আগুনে পুড়ে গেছে তাদের শেষ সম্বল। সম্পূর্ণরূপে ছাই হয়ে গেছে তাদের ঘর ও ঘরে থাকা সমস্তকিছু। চারটি পরিবারের সবাই এখন খোলা আকাশের নিচে জীবনযাপন করছে। পৃথক ঘটনা দুটি ঘটেছে ফরিদপুর জেলার আলফাডাঙ্গা ও বোয়ালমারী উপজেলায়।
জানা গেছে, আলফাডাঙ্গা উপজেলার বুড়াইচ ইউনিয়নের চর মাকড়াইল গ্রামে বুধবার (১৭ মার্চ) বিকেলে ভয়াবহ এক অগ্নিকাণ্ডে আপন দুই ভাইয়ের পাঁচ ঘর পুড়ে সম্পূর্ণরূপে ছাই হয়ে গেছে। অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তরা হলেন- ওই এলাকার আপন দুই ভাই হিরু শেখ ও নুর ইসলাম শেখ।
এলাকাবাসী জানান, গ্রামের হিরু শেখের বসতঘর থেকে প্রথমে আগুনের সূত্রপাত হয়। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই এ আগুন পার্শ্ববর্তী তার ভাই নুর ইসলাম শেখের বসতঘরে ছড়িয়ে পড়ে। পরে বাড়ির লোকজনের চিৎকারে গ্রামবাসী এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে।
খবর পেয়ে বোয়ালমারী উপজেলা ফায়ার সার্ভিস পৌঁছাতে পৌঁছাতে দুই ভাইয়ের পাঁচটি ঘরের মূল্যবান আসবাবপত্র, তৈজসপত্র, নগদ টাকাসহ সর্বস্ব পুড়ে ছাই হয়ে যায়। ভয়াবহ আগুনের কবল থেকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের পরনের কাপড় ছাড়া কোনো কিছুই রক্ষা পায়নি। আগুনের সঠিক কোন কারণ জানা যায়নি। তবে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে ধারণা করা হয়েছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ওই এলাকার ইউপি সদস্য মো. জাফর শিকদার জানান, তারা দুই ভাই কৃষি কাজ করে সংসার চালায়। অগ্নিকাণ্ডে তাদের সবকিছু পুড়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে। এদিকে, গতকাল মঙ্গলবার রাতে ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী উপজেলার দাদপুর ইউনিয়নের মাধবপুর গ্রামের জলিল শেখ ও আছির উদ্দিন খন্দকারের পাঁচটি ঘর পুড়ে ভস্মীভূত হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার এবং প্রত্যক্ষদর্শী দাদপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও সমাজ সেবক হারুন-অর-রশিদ হারুন জানান, দুই ভাইয়ের পাঁচটি ঘর আগুনে সম্পূর্ণ পুড়ে ছাই হয়ে যায়। তাদের পরনের কাপড় ছাড়া কিচ্ছুই নাই, খোলা আকাশের নিচে তাদের রাত কাটছে। ব্যক্তিগতভাবে তাদের সাহায্য সহযোগিতা করেছেন বলেও জানান তিনি।
সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ইউনিয়ন পরিষদের নিয়ম অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য সহযোগিতা করা হবে।
বোয়ালমারী ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন ম্যানেজার (ভারপ্রাপ্ত) মো. ওয়াহিদুজ্জামান খান বলেন, ‘আমরা খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পৌঁছাতে স্থানীয়রা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। আসলে আলফাডাঙ্গার স্থানটি নদীর চর এলাকায় হওয়ার কারণে আমাদের পৌঁছাতে একটু বিলম্ব হয়েছে। এছাড়া পৃথক দুটি অগ্নিকাণ্ডে চার পরিবারের প্রায় ১০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।’