বাউফলে ১৬ প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণ কাজে বিলম্ব, ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান

রিয়াজ মাহমুদ, পটুয়াখালী প্রতিনিধি
দক্ষিণ বাংলা সোমবার, ৮ আগস্ট, ২০২২

পটুয়াখালীর বাউফলে ১৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণের কাজ শুরু করার আগেই শেষ হয়ে গেছে মেয়াদকাল। নতুন ভবণ নির্মাণে বিলম্ব হওয়ায় এবং স্যাঁতসেতে পুরাতন ভবনে কার্যক্রম পরিচালনা করায় ওই সব বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা অনেক কষ্ট করে পাঠদান করছেন। ফলে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থী,অভিভাবক ও স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০১৯-২০২০ ইং অর্থ বছরে কায়না-বাঁশবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় ৮৮ লাখ টাকা ব্যয়ে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য মায়ের দোয়া এন্টারপ্রাইজ নামের একটি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করে এলজিইডি। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি প্রকল্পটির নির্মাণকাজের মেয়াদ শেষ হয়। অথচ এখন পর্যন্ত কোন কাজই শুরু করেনি ঠিকাদার। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আশরাফ আলী খান বলেন, ২টি শ্রেণী কক্ষে দেড় শতাধিক শিক্ষার্থীকে গাদাগাদি করে বসিয়ে পাঠদান করতে হচ্ছে। একই অবস্থা পূর্ব দাসপাড়া আমেনা খাতুন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। ওই বিদ্যালয়ে ১ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য মাসুদ অ্যান্ড ব্রাদার্স নামের একটি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করে এলজিইডি। গত ১৬ জুলাইয়ের মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত কোন কাজই শুরু করেনি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। ফলে জরাজীর্ণ শ্রেণী কক্ষে পাঠদান করতে হচ্ছে বিদ্যালয়ের ২ শতাধিক শিক্ষার্থীকে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শারমিন আরা চৌধুরী বলেন, প্রতিবছর ক্ষুদ্র ও রুটিন মেরামতের অর্থে জরাজীর্ণ ভবন জোড়াতালি দিয়ে শ্রেণী কার্যক্রম পরিচালনা করতে হচ্ছে। নতুন ভবনটি দ্রুত নির্মাণ করা না হলে পাঠদান কার্যক্রম বিঘিœত হবে। একই তারিখে নির্মাণকাজ শেষ করার কথা তালতলী-ভরিপাশা, ভাংড়া ভিডিসি, সুলতানাবাদ উত্তর নাজিরপুর, পূর্ব বামনিকাঠী সরকারি ও পশ্চিম ভরিপাশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। ২০২১ সালের ১ নভেম্বর চরওয়াডেল এবং ১৪ অক্টোবর উত্তর মধ্য রাজাপুর ও মদনপুরা দরগাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নির্মাণ কাজ শেষ করার কথা। এছাড়াও নির্ধারিত সময়ে মান্দারবন জোমাদ্দার বাড়ি,পশ্চিম সন্যাসী কান্দা, দক্ষিণ-পূর্ব মনদপুরা, আড়াইনাও, দক্ষিণ রাজাপুর ও ইন্দ্রকূল চৌমুহনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নির্মাণকাজ শুরু হয়নি। এদিকে বগা ইউনিয়নের পশ্চিম কায়না সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বেজমেন্ট নির্মাণ করে ৩ বছর ধরে ফেলে রেখেছেন ঠিকাদার। ২০১৮-২০১৯ ইং অর্থ বছরে এসএইচ এন্টারপ্রাইজ দেড় কোটি টাকা চুক্তিতে প্রকল্পটির কাজ শুরু করে।
বাউফল উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) দেবাশীষ ঘোষ বলেন, প্রতিটি বিদ্যালয়ে অস্বাভাবিক পরিবেশে আমার শিক্ষার্থীরা কষ্ট করে পাঠ গ্রহন করছে। আবার শিক্ষকরাও অনেক কষ্ট করে পাঠদান করাচ্ছেন। দ্রুত ভবনগুলোর নির্মাণকাজ সম্পন্ন করা না হলে ওইসব বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী উপস্থিতি কমে যাওয়ার আশংকা রয়েছে।
বাউফল উপজেলা প্রকৌশলী সুলতান হোসেন বলেন, নির্মাণ সামগ্রীর দাম বৃদ্ধি এবং করোনার অজুহাত দিয়ে ভবণগুলোর নির্মাণকাজ শুরু করেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো। চুক্তির পরে নির্মাণকাজ শুরুর জন্য প্রত্যেক ঠিকাদারকে চিঠি দিয়ে একাধিকবার তাগাদা দেয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত কাজ শুরু না করায় আমরা বিব্রত। তিনি আরও বলেন, চুক্তি ভঙ্গ করায় নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে শিগগিরই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।


আরো নিউজ
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: JPHOSTBD