লকডাউন আতঙ্ক, জেলা থেকে জেলায় মানুষের ছোটাছুটি

ডেস্ক রিপোর্ট
দক্ষিণ বাংলা রবিবার, ৪ এপ্রিল, ২০২১
লকডাউন আতঙ্ক, জেলা থেকে জেলায় মানুষের ছোটাছুটি

এক সপ্তাহের লকডাউনের খবরে শনিবার দুপুর থেকে এক জেলা হতে আরেক জেলায় যেতে মানুষের ছোটাছুটি শুরু হয়। এ কারণে বাস, ট্রেন, লঞ্চ টার্মিনাল এবং ফেরিঘাটগুলোতে মানুষের ভিড় দেখা যায়। রোববার এ ভিড় আরও বেড়ে যায়। এদিন সদরঘাট, শিমুলিয়া ও পাটুরিয়া ঘাট ও টার্মিনালে ছিল উপচে পড়া ভিড়। যাত্রীদের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাই ছিল না। মাস্ক ছিল না অনেকের মুখে। কর্তৃপক্ষও স্বাস্থ্যবিধি তথা সরকারি নির্দেশ না মেনেই লঞ্চে যাত্রী পারাপার করে। অন্যদিকে ভাড়াও নিয়েছে দ্বিগুণ। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

শিবচর (মাদারীপুর) : রোববার সকাল থেকেই শিমুলিয়া-বাংলাবাজার রুটে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ বাড়তে থাকে। দুপুরের পর ভিড় আরও বেড়ে যায়। উভয় ঘাটেই যানবাহনের দীর্ঘ লাইন দেখা যায়। শিমুলিয়া-বাংলা বাজার নৌরুটে ছোট বড় ১৮টি ফেরি ৮৭টি লঞ্চ ও ২ শতাধিক স্পিডবোট চলাচল করে। যাত্রী পরিবহণে এসব যানে স্বাস্থ্যবিধি একেবারেই মানা হয়নি। যদিও ভাড়া নিয়েছে দ্বিগুণ। এ নিয়ে যাত্রীদের মাঝে তীব্র ক্ষোভ দেখা গেছে।

বাংলাবাজার ফেরি ঘাট ম্যানেজার সালাউদ্দিন মিয়া জানান, লকডাউন ঘোষণার পর ভোররাত থেকেই শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ বেড়ে যায়।

বরিশাল : লকডাউনের খবর শুনে রাজধানী ঢাকায় অবস্থান করা বরিশাল অঞ্চলের অনেকেই বাড়ির উদ্দেশে রওয়ানা দেন। এ কারণে শনিবার বিকালে সদরঘাটে ভিড় বেড়ে যায়। এই ভিড় রোববার প্রচণ্ড আকার ধারণ করে। লঞ্চের কেবিনের টিকিট সোনার হরিণ হয়ে যায়। যাত্রীরা লঞ্চের টিকিট পেতে এক কাউন্টার থেকে অন্য কাউন্টারে ছুটতে থাকেন। জুবায়ের রহিত নামে পলিটেকনিক কলেজের ছাত্র মোবাইল ফোনে জানান, জরুরি কাজে ঢাকায় তার মামার বাসায় গিয়েছিলেন। এখন বরিশালে ফিরবেন কিন্তু লঞ্চের টিকিট মিলছে না। একই অবস্থা ঢাকা-বরিশাল বাস রুটে। গাদাগাদি করে যাত্রী পরিবহণ করলেও ভাড়া নেওয়া হয় দ্বিগুণ।

এদিন বরিশাল আধুনিক নৌবন্দর টার্মিনালে যাত্রীর চাপ ছিল তীব্র। নগরীর নথুল­াবাদ বাস টার্মিনাল ও চৌমাথা এলাকায় বাড়ি ফেরা মানুষের প্রচণ্ড ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। এসব মানুষকে বাড়ি ফিরতে বাস সংকটে পড়তে হয়। এ কারণেই নগরীর চৌমাথা এলাকায় আশপাশের উপজেলায় যাওয়ার জন্য মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা যায়।

রাজবাড়ী ও গোয়ালন্দ : রোববার সকাল থেকেই মানুষ ঢাকা থেকে গোয়ালন্দ ফেরিঘাট হয়ে বাড়ি ফিরতে থাকে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যাত্রীর চাপ বেড়ে যায়। পাটুরিয়া থেকে ছেড়ে আসা প্রতিটি লঞ্চে ছিল উপচে পড়া ভিড়। যাত্রী পরিবহণে ছিল না স্বাস্থ্যবিধি। যদিও তাদের সবার কাছ থেকেই সরকার ঘোষিত ৬০ শতাংশের অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হয়েছে।

দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাটের সুপারভাইজার নুরুল আনোয়ার মিলন বলেন, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ১৮টি লঞ্চ চলাচল করছে। আমরা সরকার ঘোষিত নিয়ম মেনেই ভাড়া আদায় করছি। কিন্তু সাধারণ মানুষ কোনো স্বাস্থ্যবিধি মানতে চাচ্ছেন না।

শায়েস্তাগঞ্জ (হবিগঞ্জ) : লকডাউন ঘোষণায় ঢাকা ও অন্য জেলা থেকে সিলেটমুখী যাত্রীদের চাপ বেড়ে যায়। এই সুযোগে পরিবহণগুলো গাদাগাদি করে যাত্রী বহন করে। অন্যদিকে ভাড়াও আদায় করে দ্বিগুণ। এছাড়া সিলেট থেকে ঢাকামুখী মানুষের ভিড়ও ছিল। রোববার সকাল থেকে শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন ও বাস স্টেশন এলাকায় ঢাকামুখী যাত্রীদের ভিড় দেখা যায়।


আরো নিউজ
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: JPHOSTBD