জি-২০ সম্মেলনে যোগ দেবেন পুতিন

দক্ষিণ বাংলা
দক্ষিণ বাংলা বুধবার, ২৩ মার্চ, ২০২২

যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের বিরোধিতা সত্ত্বেও চলতি বছর জি-২০ সম্মেলনে সশরীরে যোগ দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ইন্দোনেশিয়ার রুশ রাষ্ট্রদূত ল্যুদমিলা ভরোভিয়েভা বুধবার বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

রয়টার্সকে ল্যুদমিলা বলেন, ‘তিনি জি-২০ সম্মেলনে যোগ দিতে চান এবং এজন্য ইন্দোনেশিয়ায় আসার পরিকল্পনাও তার রয়েছে।’

বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশগুলোর একটি জোট জি-২০। শিল্পোন্নত ধনী দেশগুলোর এই সংগঠনের সদস্য হিসেবে রয়েছে ১৯টি দেশ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। জলবায়ু পরিবর্তন ও উন্নয়নসহ বিশ্ব অর্থনীতিকে প্রভাবিত করে এমন সমস্যাগুলোর বিষয়ে সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়াই এই গোষ্ঠীটির লক্ষ্য।

জি-২০ জোটের সভাপতির পদটিতে নিয়মিত বিরতিতে পরিবর্তন আসে। জোটের সদস্য রাষ্ট্রগুলো বিভিন্ন সময়ে সভাপতির পদে আসীন হয়। বর্তমানে সভাপতির চেয়ারে আছে রাশিয়া।

ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালানোর জেরে জি-২০ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্যতম সদস্য পোল্যান্ড সম্প্রতি জি-২০ থেকে রাশিয়াকে বাদ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। এক প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, মঙ্গলবার পোল্যান্ডের সরকারি কর্মকর্তারা মার্কিন কর্মকর্তাদের এ বিষয়ক পরামর্শ দিয়েছেন। জবাবে মার্কিন কর্মকর্তারা ‘ইতিবাচক সাড়া’ দিয়েছন বলেও উল্লেখ করা হয়েছে রয়টার্সের প্রতিবেদনে।

বুধবার হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভানকে এ সম্পর্কে প্রশ্ন করেছিলেন সাংবাদিকরা। জবাবে সুলিভান বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও সংস্থাসমূহের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক আগের মতো সহজ-সাবলীল থাকতে পারে না।’

তবে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র পশ্চিমা দেশগুলো যদি জি-২০ জোট থেকে রাশিয়াকে বাদ দেওয়ার প্রস্তাব দেয়, সেক্ষেত্রে চীন, ভারত ও সৌদি আরবের মতো জোটের অন্যান্য দেশগুলোর ভেটো দেওয়ার সম্ভাবনাও প্রবল বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকরা।

ল্যুদমিলাও এ বিষয়ে ঐকমত্য প্রকাশ করে রয়টার্সকে বলেন, ‘প্রথমত, জি-২০ একটি অর্থনৈতিক জোট এবং এই ফোরামে অর্থনীতি সম্পর্কিত বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনা হয়। এটি কোনো রাজনৈতিক জোট নয়।’

‘দ্বিতীয়ত, বর্তমানে বিশ্বজুড়ে যেসব অর্থনৈতিক সংকট চলছে, জি-২০ থেকে রাশিয়াকে বাদ দিলেই সেসবের সমাধান হয়ে যাবে— ব্যাপারটি এমন নয়। অন্যভাবে বলা যায়, রাশিয়া ছাড়া এসব সংকট মোকাবিলা করা খুবই কঠিন হবে জি-২০ জোটের সদস্যদের জন্য।’

এদিকে, পোল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্রের এই সম্ভাব্য পদক্ষেপের বিরোধিতা করেছে জি-২০ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন— দু’জোটেরই প্রভাবশালী সদস্য জার্মানি। দেশটির চ্যান্সেলর ওলাফ শুলজ বলেছেন, এখন এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার সময় নয়।

বুধবার এক বিবৃতিতে এ সম্পর্কে শুলজ, ‘জি-২০, ডব্লিউটিওর মতো আন্তর্জাতিক জোটগুলো কিছু নিয়ম-নীতি মেনে চলে। এসব জোটে কোনো সিদ্ধান্ত পাস হতে হলে সব সদস্যরাষ্ট্রের মতামত নিতে হয়। তাই কোনো বিষয়ে নিজে নিজে সিদ্ধান্ত নেওয়া জোটের সদস্যরাষ্ট্রেরই উচিত হবে না।’

‘আর আমরা ইউক্রেনে যত দ্রুত সম্ভব যুদ্ধবিরতি চাইছি। এমন কোনো পদক্ষেপ এখন নেওয়া উচিত হবে না, যা যুদ্ধবিরতিকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।’


আরো নিউজ
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: JPHOSTBD