২২ মার্চ ১৯৭১: এদিন বৈঠকে বসেন ইয়াহিয়া, বঙ্গবন্ধু ও ভুট্টো

ধনঞ্জয় দে
দক্ষিণ বাংলা সোমবার, ২২ মার্চ, ২০২১
২২ মার্চ ১৯৭১: এদিন বৈঠকে বসেন ইয়াহিয়া, বঙ্গবন্ধু ও ভুট্টো

১৯৭১ সালের এইদিন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সাথে বঙ্গবন্ধু ও ভুট্টোর ত্রিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এটি ছিল মুজিব ইয়াহিয়ার ষষ্ঠদিনের মত বৈঠক। এই বৈঠক সোয়াঘন্টা ব্যাপী স্থায়ী ছিল ।কিন্তু এদিন মোটামুটি বোঝা যাচ্ছিল যে আলোচনা ব্যর্থতার দিকে যাচ্ছে। এর পর ইয়াহিয়া খান ২৫ মার্চ আহুত জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত করে দেন।

কারন হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন পাকিস্তানের দুই অংশের নেতাদের মধ্যে আলোচনা করে বৃহত্তর সমঝোতা ও ঐক্যমতের পরিবেশ সৃষ্টির জন্য আরো সময়ের প্রয়োজন তাই অধিবেশন স্থগিত করতে হল।

বৈঠক শেষে বেড়িয়ে এসে বঙ্গবন্ধু সাংবাদিকদের বলেন “আমরা প্রেসিডেন্টকে আমাদের চারটি শর্ত ও দাবীদাওয়ার কথা বলেছি। যা পূরন না হওয়া পর্যন্ত আমরা পরিষদে যোগদান করতে পারি না। এসময় প্রেসিডেন্ট হাউজের বাইরে অনেক লোকের সমাগম ঘটে। তারা বঙ্গবন্ধুর পক্ষে ও ভুট্টো এবং ইয়াহিয়ার বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকে।

এদিকে সন্ধ্যায় ভুট্টোর নেতৃত্বে পিপলস পার্টির নেতারা আবার প্রেসিডেন্ট হাউজে গিয়ে গোপন বৈঠক করে। পরে ভুট্টো সাংবাদিকদের বলেন “রাজনৈতিক সংকট দূর করার জন্য প্রেসিডেন্ট ও শেখ মুজিবের মধ্যে সন্তোষজনক বৈঠক হয়েছে। আওয়ামী লীগ ও পিপলস পার্টির মধ্যে শীঘ্রই পারস্পরিক ঐক্যমত হবে যা পাকিস্তানের দুই অংশেই গ্রহনযোগ্য হবে।
এদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা হচ্ছে , বায়তুল মোকাররমের সামনের চত্বরে অবসর প্রাপ্ত বাঙ্গালী সামরিক কর্মকর্তা ও সৈনিকরা এক সমাবেশ এর আয়োজন করে।

এটি পরিচালনা করেন কর্নেল (অব) এমএজি ওসমানী। সাথে ছিলেন জেনারেল(অব)ইশফাকুল মজিদ ।সমাবেশে বক্তারা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের প্রতি আনুগত্য স্বীকার করেন। তারা বলেন স্বাধীনতা অর্জনের জন্য যে জাতীয় ঐক্য দেশে গড়ে উঠেছে এই আন্দোলনে প্রাক্তন সৈনিকেরা বসে থাকতে পারে না। আজ থেকে আমরাও জনতার আন্দোলনে শামিল হলাম।
এদিন ছিল অসহযোগ আন্দোলনের ২১তম দিন।

ঢাকা সারা দেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক ও ছাত্র যুব সংগঠন মিছিল সমাবেশ করে। জয় বাংলা শ্লোগানে মুখরিত হাজার হাজার মানুষ বঙ্গবন্ধুর বাসভবনের সামনে এসে জড়ো হয়। বঙ্গবন্ধু তাদের উদ্দেশ্যে বলেন “কোন ঐক্যবদ্ধ জাতিকে বুলেট বেয়নেট দিয়ে দমন করা যাবে না। তেইশ বছর আমরা মার খেয়েছি আর মার খেতে রাজি নই। চুড়ান্ত বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে ।জয় আমাদেরই হবে ইনশাল্লাহ”।

এদিকে পাকিস্তান দিবসের বানীতে ইয়াহিয়া খান বলেন “দেশ আজ এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। যাতে আমাদের অস্তিত্ব হুমকির মুখে রয়েছে”। এদিকে বাংলার জনগন পাকিস্তান দিবসকে প্রত্যাখান করে সর্বাত্বকভাবে প্রতিরোধ দিবস পালন করার জন্য প্রস্তুত হয়েছিল।


আরো নিউজ
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: JPHOSTBD