বাংলাদেশের প্রথম ৬ লেনের মধুমতি সেতু উদ্বোধন

রাতুল হাসান, গোপালগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ
দক্ষিণ বাংলা সোমবার, ১০ অক্টোবর, ২০২২

উদ্ধোধন হলো বাংলাদেশের প্রথম ৬ লেনের দৃষ্টিনন্দন সেতু। সেতুটি গোপালগঞ্জ জেলার মধুমতি নদীর উপর স্থাপিত হওয়ায় নামকরণ করা হয়েছে মধুমতি সেতু। মধুমতি সেতু উদ্বোধনের মাধ্যমে শেষ হল কালনা ফেরিঘাটের দীর্ঘদিনের জন দুর্ভোগ।
আজ ১০ অক্টোবর দুপুর ১২ টায় গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি সেতুটি উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্ধোধনি অনুষ্ঠানে সেতু এরিয়ায় ও গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে উপস্থিত ছিলেন, গোপালগঞ্জ ১ আসনের সাংসদ মুহাম্মদ ফারুক খান এমপি, জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা, পুলিশ সুপার আয়শা সিদ্দিকা, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলী খান, পৌর মেয়র শেখ রকিব হোসেন, গোপালগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের এসি তাপসী দাস, নির্বাহী প্রকৌশলী জাহীদ হোসেন, উপ-সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল হালিম খাঁন, কাশিয়ানী উপজেলার নির্বাহী অফিসার মোঃ মেহেদী হাসান, মোকসেদপুর সার্কেল এএসপি চৌধুরী শাহীন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ মোক্তার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক কাজী জাহাঙ্গীর আলমসহ বিভিন্ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধি, গোপালগঞ্জ সদর, কোটালীপাড়া, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা কর্মী, সাংবাদিক ও বিপুলসংখ্যক উৎসুক জনতা।
সেতুটি উদ্বোধনের পর সকল ধরনের যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। সেতুর টোল হার নির্ধারণ করা হয়েছে বড় ট্রেইলার ৫৬৫ টাকা, তিন বা ততোধিক এক্সসেল বিশিষ্ট ট্রাক ৪৫০ টাকা, দুই এক্সসেল বিশিষ্ট মিডিয়াম ট্রাক ২২৫ টাকা, ছোট ট্রাক ১৭০ টাকা, কৃষি কাজে ব্যবহৃত পাওয়ার ট্রিলার ও ট্রাক্টর ১৩৫ টাকা, বড় বাসের ক্ষেত্রে ২০৫ টাকা, মিনিবাস বা কোস্টার ১১৫ টাকা, মাইক্রোবাস, পিকআপ, কনভারশনকৃত জিপ ও রে-কার ৯০ টাকা, প্রাইভেটকার ৫৫ টাকা, অটো টেম্পু, সিএনজি অটোরিকশা, অটোভ্যান ও ব্যাটারিচালিত তিন চাকার যান ২৫ টাকা, মোটরসাইকেল ১০ টাকা এবং রিক্সা, ভ্যান ও বাইসাইকেল ৫ টাকা।
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার রাতুল ইউনিয়নের শংকরপাশা গ্ৰামের পাশ দিয়ে  প্রবাহিত হয়েছে মধুমতি নদী। এই নদীর ওপরই নির্মিত হয়েছে দেশের প্রথম দৃষ্টিনন্দন ৬ লেনের মধুমতি সেতু। নদীর অপরপ্রান্তের অদুরে নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার কালনা সীমানা।
পুরো মধুমতি সেতুটি গোপালগঞ্জ জেলার  সীমানার মধ্যে অবস্থিত হলেও পূর্ব থেকে এটি কালনা ফেরিঘাট নামেই ব্যপক পরিচিতি ছিল।
সেতু কর্তৃপক্ষ জানায়, মধুমতি সেতু দেশের প্রথম ছয় লেনের দৃষ্টিনন্দন সেতু। আজ সেতুটি উদ্ধোধনের মাধ্যমে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১০ জেলার মানুষের  পদ্মা সেতুর পর আরেকটি
বৃহৎ স্বপ্নপূরণ হয়েছে। কালনাঘাট থেকে ঢাকার দুরত্ব মাত্র ১০৮ কিলোমিটার। মধুমতি সেতু উদ্বোধনের ফলে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে নড়াইল, যশোর, খুলনা, বেনাপোলসহ অন্যান্য জেলার যোগাযোগের দূরত্ব, সময় ও ব্যয় বহুগুণ কমেছে।
কতৃপক্ষ আরো জানিয়েছে, সেতুটির উভয় পাশে ছয় লেনের সংযোগ সড়ক প্রায় সাড়ে ৪ কিলোমিটার। সংযোগ সড়কের বাঁকগুলোয় যানবাহন চলাচলের নিরাপত্তার বিষয় মাথায় রেখে দুর্ঘটনা রোধে আট লেনের সমান প্রস্থ রাখা হয়েছে। দ্রুতগতির যানবাহনের জন্য চার লেন ও ধীর গতির যানবাহনের জন্য দুই লেন মোট ছয় লেন বিশিষ্ট সেতুর নির্মাণে মোট ব্যয় হয়েছে ৯৫৯ কোটি টাকা ৮৫ লাখ টাকা।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মধুমতি সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ২০১৮ সালের ৫ সেপ্টেম্বর নির্মাণ কাজ শুরু করে জাপান ইন্টারন্যাশনাল করপোরেশন এজেন্সির (জাইকা) এর সহযোগিতা ও দেশীয় অর্থে সেতুটি নির্মাণ করছে জাপানের টেককেন করপোরেশন ওয়াইবিসি জেভি কোম্পানি ও বাংলাদেশী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আব্দুল মোনেম লিমিটেড।


আরো নিউজ
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: JPHOSTBD