১৪ মার্চ ১৯৭১ “বঙ্গবন্ধু দিলেন নতুন কর্মসূচী”

ডেস্ক রিপোর্ট
দক্ষিণ বাংলা রবিবার, ১৪ মার্চ, ২০২১
বঙ্গবন্ধু দিলেন নতুন কর্মসূচী

এইদিন বঙ্গবন্ধু ঘোষিত অহিংস অসহযোগ আন্দোলনের দ্বিতীয় পর্যায়ের কর্মসূচীর শেষদিন ছিল। বঙ্গবন্ধুর চারদফা শর্ত মেনে নেওয়ার দাবীতে এদিনও বিভিন্ন রাজনৈতিক,সামাজিক, পেশাজীবী সংগঠন সভাসমাবেশ ও মিছিল করে।

এদিন ন্যাপ নেতা ওয়ালী খান বঙ্গবন্ধুর সাথে তার বাসভবনে দেখা করেন ।বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন সৈয়দ নজরুল ইসলাম,এএইচএম কামরুজ্জামান ও ন্যাপ নেতা গাউস বক্স বেজেঞ্জো। বৈঠক শেষে ওয়ালী খান সাংবাদিকদের বলেন যে “আমি পাকিস্তানের ভাবী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে এসেছি এবং ২৫ মার্চের জাতীয় পরিষদের অধিবেশনে বসার জন্য আমরা আগ্রহী। বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চ তারিখে যে চার দফার ঘোষনা দিয়েছেন আমরা তা সমর্থন করি। আমরা চাই প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান কালবিলম্ব না করে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল আওয়ামী লীগ ও শেখ মুজিবের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করুক”। এদিন বঙ্গবন্ধু দেশি বিদেশি সাংবাদিকদের সাথে মিলিত হন।

তিনি বলেন, “প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ঢাকায় এসে তার সাথে আলোচনা করতে চাইলে তিনি যোগ দিতে প্রস্তুত। তবে আলোচনা তাদের দুজনের মধ্যেই হবে। এর মধ্যে কোনো তৃতীয় পক্ষ আলোচনায় অংশ নিতে পারবে না”।তিনি আরো বলেন “আমরা কোনদিন অত্যাচার করার পক্ষপাতি নই কিন্তু আমাদের যদি কেউ অত্যাচার আমরা তাকে ছেড়ে দেব না”।

এদিন বেশ কিছু মিছিল বঙ্গবন্ধুর বাসভবনের সামনে যান। এদিন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক তাজউদ্দিন আহমদ দেশি বিদেশি সাংবাদিকদের সামনে আলোচনায় মিলিত হন। কিভাবে দেশের প্রশাসন চলবে এজন্য বঙ্গবন্ধুর নির্দেশমূলক ৩৫ দফা নির্দেশ জারি করা হয়। এদিন শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন তার হেলালে ইমতিয়াজ খেতাব বর্জন করে। তিনি বলেন” জনগন যেভাবে গনতান্ত্রিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে তার প্রতিবাদ জানিয়ে আমি খেতাব বর্জন করেছি”।

এদিন বিকেলে জহুরুল হক হলে ছাত্রলীগের ঢাকা ও আঞ্চলিক শাখাসমূহের নেতাদের নিয়ে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। তাতে ছাত্রনেতা শাহজাহান সিরাজ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে জেলা ও থানা পর্যায়ের সংগ্রাম কমিটিকে নির্দেশ দেওয়া হয় যেন তারা নিজেদের এলাকায় সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে এবং ট্রেনিং নেওয়া শুরু করে। সন্ধ্যায় লালবাগ এলাকায় ছাত্রলীগ জনসভা করে সভাপতি নূরে আলম সিদ্দিকী ডাকসুর ভিপি আ স ম আবদুর রব সম্পাদক আবদুল কুদ্দুস মাখন ও শেখ শহীদুল ইসলাম বক্তৃতা করেন। বরিশালে আয়োজিত এক জনসভায় বাংলা জাতীয় লীগ প্রধান আতাউর রহমান খান বঙ্গবন্ধুর প্রতি অস্থায়ী সরকার গঠনের আহ্বান জানান।

এদিকে করাচীর নিশাত পার্কে পিপলস পার্টির উদ্যোগে আয়োজিত এক জনসভায় জুলফিকার ভূট্টো পাকিস্তানের দুই অংশের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করার প্রস্তাব দেন এবং এজন্য বঙ্গবন্ধুর প্রতি আলোচনা করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন ছয়দফার মাধ্যমে আওয়া্মী লীগ প্রকৃতপক্ষে বাংলার স্বাধীনতা দাবী করছে যা পাকিস্তানের জনগন চায় না।
এদিন বাংলাদেশের জন্য খাদ্যসামগ্রীবাহী আরেকটি জাহাজ গতিপথ পরিবর্তন করে চট্টগ্রাম বন্দরের পরিবর্তে করাচী গমন করে এর বিপরীতে অস্ত্র ভর্তি জাহাজ এন্ডুরাস এসে চট্টগ্রামে নোঙ্গর করে কিন্তু বন্দর শ্রমিকদের অসহযোগিতার ফলে পাকিস্তানী বাহিনী এন্ডুরাস ও সোয়াতের অস্ত্র খালাস করতে পারেনি ।


আরো নিউজ
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: JPHOSTBD