পিরোজপুরের পৌর মেয়র হাবিবুর রহমান মালেক ও তার স্ত্রী নিলা রহমান সহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে পৃথক দুইটি মামলা দায়ের করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এর একটিতে পৌর মেয়র ও তার স্ত্রী আর অন্যটিতে মেয়র সহ পৌরসভার ২৭ কর্মকর্তা কর্মচারীদের অভিযুক্ত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুদকের সমন্বিত কার্যালয় বরিশালে এই দুইটি মামলা দায়ের করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের উপ পরিচালক আলী আকবর।
জানা গেছে, একটি মামলায় মেয়র মালেক ও তার স্ত্রী নিলা রহমানকে অভিযুক্ত করে জ্ঞাত আয় বর্হিভুত ৩৬ কোটি ৩৪ লাখ ৭ হাজার ৯৩২টাকার সম্পদ থাকা। মমালা নম্বর ৩। আর অন্যটিতে মেয়র মালেক ও পিরোজপুর পৌর সভার কাউন্সিলর আব্দুস সালাম বাতেন সহ পৌরসভার মোট ২৭ জনের বিরুদ্ধে ওই পৌরসভার একটি নিয়োগে অবৈধভাবে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ। যার মামলা নম্বর ৪।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপ পরিচালক আলী আকবর নিউজ বাংলাকে জানান, গত ২৭ ডিসেম্বর দুদক তার সম্পদের বিবরনী চেয়ে তাকে, স্ত্রী মিসেস নিলা রহমান, কন্যা নওরীন আক্তার ও পুত্র ফয়সাল রহমানের নাম উল্লেখ করে তাদের জ্ঞাত সম্পদের হিসাব ও তথ্য বিবরনী চেয়ে একটি নোটিশ প্রদান করেন। এছাড়া একই সাথে পৌরসভার ২৫ জন কর্মচারী নিয়োগে প্রতিজনের কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা করে ঘুষ গ্রহন, বাস ও মিনিবাস থেকে অবৈধ চাঁদা আদায়, এলাকায় সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ঠিকাদারী করার অভিযোগ করে এই নোটিশ প্রদান করা হয়। ওই নোটিশের যথাযথ উত্তর না পাওয়ায় পরে কমিশন তাকে (উপ পরিচালক আলী আকবর ) এই বিষয়ে অনুসন্ধানের জন্য দায়িত্ব দেন। দীর্ঘ অনুসন্ধান শেষে পৃথক দুইটি মামলা দায়ের করেন।
পৌর সভার ২৫ কর্মচারী নিয়োগে ঘুষ বানিজ্যের অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় পৌর মেয়র সহ অভিযুক্ত অন্যান্যরা হলেন, স্থাণীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের উপ পরিচালক (সাবেক) তরফদার সোহেল রহমান, পৌরসভার কাউন্সিলর জেলা বিএনপি’র সহ সভাপতি আব্দুস সালাম বাতেন, পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী আবু হানিফ, পৌর সভার সচিব (অন্যত্র বদলী) মাসুদ আলম, ক্যাশিয়ার (প্রমোশন হিসাব রক্ষক) মাইনুল ইসলাম, সহকারী কর আদায়কারী ( প্রমোশন স্টোর কিপার) মাহাবুবুর রহমান, নিম্মমান সহকারী শারাফাতুন মান্নান, সহকারী কর নির্ধারক ওয়াদুদ খান, সহকারী কর নির্ধারক মিজানুর রহমান, টিকাদানকারী ফরহাদ হোসেন মল্লিক, সহকারী কর আদায়কারী মেহেদি হাসান চপল, সহকারী কর আদায়কারী রাশিদা বেগম, বাজার আদায়কারী রাজু আহমেদ, বাতি পরিদর্শক রবিউল আলম, অফিস সহকারী মাকসুদা খানম, ফটোকপি অপারেটর আনোয়ার হোসেন, টিকাদনকারী জামিউল হক, টিকাদানকারী লাইজু আক্তার, টিকাদানকারী রেক্সোনা মজুমদার, টিকাদানকারী জান্নাতুল ফেরদৌসী, নৈশপ্রহরী ফজলুল হক, নৈশপ্রহরী নজরুল ইসলাম, পিয়ন খাদিজা বেগম, পিয়ন দীপক কুমার পাল, সহকারী কর আদায়কারী মিজানুর রহমান মিন্টু এবং প্রহরী রনজিত।
উল্লেখ্য, পিরোজপুর সদর পৌর সভার পৌর মেয়র হাবিবুর রহমান মালেক পিরোজুপর জেলা আ’লীগের সহ সভাপতি। তিনি গত পৌর নির্বাচনে আ’লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসাবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় পৌর মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি পিরোজপুর জেলা আ’লীগের সভাপতি ও সাবেক এমপি একেএমএ আউয়ালের ভাই। সাবেক এমপি আউয়াল ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধেও অবৈধ সম্পদ ও সরকারী জমি দখলের অভিযোগে ইতিমধ্যে পৃথক ৪টি মামলা দায়ের করেছেন দুদক।