কুরআন আল্লাহর কিতাব। মানুষের একমাত্র মনোনীত চূড়ান্ত হেদায়েত ও জীবন বিধান। এ কুরআনের নসিহতগুলো মুমিন মুসলমানের জন্য অনন্য তোহফা। এ উপদেশগুলো মুমিন বান্দাকে যেমন সতর্ক করে তেমনি সফলতার পথ দেখায়।
এ কারণেই সময় থাকতে কুরআনের এ উপদেশগুলো মেনে সতর্ক হওয়ার পাশাপাশি সফলতা লাভে যথাযথ আমল করা জরুরি। কেননা কুরআনই মানুষের জন্য একমাত্র হেদায়েত। এখানেই রয়েছে জীবন বিধানের পাশাপাশি সন্তুষ্টি ও আশ্বস্ত হওয়ার উপায় উপকরণের উপদেশ। যা পালনে মুমিন মুসলমান প্রশান্তি লাভ করে।
কুরআনের এসব উপদেশের আলোকে গঠিত জীবনই সুন্দর ও সফল হবে। আল্লাহ তাআলা বার বার এ উপদেশগুলো একাধিক সুরা ও আয়াতে উল্লেখ করেছেন। তাহলো-
– আল্লাহকে যথাযথ ভয় করা
– يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ اتَّقُواْ اللّهَ حَقَّ تُقَاتِهِ وَلاَ تَمُوتُنَّ إِلاَّ وَأَنتُم مُّسْلِمُونَ
‘হে ঈমানদারগণ! আল্লাহকে যেমন ভয় করা উচিৎ ঠিক তেমনিভাবে ভয় করতে থাক। আর অবশ্যই মুসলমান না হয়ে মৃত্যুবরণ করো না।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১০২)
– আল্লাহর পথে দান করা
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ أَنفِقُواْ مِمَّا رَزَقْنَاكُم مِّن قَبْلِ أَن يَأْتِيَ يَوْمٌ لاَّ بَيْعٌ فِيهِ وَلاَ خُلَّةٌ وَلاَ شَفَاعَةٌ وَالْكَافِرُونَ هُمُ الظَّالِمُونَ
‘হে ঈমানদারগণ! আমি তোমাদেরকে যে জীবিকা দিয়েছি, সেদিন আসার আগেই তোমরা তা থেকে ব্যয় কর, যাতে না আছে বেচা-কেনা, না আছে সুপারিশ কিংবা বন্ধুত্ব। আর কাফেররাই হলো প্রকৃত জালেম।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ২৫৪)
– কথা অনুযায়ী কাজ করা
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا لِمَ تَقُولُونَ مَا لَا تَفْعَلُونَ – كَبُرَ مَقْتًا عِندَ اللَّهِ أَن تَقُولُوا مَا لَا تَفْعَلُونَ
‘হে মুমিনগণ! তোমরা যা কর না, তা কেন বল? তোমরা যা কর না, তা বলা আল্লাহর কাছে খুবই অসন্তোষজনক।’ (সুরা সফ : আয়াত ৩)
– আনুগত্য করা
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ أَطِيعُواْ اللّهَ وَأَطِيعُواْ الرَّسُولَ وَأُوْلِي الأَمْرِ مِنكُمْ فَإِن تَنَازَعْتُمْ فِي شَيْءٍ فَرُدُّوهُ إِلَى اللّهِ وَالرَّسُولِ إِن كُنتُمْ تُؤْمِنُونَ بِاللّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ ذَلِكَ خَيْرٌ وَأَحْسَنُ تَأْوِيلاً
‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর নির্দেশ মান্য কর, নির্দেশ মান্য কর রসূলের এবং তোমাদের মধ্যে যারা দায়িত্বশীল (শাসক-বিচারক) তাদের আনুগত্য কর। তারপর যদি তোমরা কোনো বিষয়ে বিবাদে জড়িয়ে পড়, তবে তা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি প্রত্যর্পণ কর- যদি তোমরা আল্লাহ ও কেয়ামত দিবসের উপর বিশ্বাসী হয়ে থাক। আর এটাই কল্যাণকর এবং পরিণতির দিক দিয়েও উত্তম।’ (সুরা নিসা : আয়াত ৫৯)
– আল্লাহর সাহায্য কামনা করা
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ اسْتَعِينُواْ بِالصَّبْرِ وَالصَّلاَةِ إِنَّ اللّهَ مَعَ الصَّابِرِينَ
‘হে মুমিনগন! তোমরা ধৈর্য্য ও নামাজের মাধ্যমে (আল্লাহর কাছে) সাহায্য প্রার্থনা কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্য্যশীলদের সঙ্গে আছেন।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ১৫৩)
আল্লাহ তাআলা ঈমানদার বান্দাকে অনেক বেশি ভালোবাসেন। এ ভালোবাসার পেছনে মূল কারণ হলো- তারা আল্লাহর দেয়া জীবন বিধান কুরআন অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করা। আল্লাহর নৈকট্য অর্জনে উপায় খুঁজে বেড়ায়। তাদের জন্য মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে এসব উপদেশ তোহফা বা উপহার স্বরূপ।
আল্লাহ তাআলা মুমিন মুসলমানকে তার নৈকট্য অর্জনে এ নসিহতগুলোসহ কুরআনের সব নসিহত মেনে চলার তাওফিক দান করুন। আমিন।