কুষ্টিয়ায় একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু ১৭, শনাক্ত ৪৩২

নিউজ ডেস্ক
দক্ষিণ বাংলা মঙ্গলবার, ৬ জুলাই, ২০২১
কুষ্টিয়ায় একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু ১৭, শনাক্ত ৪৩২

কুষ্টিয়ায় করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। লকডাউনেও থেমে নেই মৃত্যুর মিছিল। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে আরও ১৭ জনের। এ সময় ১ হাজার ২২১ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৪৩২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। জেলায় এটিই এখন পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু ও শনাক্ত। সোমবার (৫ জুলাই) রাতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।

জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় করোনা শনাক্তের হার ৩৫ দশমিক ৩৮ শতাংশ। নতুন করে শনাক্ত হওয়া ৪৩২ জনের মধ্যে কুষ্টিয়া সদরের ১০৯ জন, দৌলতপুরের ৭৩ জন, কুমারখালীর ৭৮ জন, ভেড়ামারার ১০২ জন, মিরপুরের ৩৬ জন এবং খোকসার ৩৪ জন রয়েছেন। মারা যাওয়া ১৭ জনের মধ্যে ১৪ জনই সদর উপজেলার, দুজন কুমারখালীর ও একজন খোকসা উপজেলার বাসিন্দা।

এখন পর্যন্ত জেলায় ৬৬ হাজার ৭৮৯ জনের নমুনা পরীক্ষার জন্য নেওয়া হয়েছে। নমুনা পরীক্ষার প্রতিবেদন পাওয়া গেছে ৬৪ হাজার ২০২ জনের। বাকিরা নমুনা পরীক্ষার প্রতিবেদনের অপেক্ষায় রয়েছেন।

বর্তমানে কুষ্টিয়ায় সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ৩ হাজার ১০ জন। তাদের মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ২৬২ জন এবং হোম আইসোলেশনে আছেন ২ হাজার ৭৪৮ জন।

এদিকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে কুষ্টিয়ায় চলমান লকডাউন আগামী ৭ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত চলবে। কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম এ সংক্রান্ত একটি গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন।

এতে বলা হয়েছে, কুষ্টিয়ায় চলমান লকডাউন আগামী ৭ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত চলবে। এ সময় ওষুধ, নিত্য প্রয়োজনীয় মুদি দোকান, কাঁচাবাজার ছাড়া বাকি সবধরনের দোকান, শপিংমল বন্ধ থাকবে।

সরকার ঘোষিত কঠোর লকডাউন কার্যকরে সারাদেশের মতো কুষ্টিয়ায় মাঠে নেমেছে প্রশাসন। র‌্যাব-পুলিশ, বিজিবি ও সেনাবাহিনীর তৎপরতা দেখা গেছে। শহরের বিভিন্ন এলাকায় জনসমাগম ঠেকাতে মাইকিং করে ঘরে থাকতে উদ্বুদ্ধ করছে প্রশাসন। এই লকডাউন বাস্তবায়নে ছয়টি উপজেলায় সেনাবাহিনী ও বিজিবি মোতায়েন আছে।

কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মো. খাইরুল আলম বলেন, কঠোরভাবে লকডাউন বাস্তবায়ন করতে পুলিশ মাঠে তৎপর রয়েছে। জেলার বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশের চেকপোস্টে তল্লাশি করা হচ্ছে। সবার কাছ থেকে লকডাউন কার্যকর করতে সহযোগিতা পাচ্ছি।

কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ডা. এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, করোনার প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যে বর্তমানে সর্বোচ্চ শনাক্ত ও মৃত্যুর রেকর্ড হচ্ছে। সব উপজেলায় হু হু করে বাড়ছে মৃত্যু ও শনাক্তের সংখ্যা। লকডাউনের মধ্যেও কেউ কেউ স্বাস্থ্যবিধি না মেনে রাস্তাঘাটে চলাচল করছে। এতে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে। ফলে লকডাউনের সুফল মিলবে না। জনসাধারণের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে চলার প্রবণতার কারণে সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা থেকে যায়। করোনার সংক্রমণ যে হারে বাড়ছে, তাতে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া বেশ কঠিন হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। এ বিষয়ে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। মানুষকে সচেতন করতে মাঠে নেমে কাজ করা হচ্ছে। আমি নিজেও বিভিন্ন স্থানে ঘুরে মানুষের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টির চেষ্টা করেছি। এ ছাড়া বিধিনিষেধ প্রতিপালনে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে। তারা লকডাউন কার্যকর করতে পদক্ষেপ নিয়েছেন। বিধিনিষেধ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন।


আরো নিউজ
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: JPHOSTBD