রাজশাহীর অগ্রণী ব্যাংকের সেই কর্মকর্তা কারাগারে

ডেস্ক রিপোর্ট
দক্ষিণ বাংলা মঙ্গলবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
রাজশাহীর অগ্রণী ব্যাংকের সেই কর্মকর্তা কারাগারে

রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে দুর্নীতির মামলায় অগ্রণী ব্যাংকের বরখাস্ত হওয়া সেই প্রিন্সিপাল অফিসার ও গোদাগাড়ী শাখা ব্যবস্থাপক আহসান হাবিব নয়নকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। বিকেলের দিকে তাকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে নেয়া হয়।

সোমবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরের দিকে রাজশাহীর জেলা ও দায়রা জজ মীর শফিকুল আলম তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এই তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন মামলার বাদী ও দুদক সহকারী পরিচালক আল-আমিন।

তিনি জানান, তার শাখা ব্যবস্থাপক হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ২০১৯ সালের ১৬ জুন ব্যাংকের গ্রাহক সাবের আলীর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের একাউন্ট থেকে ছয় লাখ টাকা উত্তোলন করেন তিনি।

নয়ন রাজশাহীর বহরমপুর এলাকার ব্যাংক কলোনি নিবাসী হারেজ উদ্দিনের ছেলে। গ্রাহকের ব্যাংক হিসাব থেকে ছয় লাখ টাকা আত্মসাতের ঘটনায় ২৭ জানুয়ারি তার নামে দুর্নীতি দমন কমিশনের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আল-আমিন মামলা করেন।

ওই মামলায় সোমবার দুপুরে জামিন চেয়ে তিনি আদালতে হাজির হন। কিন্তু আদালত তার সেই আবেদন নামঞ্জুর করেছেন।

মামলার বিবরণে বলা হয়েছে, আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার অসৎ উদ্দেশ্যে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে ক্ষমতার অপব্যবহারপূর্বক অপরাধমূলক কাজ করেছেন ওই ব্যাংক কর্মকর্তা। যা দন্ডবিধির ৪০৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১ ধারাসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আর এ কারণেই তার বিরুদ্ধে বর্ণিত ধারায় একটি নিয়মিত মামলা রুজুর অনুরোধ করা হয়েছে।

ঘটনার বিবরণে মামলার বাদী উল্লেখ করেন, রাজশাহীর ই/আর নং ৫১/২০১৯ মামলার অভিযোগ অনুসন্ধান সংক্রান্তে সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, গ্রাহক সাবের আলী তার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ‘মেসার্স সাবের আলী ট্রেডার্স’ এর জন্য একটি ১০ লাখ টাকার এসএমই সিসি (হাইফো) ঋণ সুবিধা ভোগ করছেন, যার হিসাব নং ০২০০০০৯৫৭৭৫৯৪। হিসাবটি ২০১৯ মে নবায়ন করা হয়। ওই বছরের ৩১ ডিসেম্বর যা মেয়াদোত্তীর্ণ হয়।

এদিকে অনুসন্ধানে দুদক জানতে পারে- গ্রাহক সাবের আলী ২০ আগস্ট নিজে উপস্থিত হয়ে ১০ হাজার টাকার একটি চেক দিয়ে টাকা উত্তোলনের সময় তার ব্যাংক হিসাবের স্থিতি জানতে চান। সেই প্রেক্ষিতে ব্যাংক থেকে তার ঋণ হিসাবের স্থিতি জানানো হয়। তখন তিনি ছয় লাখ টাকার গড়মিল পান।

পরে তিনি ব্যাংক হতে প্রাপ্ত ঋণ হিসাব বিবরণী যাচাই করে দেখেন, ২০১৯ সালের ১৬ জুন ৪৩০৮১৭২ নম্বর চেকের মাধ্যমে তার সিসি ঋণ হিসাব হতে ছয় লাখ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে।

গ্রাহক সাবের আলী দাবি করেছেন, তিনি নিজে ওই টাকা উত্তোলন কিংবা গ্রহণ করেননি। এ নিয়ে ২০১৯ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর শাখা ব্যবস্থাপক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন তিনি।

বিষয়টি তদন্তের জন্য অগ্রণী ব্যাংকের আঞ্চলিক কার্যালয়, রাজশাহী হতে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে। ২৬ সেপ্টেম্বর কমিটি সরেজমিনে তদন্ত করে আহসান হাবিব নয়নের ছয় লাখ টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়া যায়। ব্যাংকের কেন্দ্রীয় তদন্তেও অভিযুক্ত হন তিনি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের আলাদা তদন্তেও আহসান হাবিব নয়নের প্রতারণা ও জালিয়াতির সত্যতা উঠে আসে। এরপর ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর গ্রাহক সাবের আলী শাখা ব্যবস্থাপকের নামে মামলা করেন।


আরো নিউজ
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: JPHOSTBD