১৯৭১ “মুজিব ইয়াহিয়া বৈঠক শুরু হয়”

ধনঞ্জয় দে
দক্ষিণ বাংলা মঙ্গলবার, ১৬ মার্চ, ২০২১
১৬ মার্চ ১৯৭১ “মুজিব ইয়াহিয়া বৈঠক শুরু হয়”

১৯৭১ সালের উত্তাল সময়ে সর্বত্র চলছিল অসহযোগ আন্দোলন। ঠিক এই সময়ে শুরু হয় বহুল আলোচিত মুজিব ইয়াহিয়া বৈঠক। এদিন সকাল সাড়ে ১০টায় বঙ্গবন্ধু প্রেসিডেন্ট হাউজে যান আলোচনা করতে। বঙ্গবন্ধুর সাদা রঙের গাড়িতে লাগানো ছিল প্রতিবাদের কালো পতাকা। এসময় বঙ্গবন্ধুর সাথে ছিলেন সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমদ, খন্দকার মোশতাক আহমেদ ,এম মনসুর আলী , এএইচএম কামরুজ্জামান ও ডঃ কামাল হোসেন ।আলোচনায় ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে ছিলেন পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি কর্নেলিয়াস, জেনারেল টিক্কা খান ,জেনারেল পীরজাদা,জেনারেল খাদিম হোসেন রাজা,মেজর জেনারেল ওমর ও মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী।

বঙ্গবন্ধু ইয়াহিয়ার কাছে তার পুর্ব ঘোষিত চারটি শর্তের কথা ব্যক্ত করেন। ইয়াহিয়া বঙ্গবন্ধু কে বলেন “সংবিধান তৈরির আগেই যদি সামরিক আইন প্রত্যাহার করা হয় তাহলে সাংবিধানিক জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে”। বেলা একটার সময় আলোচনা শেষ করে বেড়িয়ে এসে বঙ্গবন্ধু উপস্থিত সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন ।তিনি বলেন আমরা আমাদের কথা প্রেসিডেন্ট কে বলে এসেছি। আলোচনা শুরু হয়েছে,আরো আলোচনা চলবে। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন ।বিকেলে বঙ্গবন্ধু আলোচনা নিয়ে আবারো সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। এদিনও বেশ কিছু মিছিল প্রেসিডেন্ট হাউসের সামনে দিয়ে অতিক্রম করে। মিছিলগুলো থেকে স্বাধীনতার ও পুর্ণ স্বায়ত্বশাসনের পক্ষে স্লোগান দেওয়া হয়।

এদিনও নগরীর বিভিন্ন স্থানে পথসভা ও মিছিল হয়। ঢাকায় প্রেসিডেন্টের উপস্থিতির কারনে পুলিশ ও আইনশৃঙ্গলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে কর্মচাঞ্চল্য অবস্থা লক্ষ্য করা যায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের জরুরী মিটিং অনুষ্ঠিত হয় । সবাই ডামী অস্ত্র হাতে ট্রেনিং নিতে শুরু করে।

এদিন খুলনার হাদিস পার্কে বাংলা জাতীয় লীগ আয়োজিত সভায় আতাউর রহমান খান বলেন পাকিস্তান অর্জনের পরেই লাহোর প্রস্তাব অনুযায়ী শাসনকার্য্য পরিচালনা না হওয়ার ফলে আজকের এই সংকট হয়েছে। সভায় বঙ্গবন্ধুকে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে একটি জাতীয় সরকার গঠনের আহ্বান জানানো হয়। এদিন ঢাকা হাইকোর্ট বার সমিতি বঙ্গবন্ধুর দেওয়া সমস্ত শর্ত ও নির্দেশাবলী মেনে চলার সিদ্ধান্ত গ্রহন করে।

যতদুর জানা যায় এইদিন সেনা ছাউনির অভ্যন্তরে জেনারেল টিক্কা খান খাদিম হোসেন রাজা এবং মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী কে একটি সামরিক অভিযান পরিচালনা করার পরিকল্পনা করতে বলেন। এভাবেই শুরু হয় ইতিহাসের এক নিষ্ঠুর গনহত্যার নীলনকশা।


আরো নিউজ
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: JPHOSTBD