যৌন হয়রানি-মারধরের অভিযোগে সহপাঠী ও তার মায়ের বিরুদ্ধে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক
দক্ষিণ বাংলা বুধবার, ৩০ মার্চ, ২০২২
সাত শিশুকে যৌন নিপীড়ন, মাদ্রাসা অধ্যক্ষ গ্রেফতার

সহপাঠীকে তার ছেলে বন্ধুর সাথে ঘনিষ্ট অবস্থায় দেখে ফেলায় যৌন হয়রানি ও মারধরের অভিযোগে থানায় মামলা দায়ের করেছেন ভূক্তভোগী শিক্ষার্থীর মা। এছাড়া ভূক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীর বাবা এরইমধ্যে বিদ্যালয় প্রধানের নিকট লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।বুধবার (৩০ মার্চ) থানায় মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিমুল করিম।তিনি জানান, মামলায় ভূক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীর এক সহপাঠী ও সহপাঠীর মা এবং ওই সহপাঠীর ছেলে বন্ধু ও উত্ত্যক্তকারী যুবককে নামধারী আসামী করে আরো ৩-৪ জনকে অজ্ঞাত আসামী করা হয়েছে। যাদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।এদিকে ভূক্তভোগীর মা ও মামলা সূত্রে জানাগেছে, ভূক্তভোগী বরিশাল সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী ওই শিক্ষার্থীর সহপাঠী ও মামলার দুই নম্বর আসামী একই স্যারের কাছে প্রাইভেট পরতো।প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার সময় কোন একদিন মামলার এক নম্বর আসামী ফাতেমা খাতুন চম্পার বাসায় মামলার দুই নম্বর আসামীর (ভূক্তভোগীর সহপাঠীর)সাথে চার নম্বর আসামী আসাদ আল ইসলামকে ঘনিষ্ট অবস্থায় দেখতে পায় ভূক্তভোগী শিক্ষার্থী।

মামলার এক ও দুই নম্বর আসামী পরষ্পর সম্পর্কে মা মেয়ে হওয়ায়, তারা বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার জন্য উল্টো ভূক্তভোগী শিক্ষার্থীর সন্মনাহানি করার লক্ষ্যে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র আটতে থাকে। যার ধারবাহিকতায় ভূক্তভোগী শিক্ষার্থীর মোবাইল নম্বর বিভিন্ন ছেলেদের কাছে দিয়ে দেয় এবং দুই নম্বর আসামীর অপর বন্ধু তাওসীফ মাহমুদ স্বাধীনকে দিয়ে ভূক্তভোগী শিক্ষার্থীকে উত্যক্ত করাতে শুরু করে। গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর তিন নম্বর আসামী তাওসীফ জোড় করে অজ্ঞাত স্থানে ঘুরতে নিয়ে যেতে চাইলে তাতে ভূক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী রাজী হয়নি। এতে তাওসীফ ক্ষিপ্ত হয়ে বরিশাল নগরের মল্লিক রোড এলাকায় বসে মারধর করে এবং ভূক্তভোগীর শরীরের বিভিন্ন স্থানে হাত দেয়। পরে ভূক্তভোগী চিৎকার ‍দিলে তাওসীফ ও তার সহযোগীরা পালিয়ে যায়।

এরপর গত বছরের ৩০ নভেম্বর বেলা ১১ টার দিকে ভূক্তভোগী শিক্ষার্থী দশম শ্রেনির পরীক্ষা দেয়ার জন্য বরিশাল সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে যায়। সেসময় মামলার ১ নম্বর আসামী ফাতেমা খাতুন চম্পার সহযোগীতায় তার মেয়ে ও মামলার দুই নম্বর আসামী ভূক্তভোগী শিক্ষার্থীকে চর-থাপ্পর মারে। পরবর্তীতে মারার কারন জানতে চাইলে, দুই নম্বর আসামীর আপত্তিকর ছবি বিভিন্ন ম্যাসেঞ্জারে পাঠানো হয়েছে বলে জানালেও তার কোন প্রমান দিতে পারেনি তারা। এরপর মামলার ১ ও ২ নম্বর আসামী মা-মেয়ে হওয়ায় জোট বেধে স্কুলসহ বিভিন্ন জায়গাতে ভূক্তভোগী শিক্ষার্থীর নামে অপ্রপচার চালাতে থাকে। এতে ভূক্তভোগী শিক্ষার্থী মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে আত্মহত্যার প্রবণতার সৃষ্টি হয়। পরে বাদী ও তার স্বামী ভূক্তভোগী শিক্ষার্থীর চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ করলেও বর্তমানে আসামীরা তাদের সন্তানকে খুন, গুমসহ বড় ধরনের ক্ষতিসাধন করতে পারে বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে ভূক্তভোগীর মা ও মামলার বাদী মোছাঃ মৌসুমী বলেন, মূলত দুই ও চার নম্বর আসামীর সাথে ঘনিষ্ট সম্পর্কের বিষয়টি আমার মে দেখে ফেলায়, তাকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার মানষে যৌন হয়রানি, মারধর করে।তবে মামলার প্রধান আসামী ফাতেমা খাতুন চম্পা ও তার মেয়ে দাবি করেছেন, তারা ভূক্তভোগী শিক্ষার্থীর বাবাকে নিজের মেয়ের দিকে শুধুমাত্র খেয়াল দেয়ার জন্য বলেছিলেন। আর এতে ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশের কর্তার সন্তান ওই মেয়ে মামলার প্রধান আসামীকে ফোন দিয়ে বেয়াদপিমূলক আচরণ করেন এবং পরের দিন দুই নম্বর আসামীকে শারিরীক নির্যাতন করে। এর প্রতিবাদে তাকে (ভূক্তভোগী শিক্ষার্থীকে)একটা থাপ্পর দেয় মামলার দুই নম্বর আসামী।

এ বিষয়ে সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহবুবু হোসেন বলেন, ঘটনার ৫-৬ মাস পরে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ওই শিক্ষার্থীর বাবা আমার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এতে তার মেয়ের এক সহপাঠী ও সহপাঠীর মায়ের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ এনেছে। এর বাহিরে বিভিন্ন ভাবে হয়রানী করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন। অভিযোগের সত্যা পাওয়া গেলে অভিযুক্ত ছাত্রীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।


আরো নিউজ
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: JPHOSTBD