স্ত্রী হত্যায় স্বামী ও সহযোগীর যাবজ্জীবন

দক্ষিণ বাংলা
দক্ষিণ বাংলা মঙ্গলবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

বরিশাল: বরিশালের আগৈলঝাড়ায় স্ত্রী হত্যায় স্বামী ও তার সহযোগীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি উভয়কে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) বরিশালের জেলা ও দায়রা জজ কেএম রাশেদুজ্জামান রাজা রায় দিয়েছেন বলে বেঞ্চ সহকারী মো. কামরুল ইসলাম জানিয়েছেন। রায়ে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আরেক আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় তিনজন এজলাসে উপস্থিত ছিলেন বলে জানান বেঞ্চ সহকারী।  দণ্ডিতরা হলেন, গোপালগঞ্জের সদর উপজেলার বেদগ্রামের বাসিন্দা মৃত আনোয়ার শেখের ছেলে তামিম শেখ (৪৪) ও কোটালীপাড়া উপজেলার বেপারীপাড়া মৃত ইদ্রিস শেখের ছেলে রুবেল শেখ (৪২)। খালাস পাওয়া জুলহাস শেখ গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার বেদগ্রামের (দক্ষিণপাড়া) বাসিন্দা মৃত সালাম শেখের ছেলে।

মামলার বরাতে বেঞ্চ সহকারী কামরুল ইসলাম জানান, দুই সন্তানের জননী বরিশালের আগৈলঝাড়ার নগরবাড়ী এলাকার বাসিন্দা মৃত করিম শাহের কন্যা রাশিদা বেগমের প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হয়। এরপর এক সন্তানের জনক তামিম শেখের সঙ্গে রাশিদার পরিচয় ও প্রেম হয়। পরে তারা বিয়ে করে আগৈলঝাড়ার বাকাল গ্রামের হেমায়ে মোল্লার বাড়িতে ভাড়া থাকতেন।

২০২২ সালের ১৯ জানুয়ারি স্বামী তামিম শেখ রাশিদার মোবাইলফোনে কল দিয়ে গোপালগঞ্জে নিয়ে যায়। ১০ মাস বয়সী শিশু তনিমকে নিয়ে গোপালগঞ্জ গেলে রাশিদাকে নিয়ে একটি আবাসিক হোটেলে উঠেন স্বামী তামিম। পরদিন রাতে রাশিদাকে বাসায় পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে থ্রি-হুইলারে রওনা দেন। থ্রি হুইলারে ছিলেন রুবেল ও জুলহাস। চলাফেরা ও পারিবারিক কলহের জেরে গোপালগঞ্জ-আগৈলঝাড়া মহাসড়কের বাইপাস ব্রিজের পাশে নির্জন স্থানে এসে হাতুরি দিয়ে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে রাশিদাকে হত্যা করা হয়। পরে ব্রিজের অদূরে হান্নান মোল্লার ঘেরে পাশে ফেলে রেখে যায়। গভীর রাতে পথচারীরা ১০ মাস বয়সী শিশু তনিমের কান্না শুনে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় রাশিদার ভাই মো. আমিন শাহ বাদী হয়ে ২০২২ সালের ২০ জানুয়ারি আগৈলঝাড়া থানায় মামলা করেন।

আগৈলঝাড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাজহারুল ইসলাম দুই আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি ও সাক্ষ্য নিয়ে ২০২২ সালের ৩১ জুলাই তিনজনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট জমা দেয়। বিচারক আটজনের সাক্ষ্য নিয়ে রায় ঘোষণা করেছেন। রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ওবাদুল্লাহ সাজু বলেন, এই রায়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এই রায়ে ভবিষ্যতে এ ধরনের অপরাধ কমবে বলে প্রত্যাশা করেন তিনি।


আরো নিউজ
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: JPHOSTBD