উজিরপুরে পুত্রবধুকে ধর্ষণের চেষ্টায় মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ

উজিরপুর প্রতিনিধি
দক্ষিণ বাংলা শনিবার, ২০ মার্চ, ২০২১
উজিরপুরে পুত্রবধুকে ধর্ষণের চেষ্টায় মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ

বরিশালের উজিরপুরে মুক্তিযোদ্ধা কর্তৃক পুত্রবধুকে ধর্ষণের চেষ্টার ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের। এ নিয়ে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি। ঘটনা ধামাচাপা দিতে মরিয়া প্রভাবশালী মহল। অভিযোগ ও ভূক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বামরাইল ইউনিয়নের দক্ষিণ কালিহাতা গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আলী আকবর ফকির(৬০) এর ছেলে সবুজ ফকির কুয়েতে থাকার সুযোগে বিভিন্ন সময়ে পুত্রবধুকে কুপ্রস্তাব ও শ্লীলতাহানি ঘটায় এবং বিভিন্ন ভয়ভীতি ও হুমকি দেয়।

এরই ধারাবাহিকতায় ১২ মার্চ গভীর রাতে পুত্রবধু(৩১) কে জোর পূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করে। ব্যর্থ হয়ে লম্পট শ্বশুর আলী আকবর ফকির পরবর্তীতে বিষয়টি কাউকে জানালে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এ ঘটনায় ওই গৃহবধু ১৭ মার্চ উজিরপুর মডেল থানায় শ্বশুরের বিরুদ্ধে কুপ্রস্তাব ও ধর্ষণের চেষ্টার ঘটনায় অভিযোগ দায়ের করেন। ১৮ মার্চ এস,আই মাহবুব হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং তিনি জানান পারিবারিক দ্বন্ধের কারণেই এই অভিযোগ। এদিকে থানায় অভিযোগ দিয়ে ভুক্তভোগী গৃহবধু আতঙ্কে স্বামীর বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র পালিয়ে বেড়াচ্ছে। মুক্তিযোদ্ধার এ কি কান্ড! আপন পুত্রবধুকে কিভাবে ধর্ষণের চেষ্টা করে প্রশ্ন রাখেন এলাকাবাসী। ভূক্তভোগী গৃহবধু জানান, আমার স্বামী বিদেশ থাকায় অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে লম্পট শ্বশুর আলী আকবর ফকির ধীর্ঘদিন ধরে আমাকে কুপ্রস্তাব, উত্তক্ত, স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয়াসহ প্রায়ই শ্লীলতাহানি ঘটিয়ে আসছে।

লোক লজ্জা ও সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে বিষয়টি শুধু শাশুড়ী ও ননদদের জানিয়েছি। এর পরেও তার লোলুপ দৃষ্টি থেকে আমি ও আমার নাবালিকা ১৪ বছরের কন্যাও রেহাই পাইনি। কোন বিচার না পেয়ে অবশেষে বাধ্য হয়ে উজিরপুর মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি। থানায় অভিযোগ দেওয়ায় কতিপয় প্রভাবশালীদের দিয়ে আমাকে বিভিন্ন ভয়ভীতি ও হত্যার হুমকি দেয় এবং মুক্তিযোদ্ধার দাপট দেখিয়ে সে একের পর এক অপরাধ করে পার পেয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য আঃ সালাম সরদার জানান, ওই গৃহবধু বিষয়টি আমাকে জানিয়েছে এবং থানায় অভিযোগও দিয়েছে। ইউপি চেয়ারম্যান ইউসুফ হোসেন হাওলাদার বিষয়টি এড়িয়ে যান।

গ্রাম পুলিশ আজিজুল হক হাওলাদার জানান, বিষয়টি আমি শুনেছি এবং থানায় মামলা করার পরামর্শ দিয়েছি। স্থানীয় লালু কবিরাজ জানিয়েছেন, এ ন্যাক্কার ঘটনা ওই গৃহবধু আমাকে জানালে আমি প্রশাসনকে অবহিত করেছি এবং মামলা করার পরামর্শ দেই। মৃত বারেক মোল্লার মেয়ে নেহারুন বেগম জানান, আমার কাছে কান্না করে ওই গৃহবধু প্রকৃত ঘটনা জানালে আমি তাকে সাথে নিয়ে উজিরপুর মডেল থানায় মামলা করার জন্য যাই। কিন্তু দারোগা মাহবুব সাহেব অভিযোগ গ্রহন করলেও আমাদের অভিযোগের কোন কপি দেয়নি। ভুক্তভোগী আরো জানান, থানায় অভিযোগ দিয়েও বিচার না পেয়ে নাবালিকা মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি।

থানায় অভিযোগ দেয়ায় অভিযুক্ত মুক্তিযোদ্ধা আলী আকবর ফকির পালিয়ে বেড়াচ্ছে এবং বিভিন্ন জনের মাধ্যমে প্রশাসনকে ম্যানেজ করার চেষ্টা চালাচ্ছে। ওই লম্পট শ্বশুরকে গ্রেফতার পূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়ে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন ভুক্তভোগী গৃহবধু। উজিরপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ জিয়াউল আহসান জানান, অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।


আরো নিউজ
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: JPHOSTBD