মূলগেট ছাড়া অস্তিত্ব নেই কুয়াকাটা জাতীয় উদ্যানের

নিজস্ব প্রতিবেদক
দক্ষিণ বাংলা মঙ্গলবার, ২০ জুলাই, ২০২১
মূলগেট ছাড়া অস্তিত্ব নেই কুয়াকাটা জাতীয় উদ্যানের

দেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটার পর্যটকদের বিনোদনের উৎস ছিল ‘কুয়াকাটা জাতীয় উদ্যান’। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে আইলা, আম্ফান, ইয়াসের মত ঘূর্ণিঝড়ে উদ্যানের মূলগেট ছাড়া তেমন কিছুই আর অবশিষ্ট নেই। নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে একে একে সব।

স্থানীয় ও সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০০৫ সালে কুয়াকাটা জিরো পয়েন্ট থেকে দুই কিলোমিটার পূর্বে এক হাজার ৬১৩ হেক্টর জায়গা নিয়ে কুয়াকাটা ইকোপার্ক নির্মিত হয়। পরবর্তীতে ২০১০ সালের ২৪ অক্টোবর পার্কটিকে কুয়াকাটা জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষণা করা হয়। উদ্ভিদ, বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ এবং পর্যটন-সুবিধা উন্নয়নের জন্য এটিকে জাতীয় উদ্যান হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়।

এক সময় এই উদ্যানে কার পার্কিং, হাটার পথ, লেক, প্যাডেল বোট শেড, কাঠের ব্রিজ, পিকনিক শেড, পিকনিক স্পট, টয়লেট, রান্নাঘর, টিউবওয়েল, গোলঘর, বিদ্যুৎ ও পানির সুবিধাদি বিদ্যমান ছিল।

উদ্যানের পাশে বসবাস করা ষাটোর্ধ আবু বকর সিদ্দিক প্যাদা বলেন, ‘উদ্যান থেকে অনেক দূরে সাগর ছিল। কিন্তু এখন এ উদ্যানই সমুদ্রে বিলীন হয়ে গেছে। উদ্যানে বানর, শুকর, সজারু, শিয়াল, বাদুড়, বেজি, গুইসাপ, কাঠবিড়ালি, অজগর, হলদে পাখি, বাবুই পাখি, পেঁচা, চিল, শালিক, শ্যামা, টুনটুনি, ঘুঘু, মাছরাঙ্গা, সাদা বক, ডাহুক, বুলবুলি ইত্যাদি দেখো যেতো।’

তিনি আরও বলেন, ‘উদ্যানের অন্যতম সৌন্দর্য ছিল ঝাউগাছ। এছাড়াও সুন্দরী, হিজল, করমজা, অর্জুন, বাইন, পশুর, কাঁকড়া, আসামলতা, স্বর্ণলতা ইত্যাদি প্রজাতির বৃক্ষ নজর কাটতো।’

স্থানীয় বেল্লাল হোসেন বলেন, ‘উদ্যানে রেইনট্রি, কড়ই, মেহগনি, বট, জাম, শিমুল, নিম, কদম, বাঁশ, নারিকেল, তাল, খেজুর, আমলকী, পেয়ারা, পাকুড়, সোনালু, গাব, থুজা, গোলাপসহ অনেক গাছ লাগানো হয়েছিল। কিন্তু আজ কোনো অস্তিত্ব নেই।’

স্থানীয় পর্যটন ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন বলেন, ‘মূল গেটটি দাঁড়িয়ে থাকলেও গোটা উদ্যান এখন ধ্বংসস্তূপ। উদ্যানটি কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে সৌন্দর্যের মধ্যে অন্যতম ছিল। ছিল হাজার হাজার পর্যটকদের আনাগোনা। কিন্তু আজ উদ্যানটি অনেকটাই বিলীনের পথে।

বনবিভাগের দায়িত্বে থাকা মহিপুর রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম বলেন, ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে উদ্যানের বেশিরভাগ স্থাপনা বিলীন হয়ে গেছে। উদ্যান রক্ষায় একটি পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। আমরা শীঘ্রই পরিকল্পনা অনুযায়ী উদ্যান রক্ষায় কাজ শুরু করবো।’

কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র আনোয়ার হাওলাদার বলেন, ‘উদ্যান রক্ষায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে কথা বলেছি। পুরো উদ্যানকে ভাঙনের হাত থেকে রক্ষায় পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছেন।


আরো নিউজ
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: JPHOSTBD