“ছাত্র নেতৃত্বের কাছ থেকে এলো স্বাধীনতার ইশতেহার” : ধনঞ্জয় দে

ধনঞ্জয় দে
দক্ষিণ বাংলা বুধবার, ৩ মার্চ, ২০২১
“ছাত্র নেতৃত্বের কাছ থেকে এলো স্বাধীনতার ইশতেহার” : ধনঞ্জয় দে

১৯৭১ সালের আজকের দিনে পল্টন ময়দানে ছাত্রলীগ আয়োজিত এক জনসভায় বঙ্গবন্ধুর উপস্থিতিতে স্বাধীন বাংলার ইশতেহার পাঠ করেন ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারন সম্পাদক শাহজাহান সিরাজ । সভা পরিচালনা করেন ছাত্রলীগের সভাপতি নূরে আলম সিদ্দিকী ।এই ইশতেহারটি ছিল সর্বপ্রথম প্রকাশ্যে উপস্থাপিত একটি ঘোষনাপত্র । এই ইশতেহারেই বঙ্গবন্ধুকে প্রথমবারের মত জাতির জনক হিসেবে উল্লেখ করা হয় । রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত আমার সোনার বাংলা গানটিকে জাতীয় সংগীত হিসেবে ঘোষনা করা হয় । একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের যেসমস্ত প্রতীকী পরিচিতি থাকে তা সব এখানে উল্লেখ করা হয় । এর মধ্যে থেকে বাংলার জনগন বুঝতে পারে যে স্বাধীনতা ছাড়া আর কোন বিকল্প নেই । বঙ্গবন্ধু তার ভাষনে বলেন , “সামরিক বাহিনী কে দ্রুত প্রত্যাহার করে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হাতে ক্ষমতা দিতে হবে”। ক্ষমতা হস্তান্তর না করা পর্যন্ত জনগন কে সব রকমের খাজনা ট্যাক্স প্রদান থেকে বিরত থাকতে আহ্বান জানান । তিনি আরো বলেন দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত অসহযোগ সংগ্রাম চলবে । এজন্য জনগন কে কোন হটকারী সিদ্ধান্ত বা কারোর উস্কানীগ্রহন বা আত্মকলহ থেকে বিরত থাকতে বলেন এবং বাঙ্গালী অবাঙ্গালী সবার জানমাল রক্ষার জন্য আহ্বান জানান ।এর পর তিনি নতুন কর্মসুচি দেন । ৭ মার্চ পর্যন্ত সকাল ৬ টা থেকে দুপুর দুইটা পর্যন্ত হরতালের ডাক দেন । এই দিনেই তিনি ঘোষনা দেন যে ৭ই মার্চ তারিখে রেসকোর্স ময়দানে এক বিশাল জনসভা হবে এবং ওইদিনই তিনি পরবর্তী নির্দেশনা দেবেন ।এইদিন সর্বত্র শোক দিবস হিসেবে পালন করা হয় ।
এদিকে ঢাকা সহ রংপুর ও সিলেটে বিভিন্ন মেয়াদে কারফিউ জারী করা হয় । ঢাকার সৈন্যদের গুলিতে দুইজন,টঙ্গীতে একজন হতাহত হয় ।রাজশাহী ও চট্টগ্রামে আন্দোলনকারীদের উপর গুলি চালানো হয় ।

এদিন ইয়াহিয়া খান একটি নতুন প্রস্তাব ঘোষনা করেন । তিনি ১০ মার্চ ঢাকায় সংসদীয় নেতৃবৃন্দের সম্মেলন অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত দেন । বলা হয় এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবার দুই সপ্তাহের মধ্যেই জাতীয় পরিষদের অধিবেশন ডাকা হবে । বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এই প্রস্তাব তাৎক্ষনিক ভাবে প্রত্যাখান করেন । তিনি বলেন “ঢাকা ও চট্টগ্রামে নির্বিচারে মানুষকে হত্যা করা হয়েছে এবং অনেকে মৃত্যুর সাথে লড়ছে । এইসময় এইধরনের প্রস্তাব অযৌক্তিক । গনতান্ত্রিক নিয়মে শাসনতন্ত্র যদি না চান তো আপনাদের শাসনতন্ত্র আপনারা রচনা করুন আমরা আমাদের টা রচনা করবো”।
এদিন পাকিস্তানের লাহোরে কিছু ছোট রাজনৈতিক দলের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় । সেখানে বক্তারা সামরিক শাসন প্রত্যাহার ও নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর ও শেখ মুজিবের দাবীর প্রতি সমর্থন জানান । তারা ভুট্টোর উপর নেতৃত্ব ও আস্থা রাখতে অস্বীকৃতি জানান ।


আরো নিউজ
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: JPHOSTBD